ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সম্প্রীতির মিলনমেলা

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ও বেনাপোল যশোর

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সম্প্রীতির মিলনমেলা

দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্য আঙিনায় বসেছিল দুই বাংলার বাংলাভাষা প্রেমীদের মিলন মেলা

দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্য আঙিনায় বসেছিল দুই বাংলার বাংলাভাষা প্রেমীদের মিলন মেলা। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় অমর একুশে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের এই আয়োজন করেছিল স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সাপ্তাহিক আলোকিত সীমান্ত এবং ভারতের বালুরঘাট উজ্জীবন সোসাইটি। এদিকে বেনাপোল সীমান্তে প্রতি বছরের মতো এবারও দুই বাংলার মানুষ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে।
দিনাজপুরে সকাল সাড়ে ১০টায় বালুরঘাট উজ্জীবন সোসাইটির সম্পাদক সুরজ দাশের নেতৃত্বে বালুরঘাট, মালদা ও কলকাতা থেকে আগত ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভারত থেকে হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা চেকপোস্ট সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। কিছুক্ষণ পরে দুই দেশের শিল্পীরা বিভিন্ন কবিতা, নৃত্য ও গান পরিবেশন করেন।

ভারতের পক্ষে নৃত্য পরিবেশন করেন বালুরঘাট রেইনবো সোসাইটির কর্ণধার শুভঙ্কর রায় ও সদস্য অনন্যা পাহান। অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ, পৌরসভা, স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ। বালুরঘাট উজ্জীবন সোসাইটির সম্পাদক সুরজ দাশ বলেন, অমর একুশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে হিলি শূন্য রেখায় দু‘দেশ মিলে আয়োজন হলো। এখনো অনেক মানুষ মুখোশ পরে আছে। আমাদের আরও সোচ্চার হতে হবে। কাঁটাতারের বেড়া আমাদের শরীরের বিভেদ সৃষ্টি করলেও, ভাষার বিভেদ করতে পারেনি।

এদিকে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দুই বাংলার মানুষ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। এদিন সকাল সাড়ে ১১টায় সীমান্তের শূন্য রেখায় শত শত বাংলা ভাষা প্রেমীদের উপস্থিতিতে কাঠ বাঁশের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান দুই দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি।

অন্যদিকে ভারতের পক্ষে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিধায়ক শ্রী বিশ্বজিত দাসের  নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় বেনাপোল ও পেট্রাপোল চেকপোস্টে হাজার হাজার বাংলা ভাষা প্রেমীদের উপস্থিতি মিলন মেলায় রূপ নেয়।
ভারতের কলকাতা থেকে ভাষার টানে সীমান্তে আসা অরুন ম-ল জানান, ২০০২ সাল থেকে ২১ উৎসব আয়োজনে তিনি সীমান্তে আসছেন। তবে ভাষাকে রক্ষা করা আজ জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুন প্রজন্ম শুদ্ধ বাংলাভাষা উচ্চারণ ভুলে যাচ্ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিধায়ক শ্রী বিশ্বজিত দাস জানান, ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে সে ইতিহাস একমাত্র বাঙালির রয়েছে। এদিনে দুই বাংলা তারকাঁটার ভেদাভেদ ভুলে এক হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য জানান, বাংলা ভাষার জন্য ছালাম, রফিক, শফিক বরকতেরা জীবন দিয়ে মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছেন। সে ইতিহাস পৃথিবীতে অমর হয়ে থাকবে।

×