ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে ক্ষেতের ফসল ডুবে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, উলিপুর, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ১৭ মে ২০২৫

তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে ক্ষেতের ফসল ডুবে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক

ছ‌বি: জনকণ্ঠ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে ব্যাপক পরিমাণে বাদাম চাষ করেছেন এখানকার কৃষকরা। ফলনও হয়েছে বাম্পার। তবে কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে বাদাম ক্ষেত। তাই বড় লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৬৫ হেক্টর জমিতে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। অনেক চরে জেগে ওঠা বালুমাটিতে বাদাম চাষ উপযোগী। এ অঞ্চলের মানুষজন জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ফসলের প্রকারভেদ অনুযায়ী বালুর বুক চিরে বাদাম চাষ করে আসছেন।

বাদামচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বালুমাটিতে মূলত বাদাম চাষ উপযোগী। এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষে সব মিলে ব্যয় হয় ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমিতে বাদাম উৎপাদন হয় ১০ থেকে ১২ মণ। বাদাম জমিতে বপন করার পর থেকে পরিপক্ব হতে প্রায় চার মাস সময় লাগে।

এ অবস্থায় তিস্তা নদী অববাহিকার থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে বাদাম চাষ করা প্রায় শতাধিক কৃষককে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

সরেজমিনে শনিবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চল কিশোরপুরে গিয়ে দেখা যায়, বাদাম ক্ষেতগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে বাদামের গাছগুলো পচে মরে যাচ্ছে।

এ সময় বাদামচাষি আবু মুসার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাদামের ফসলি জমি ডুবে যায়। দশদিন পর বাদাম পরিপক্ব হতো। চাষাবাদ করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, এখন সে টাকাও আর উঠবে না।

একই চরে বাদাম চাষ করা কৃষক আতিকুর রহমান জানান, প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করে ১১৫ শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল, কিন্তু পানিতে ডুবে যাওয়ায় সব শেষ হয়ে গেল।

একই পরিস্থিতি উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের তিস্তার চরে চাষাবাদ করা বাদাম ক্ষেতগুলোতেও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, বাদামচাষিদের পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমি থেকে বাদাম সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হবে। সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা এলে ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকদের দেওয়া হবে।

এম.কে.

×