মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানু
শাওন অটো ব্রিকস লিমিটেডের নামে ৫৪ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গিয়ে কারাগারে গেছেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানু।
ওই মামলায় উচ্চ আদালতের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন শেষে সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নীলফামারী জজ আদালতের বিশেষ জজ মো. মাহমুদুল করিমের আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
সূত্র মতে দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. হোসাইন শরীফ গত ২৩ আগস্ট বাদী হয়ে মনছুরুল ইসলাম দানুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলাটি দায়ের করে। মামলায় নীলফামারী অগ্রণী ব্যাংক শাখার সাবেক ম্যানেজার রথিন্দ্র নাথ সরকারসহ আরও দুই জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগ করা হয়, ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানু শাওন অটো ব্রিকস লিমিটেডের মালিক। তিনি অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে ২০১৪ সালে ওই ইটভাটার জন্য ১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। ওই সময় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক রথিন্দ্র নাথ সরকার ও সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের যোগসাজসে নিয়ম ভেঙে এক সঙ্গে ১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানু সুদে-আসলে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে।
অপরদিকে মেয়র দানু ২০১৬ সালে ব্রিকস ফিল্ডের জন্য এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করেও অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাযোশে বন্দর থেকে ওই মালামাল উত্তোলন করেননি। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ব্যাংক ঋণ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের পাওনাসহ মোট ৫৪ কোটি আত্মসাতের অভিযোগ উঠে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবু মোহাম্মদ সোয়েম বলেন,পৌর মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানু তাঁর একটি অটো ভাটার যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আনার জন্য অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। তিনি ওই যন্ত্রপাতি পোর্ট থেকে কিছু উত্তোলন করে অর্থ সংকটে অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি উত্তোলন করতে পারেননি।
এ বিষয়ে ব্যাাংকের ঋণ পরিশোধে গত ১৬ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখার সঙ্গে তার একটি সমঝোতা হয়। এরই মধ্যে গত ২৩ আগস্ট রংপুর দুদক তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে থেকে সোমবার নীলফামারীর বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে আমরা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।
নীলফামারী জজ আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী মো. কামরুজ্জামান শাসন বলেন, ডোমার পৌরসভার মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানু তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য অগ্রণী ব্যাংক নীলফামারী শাখা থেকে যে ঋণ নিয়েছিলেন সেটাকে যেভাবে ব্যবহার করার কথা তা তিনি করেননি। এ বিষয়ে দুদুক তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এই মামলায় তিনি মহামান্য হাইকোট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন।
মহামান্য হাইকোট নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে আজকে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আমরা আপত্তি জানাই। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতের বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলা তদন্তাধীন আছে। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে।
এসআর
