লোকবলের অভাবে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা যাচ্ছে না ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল
হস্তান্তরের সাড়ে তিনবছর পর চালু করা হয় মাদারীপুর জেলা সদরের আড়াইশো’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আংশিক কার্যক্রম। কিন্তু ২৬৭টি পদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ ১০২টি পদ খালি থাকায় কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা, বরিশাল ও ফরিদপুর মেডিক্যালে কলেজে প্রেরণ করায় খরচের সঙ্গে বেড়েছে ভোগান্তি। এতে ক্ষব্ধ রোগী, স্বজন ও এলাকাবাসী। তবে সিভিল সার্জনের দাবি, আড়াইশ’ শয্যার নয়, এখনো ৩২টি পদ খালি আছে একশ’ শয্যার হাসপাতালে। তাই আড়াইশ’ শয্যার হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা যাচ্ছে না।
জানা যায়, উচ্চ আদালতের প্রাপ্ত চিঠির পর তড়িঘড়ি করে উদ্বোধন করা হয় মাদারীপুর আড়াইশ’ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আংশিক কার্যক্রম। গত ২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খান এর উদ্বোধন করলেও এখনো চালু হয়নি এর পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম। একশ’ শয্যা থেকে আড়াইশ’ শয্যার সাততলা ভবনটি শকুনী মৌজায় নির্মানের পর ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তিনকোটি টাকা মূল্যের সিটি স্ক্যান মেশিন, ডিজিটাল এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ১০টি কার্ডিয়াক মনিটরসহ কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুরের রাজীব মাতুব্বর তার মা হালানী বেগমকে ভর্তি করেন জেলার হাসপাতালে। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘অসুস্থ আম্মুকে হাসপাতালে রাতে নিয়ে আসছি। সকাল হয়ে দুপুর, এখনো ডাক্তার পাই নাই, জরুরী বিভাগে কোনরকম একটু চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করে দিয়েছে, নার্স আসে-যায়, কিন্তু কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।
নিরাপদ চিকিৎসা চাই মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ বলেন, দ্রুত এই হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ চালু করা হলে, উন্নত সেবা পাবেন জেলাবাসী। মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহম্মদ খান বলেন, ‘বর্তমানে একশ’ শয্যারই জনবল ঘাটতি রয়েছে। আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালের জনবল নিয়োগের আবেদন চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ চালু হবে নতুন এই হাসপাতাল।
যশোর হাসপাতালে ঘুচবে অক্সিজেনের হাহাকার
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, যশোর আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে নির্মাণ হচ্ছে অক্সিজেন প্ল্যান্ট। এই প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত অক্সিজেন শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্টে ভোগা রোগীদের দেওয়া হবে। বাতাস থেকে মেশিনের মাধ্যমে অক্সিজেন ক্যাপসার করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সেটা লিকুইটি করে হাসপাতালে রোগীদের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে। ফলে আগের মতো হাসাপাতালের রোগীদের জন্য বিদেশ থেকে অক্সিজেন কিনে আনতে হবে না।
অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনে হাসপাতাল চত্বরে স্থান নির্ধারণে শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. মাকসুদা খানমসহ পাঁচ সদস্যের একটি টিম যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। এ টিমে ছিলেন প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব শেখ মুজিবুর রহমান, প্রজেক্ট অফিসার অজয় নাথ, জাপাইগো বাংলাদেশ’র প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার (বায়ো মেডিক্যাল) মুমতাহিন কামাল ও ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশীদ ও আরএমও আব্দুস সামাদসহ কর্মকর্তারা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশীদ বলেন, ইউএসএইড ও গ্লোবাল ফ্যান্ডের সহযোগিতায় নির্মাণ করবে ইউএনওপিএস ও টেকনিক্যাল এসিসটেন্স হিসেবে থাকবে জাপাইগো বাংলাদেশ। তাদের উদ্যোগেই হাসপাতাল চত্বরে তৈরি হচ্ছে একেবারে নিজস্ব অক্সিজেন তৈরির কারখানা।