ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তেলিয়াপাড়া চা বাগান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে দুই মন্ত্রীর শ্রদ্ধা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাধবপুর, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

তেলিয়াপাড়া চা বাগান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে দুই মন্ত্রীর শ্রদ্ধা

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতি বিজড়িত স্থান তেলিয়াপাড়া চা বাগান স্মৃতি সৌধে বিজয়ের মাসে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি। 

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধের পাশে দুমন্ত্রী বিভিন্ন ফলদ বৃক্ষের চারা রোপন করেন। পরে লাল শাপলা লেকে বিভিন্ন পোনা মাছ অবমুক্ত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল টি কোম্পনীর চেয়ারম্যান শেখ কবির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল হাসান, সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ বিল্লাল, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ, হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, সিলেট পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ন্যাশনাল টি কোম্পনীর ডিজিএম এমদাদুর রহমান মিঠু অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মন্ধসঢ়;জুর আহসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আতিকুর রহমান, সহ সভাপতি রহম আলী,যুবলীগ সভাপতি ফারুক পাঠান প্রমুখ। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত লোকজন দুই মন্ত্রীরকাছে দাবি করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতিজিড়িত স্থান তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধকে সংরক্ষন করতে।

১৯৭১ সালে ৪ঠা এপ্রিল ভারত সীমান্ত ঘেষা তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপকের বাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের রণকৌশল, সেক্টর বন্টন,বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহায়তা সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সভায় ইষ্ট
বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গনি ওসমানীসহ সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মৌলানা আছাদ আলী, দেওয়ান আশ্রব আলী সহ আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই দিনের সভায় ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় বিগ্রেডিয়ার পান্ডে উপস্থিত ছিলেন। 

ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য তেলিয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিকরা ব্রিটিশ রাস্তার জঙ্গল কেটে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধকালীন স্থল পথে যোগাযোগ স্থাপন করেন। যুদ্ধের কৌশল হিসেবে তেলিয়াপাড়ার ওই স্থানটি মুক্তিযুদ্ধের খুবই সুবিধাজনক স্থান ছিল। ৪ ই এপ্রিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত ছিল ১০ এপ্রিল পুনরায় তেলিয়াপাড়া ব্যবস্থাপকের বাংলাতে আবারো একটি গুরুত্বপূর্ন বৈঠক হবে।

কিন্তু স্থানীয় রাজাকারের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনী ৪ এপ্রিলের বৈঠক সম্পর্কে সবকিছু জেনে যায়। একারনে পাকহানাদার বাহিনী তেলিয়াপাড়া চা বাগানে নজরদারি ও সৈন্য সংখ্যাবাড়িয়ে দেয়। ফলে ১০ এপ্রিলৈ বৈঠক বানচাল হয়ে যায়। এ স্থানটিকে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে ১৯৭৪ সালে ৩ নং সেক্টর কমান্ডার কে এম শফিউল্লাহ বাংলোর পাশে বুলেট আকৃতির স্মৃতিসৌধ স্থাপন করেন। এর পর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী পাঠানের উদ্যোগে ৪ এপ্রিলে তেলিয়াপাড়া দিবস হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পাড়হলেও গুরুত্বপূর্ন স্থানটির কোন উন্নয়ন হয়নি। 

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি ভুমি মন্ত্রণালয় থেকে কিছু জায়গা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের নামে দিলে সরকারি অর্থায়নে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ওই স্থানটি সংরক্ষণ করা যাবে।

এসআর

×