ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে দলিত নারীদের নেতৃত্বে দুর্গাপূজা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর

প্রকাশিত: ২১:১৭, ১ অক্টোবর ২০২২

যশোরে দলিত নারীদের নেতৃত্বে দুর্গাপূজা

দুর্গাপূজা উপলক্ষে নগরী সেজেছে বর্ণিল রঙে

সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের সুজলপুর গ্রামে তৃতীয় বারের মতো নারীদের নেতৃত্বে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার সদস্যদের নেতৃত্বে এই পূজা আয়োজিত হচ্ছে। একইসঙ্গে পুরোহিত সহ সংশ্লিষ্ট সকলেই দলিত যেটি সনাতন সমাজের প্রথা ভেঙ্গে নতুনের দিকে যাত্রা।
নমঃশুদ্র, পৌণ্ড ক্ষত্রীয়, ঋষি, জেলে, ডোম, হেলা, পাটনী কায়পুত্র, বাগদী, খাসি, বুনো, সরদার, কর্মকার, নানা সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া মানুষদের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রভাবশালীরা তাদের যেমন কোথাও স্থান দেয় না, একইসঙ্গে সম্মানও দেয় না, আবার দলিত নারীদেরও তাদের সম্প্রদায়ের পুরুষেরা ঘরের বাইরে বের হতে দেয় না। ফলে তারা নিম্ন জাতের ও নিম্ন শ্রেণীতে অবস্থান করে।

সেজন্য শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার নারীদের উদ্যোগে নারীদের নেতৃত্বে পূজা করে এই ইতিহাস তৈরির আয়োজন বলে জানালেন পূজা কমিটিতে থাকা দলিত নারীরা। পূজা উদযাপনের জন্যে গঠিন ১০ সদস্যের ১০ জনই নারী। শাশ্বাসী দলিত নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার শারদীয় দুর্গোৎসবের সভাপতি জয়ন্তী রানী দাস ও সাধারণ সম্পাদক আয়নামতি বিশ্বাস। কোষাধাক্ষ্যের দায়িত্বে আছেন আরতি দাস।

পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্তী রানী দাস বলেন, একে আমরা পিছিয়ে পড়া জাতি, আমাদের পুরুষদেরও শিক্ষা নেই, অর্থনৈতিক সক্ষমতা নেই। সেজন্য আমরা নারীরাও যেন আমাদের পরিবারের ও সন্তানের ভবিষ্যত তৈরি করতে পারি, তারা যেন আমাদের মতো অবহেলিত জীবন যাপন না করে, সেজন্য আমরা নারীদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও ঘর থেকে বের করে কাজে আনার জন্যে নারীদের নেতৃত্বে এই পূজা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই।

রাজশাহীতে ঢাকের তালে পূজা শুরু
স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, মহাষষ্ঠীতে পূজার মধ্যদিয়ে রাজশাহীতেও শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় বোধনের মাধ্যমে ম-পে ম-পে প্রতিমা থানে উঠে। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো রাজশাহী মহানগরী। আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দুর্গোৎসব উদযাপনে মহানগর জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় স্বায়ংকালে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হয়। এদিন সকাল থেকে চণ্ডীপাঠে মুখরিত রয়েছে মহানগরীর সকল মণ্ডপ। রাজশাহী মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ জানান, মহানগরীজুড়ে এখন সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সবাই দুর্গাপূজার উৎসবের আমেজে মজেছেন।
রাজশাহীতে এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিগুণ করা হয়েছে। এতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা খুশি। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি তপন কুমার সেন জানান, রাজশাহীতে এই বছর ৪৫০টি ম-পে দুর্গাপূজা উদযাপন হচ্ছে।

দুর্গাপূজায় অন্য রূপে সেজেছে বরিশাল নগরী
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে জানান, মন্দিরসহ নগরীর প্রধান প্রধান সড়ককে সাজানো হয়েছে নববধূর সাজে। দিন শেষে সন্ধ্যা নামতেই রং বেরঙের বাতি জ্বলে ওঠার পর রাতে আলোর ঝলকানিতে পুরনো এ নগরীকে চেনা দায় হয়ে পড়েছে। শুক্রবার রাত থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও পূজাম-পে আলো ঝলমলিয়ে উঠেছে।
সন্ধ্যা নামতেই বাহারি আলোকসজ্জায় মুগ্ধ করছে নগরবাসীকে। তাই রাতভর সকল ধর্মের মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন ভিন্ন এক বরিশাল নগরীতে। নগরীর সবচেয়ে বড় পূজাম-প শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদ্যাপন কসহ-সাধারণ সম্পাদক সবুজ দাস বলেন, করোনার প্রকোপ কায়ে আমরা অনেকটাই স্বাভাঅবস্থায় ফিরে। তাই এ বছর বড়ভাবে পূজা উদ্যাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জে দুর্গোৎসব শুরু
স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, দুর্গাপূজা ঘিরে চারদিকে এখন উৎসব। শোনা যায় ঢাকের আওয়াজ। পূজার প্যান্ডেল থেকে বাড়ির মন্দির পর্যন্ত সাজসজ্জা। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল এবং পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুনসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন।
জেলায় এ বছর ৩৩৬টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। এরমধ্যে ৩৭টি অধিক ও ৪০ ম-প ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে ৭৭ ম-পে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। জেলায় স্থায়ী পূজা ম-পের সংখ্যা ২২৪ টি ও অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ ১১২টি। শনিবার সকালে রীতিনীতি মেনে মহাষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধনের মাধ্যমে শুরু হয় পূজা।

×