উলিপুরের বজরা এলাকায় রাক্ষুসী রূপ নিয়েছে তিন্তা নদী
ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। গত তিনদিনে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের তিন গ্রামের মানুষ হারিয়েছে প্রায় আড়াই শতাধিক বাড়িঘর। বিলীন হয়ে গেছে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, দুটি মসজিদ, একটি মন্দির, ঈদগাহ মাঠ, বজরা পশ্চিমপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, পুরাতন বজরা বাজার ও একটি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙ্গনকবলিতরা আশ্রয় নিয়েছে খোলা আকাশে। উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা পাশে দাঁড়ায়নি বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
গত এক মাস যাবত ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল উলিপুরের বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম কালপানি বজরা, কালপানি বজরা ও সাতালস্কর গ্রামে। উত্তরে জজমিয়ার বাড়ি থেকে দক্ষিণে রোস্তম মৌলভীর বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে গত তিনদিনে হঠাৎ করে ভাঙ্গনের তীব্রতার ফলে প্রায় আড়াই শতাধিক বাড়িঘর, ৫শ’ বিঘা ফসলি জমিন, গাছপালা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ মাঠসহ মানুষের শেষ সম্বলটুকুও নদী গ্রাস করেছে।
কালপানি বজরা গ্রামের ছেলে মোজাম্মেল হক (৬৫) জানান, তিনদিন থেকে খোলা মাঠে পলিথিন টাঙ্গিয়ে পরে আছি। গরিব মানুষ জায়গা নাই কেথায় যাই। আজকে বজরা বাজারের বাসিন্দা তার জেঠতো ভাই টিটু মিয়া বাড়ির আঙ্গিনায় ঘর তোলার অনুমতি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অভিযোগ সরকারীভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি কেউই। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা শুধু দেখে গেছেন।
তাদের নাকি কিছুই করার নেই। অপরদিকে ভয়াবহ এই ভাঙ্গনের খবর পেয়েও উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন খোঁজখবর নেয়া হয়নি। দুর্দশাগ্রস্তরা বৃষ্টির মধ্যেই খোলা প্রান্তরে মানবেতরভাবে রয়েছে অনেকেই। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ভাঙ্গন কবলিতদের দ্রুততম সময়ে তালিকা করতে বলা হয়েছে। তালিকা পেলেই সহযোগিতা শুরু করা হবে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ২০-২৫ বছর পূর্বে মূল নদীর স্রোত ছিল এই এলাকায়। গ্রামগুলোর উজানে নদী শাসনের ব্যবস্থা নেয়ায় এখানে হঠাৎ করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আমরা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনাতলা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে বিলীন বাঁধ
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী থেকে জানান রিভার সাইটের স্লোপসহ অর্ধেকটা বিলীন হয়ে গেছে পাঁচটি স্পটে। তিন ভেন্টের স্লুইসের উইং ওয়ালসহ ব্লক নেই। বিধ্বস্তদশায় রয়েছে স্লুইসের মূল অংশ। নতুন নতুন স্পটে বাঁধে ভাঙ্গন ধরেছে। সোনাতলা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে পূর্ব গৈয়াতলা গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এভাবে বিলীনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৬ নম্বর পোল্ডারের এই বাঁধ ঘেঁষা বাসিন্দারা ফি রাতেই বিধ্বস্তদশার বঁাঁধটি দেখতে যায়। রাতে ঘুমাতে পারেন না। বসবাস, চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সবজির ঘাঁটিখ্যাত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের এই বেড়িবাঁধটি রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ না নিলে দেড় হাজার সবজি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন জানান, ওই বাঁধটি মেরামতে তারা পরিকল্পনা নিয়ছেন। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে জরুরী প্রটেকশনের কাজ শুরু করবেন।