ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তালাকের পর সাবেক স্ত্রীকে গণধর্ষণ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ৩০ অক্টোবর ২০২২

তালাকের পর সাবেক স্ত্রীকে গণধর্ষণ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

গণধর্ষণ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে সোনিয়া আক্তার (১৫) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রবিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে পালক বাবা ফিরোজ আলম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাবেক স্বামীসহ ৯ জনকে আসামি করে  মামলা করেছেন। 

ধর্ষণে জড়িত থাকায় সাবেক স্বামীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাবেক স্বামী মাহিম ইসলাম (১৯), জয়নাল মিয়া (৪৫), বন্ধু সাকিব হোসেন (১৮), পল্লব হাসান (১৯)। 

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সাতদিন বয়সে সোনিয়াকে দত্তক নেন পোগলদিঘা ইউনিয়নের গেন্দারপাড়া গ্রামের ফিরোজ আলম। তার বাড়িতেই বড় হন সোনিয়া। গত বছর আওনা ইউনিয়নের কূলপাল গ্রামের লিপন মিয়ার ছেলে মাহিমের সঙ্গে সোনিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের চার লাখ টাকা ও নানা বিষয়ে সোনিয়াকে নির্যাতন করে আসছিল মাহিম ও তার পরিবারের লোকজন। প্রায় ১০ মাস সংসার করার পর নির্যাতন সইতে না পেরে দেড়মাস আগে মাহিমকে তালাক দেন সোনিয়া।

আরও জানা যায়, তালাকের কিছুদিন পর থেকে সোনিয়ার সঙ্গে পূণরায় মোবাইল ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করে মাহিম। একপর্যায়ে গত ২৩ অক্টোবর সোনিয়াকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় মাহিম। পোগলদিঘা ইউনিয়নের ডুরিয়ারভিটা গ্রামে ছানোয়ার হোসেনের বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করে তারা। দুইদিন পর সেখান থেকে একই উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে বন্ধু পল্লবের বাড়িতে নিয়ে পূণরায় সংঘবদ্ধভাবে একাধিকবার ধর্ষণ করে সোনিয়াকে। এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। 

অবস্থা বেগতিক দেখে মাহিম ও তার সহযোগীরা রাতেই সোনিয়াকে প্রথমে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এতে অবস্থার আরো অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে গত ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে সোনিয়ার মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল ২৯ অক্টোবর বিকেলে সোনিয়ার লাশ গেন্দারপাড়া গ্রামে এনে দাফন করা হয়।

সোনিয়ার মা বানেছা বেগম জানান, যৌতুকের চার লাখ টাকা না দেওয়ায় সোনিয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নানা নির্যাতন করত স্বামী মাহিম। এ কারণে দেড় মাস আগে সোনিয়া তার স্বামীকে তালাক দেয়। এরপর থেকে মাহিম মোবাইল ফোনে সোনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। হঠাৎ গত মঙ্গলবার সোনিয়াকে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মাহিম তার সহযোগীরা ধর্ষণ করে। পরে শুক্রবার
সকালে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোনিয়ার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত
কবীর জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত চার আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×