ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্নপূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে ঘরে এলো নববধূ  

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ২৮ অক্টোবর ২০২২

স্বপ্নপূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে ঘরে এলো নববধূ  

স্বপ্নপূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে

স্বপ্নপূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করে বাড়িতে বউ এনে বাবা মায়ের আশা ছিল ছেলে। কয়েক বছর আগে হেলিকপ্টারে পুত্রবধু আনার একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে পিতার শখ জাগে তিনিও তার ছেলেকে বিয়ে দিয়ে হেলিকপ্টারে ছেলের বউ ঘরে আনবেন। সাধ থাকলেও সাধ্য হয়ে না ওঠার কারণে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে পিতা-মাতার।  

অবশেষে দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর সেই আশা পূর্ণ হলো মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের উত্তর দুধখালী গ্রামে ইদ্রিস তালুকদার ও রোকেয়া বেগমের। শুক্রবার দুপুরে হেলিকপ্টারে পুত্রবধুকে নিয়ে বাড়ি আসেন তার ছোট ছেলে দাদন তালুকদার। এ দৃশ্য দেখতে তাদের বাড়িতে হাজারো মানুষের ভিড় জমে যায়। 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ইদ্রিস আলী তালুকদার ও রোকেয়া বেগম কয়েক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেন হেলিকপ্টারে পুত্রবধু বাড়িতে আনার একটি দৃশ্য। সেই থেকে তারা স্বপ্ন দেখেন হেলিকপ্টারে কোন এক ছেলের বউ আনবেন বাড়িতে। সাধ থাকলেও সাধ্য হয়ে না ওঠার কারণে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের। 

অবশেষে শখ পূরণ করতে শুক্রবার দুপুরে হেলিকপ্টারে উত্তর দুধখালী গ্রামে নিজ বাড়িতে ছেলের বউ নিয়ে আসেন ছেলে দাদন তালুকদার। ইদ্রিস আলী তালুকদারের ৮ সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে দাদন। পেশায় একজন ব্যাংকার। সামাজিক নীতি মেনে মিরপুর বাংলা কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক রুমানা শবনমের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বাবা মায়ের সেই শখ পূরণ করতে ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে হেলিকপ্টারে চড়ে আসেন নবদম্পত্তি। এ সময় আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ জড় হয় এ দৃশ্য দেখতে। 

স্থানীয় শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামের মানুষ এত কাছে থেকে কোনদিন হেলিকপ্টার দেখতে পায়নি। দাদনের বিবাহ উপলক্ষে হেলিকপ্টার গ্রামে আসায় গ্রামবাসী আনন্দিত ও গর্বিত।’ বরের মেঝ ভাই শাহীন বলেন, ‘তার ছোট ভাই বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য হেলিকপ্টার করে বউ নিয়ে গ্রামে আসে। এতে একদিকে তার ছোট ভাই বাবা মায়ের স্বপ্নটা পূরণ করেছে অন্যদিকে গ্রামবাসীও হেলিকপ্টার দেখে আনন্দ পেয়েছে।’ 

বনবধূ রুমানা শবনম বলেন, ‘তার স্বামী আজ বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে। পাশাপাশি অনেক ভালো লাগছে নতুন এক অভিজ্ঞতায়। গ্রামবাসী আমাদের বরণ করে নেয়াটাও অনেক উপভোগ করেছি আমরা।’ 

দাদন তালুকদার বলেন, ‘আমরা ৮ ভাই বোন। ছোট ছেলে  হিসেবে বাবা মায়ের শখ পূরণ করতে হলো। তাই ঘণ্টায় ১ লাখ টাকা হিসেবে হেলিকপ্টারটি ভাড়া করে স্ত্রীকে ঘরে এনে বাবা মায়ের শখ পূরণ করতে পেরেছি।’

দাদনের পিতা ইদ্রিস আলী তালুকদার বলেন, ‘এক সময় পরিবারের মাঝে আমরা আলোচনা করতাম এক ছেলের বউ হেলিকপ্টারে বাড়িতে আনবো। সে কথা মনে রেখে ছেলে বাড়িতে হেলিকপ্টারে বউ এনেছে। মনে খুব শান্তি পেয়েছি। আর কোন শখ বাকি নাই।’ 

এমএস

×