সেচ দিয়ে চলছে আমনের চারা রোপণ
কৃষক ফজলুল হক বলেন, ‘আঙ্গর তো বাঁচার উপায় নাই, তেল-সারের দাম বেশি, গিরস্তি করাম কিবা’ তিনি আরও বলেন, সরকার তেল ও সারের দাম বাড়াইয়া দিছে, বড়লোক আরও বড়লোক অইতাছে, আর আঙ্গর তো মরার অবস্থা। অহন তো আমরার না খায়া মরুন লাগবো। একদিকে খরা, আরেকদিকে সার ও তেলের দাম বেশি। খরার কারণে স্যালো মেশিন দেয়া খেতে পানি কিন্যা দিতাছি। সময় মতো কামলাও পাওয়া যায় না। জুলাইয়ের শুরুতেই ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বৃদ্ধি পেয়েছে জ্বালানি তেলে দাম। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কৃষি সংশ্লিষ্ট উপকরণের দাম।
কৃষি উৎপাদনে খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে গফরগাঁও উপজেলার কৃষক। এতে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমের প্রতি কাঠা (১০ শতাংশ) ২২০ টাকায় চাষ করেছি। চলতি মৌসুমে সেই জমি ৪৫০ টাকায় চাষ করতে হচ্ছে। প্রতি কাঠায় ১৩০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। জ্বালানি তেলে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকা পড়েছেন বিপাকে। চলতি আমন মৌসুমে বৃষ্টির অভাবে সেচ দিয়ে আমন ধান আবাদ করছেন উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক। এত কিছুর পরও ধানের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চাষীরা।
গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী, সালটিয়া, রাওনা, যশরা, পাঁচবাগ, পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নে প্রায় একই অবস্থা। চরআলগী গ্রামের প্রান্তিক চাষী, গোলাম হোসেন বলেন, আমি এ বছর ৮০ শতাংশ জমিতে আমন চাষ করেছি। প্রতি দশ শতাংশে হালচাষ ২২০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫০ টাকা হয়ে হয়েছে। চাড়া রোপণের খরচ ৩২০ থেকে বেড়ে ৬৫০ টাকা হয়েছে। কামলা খরচ জন প্রতি ১ হাজার টাকা। সারের ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমন আবাদ কমিয়ে দিয়েছি। জানি না কি হবে! দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, এখনও চারা রোপণের কাজ চলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমন চারা রোপণ চলতে পারে। এর পরেই জানা যাবে কি পরিমাণ জমিতে আমন রোপণ করা হয়েছে। তা ছাড়া সার ও ডিজেলের দাম যাতে কেউ বেশি নিতে না পারে সেদিকেও আমাদের সজাগ দৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।