ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তাল সাগর, নিরাপদ আশ্রয়ে শতশত ট্রলার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ১১:৫২, ১০ আগস্ট ২০২২

উত্তাল সাগর, নিরাপদ আশ্রয়ে শতশত ট্রলার

নিরাপদ আশ্রয়ে ট্রলার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে বাগেরহাটসহ উপকূলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। গত দু’দিন ধরে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 

বন বিভাগ, মৎস্যজীবী সংগঠন ও জেলেদের একাধিক সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় অধিকাংশ মাছ ধরার ট্রলার সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহের আলীর চর, ভেদাখালীর অফিস খাল, কচিখালী, রাজেশ্বর, পূর্ব খোন্তাকাটা, রাজৈর, কুমারখালী, শরণখোলা, রায়েন্দা, রামপাল, মোংলা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। 

এদিকে, সাগর থেকে ফেরোর পথে ঢেউয়ের কবলে পড়ে ২৪ জেলেসহ দুটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ২ জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান জেলেরা।

জেলে গণি হওলাদার ও হারেজ মাঝি জানান, সাগর খুব অশান্ত। পাহাড় সমান ঢেউ। জাল ফেলার উপায় নেই। ঢেউয়ের আঘাতে সাগরে পেতে রাখা অনেক ট্রলারের জাল ছিঁড়ে গেছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তাই আমরা ফিরে এসেছি।

দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, ইলিশ আহরণে থাকা অধিকাংশ ট্রলার সাগর ছেড়ে এখন কূলে অবস্থান করছে। এখন সাগরে খুব তীব্র ঢেউ। বহু জেলের জাল ছিড়ে গেছে। তবে কিছু কিছু ট্রলার খুব বেশী ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনের কাছাকাছি সমূদ্রে মাছ আহরণের চেষ্টা করছে। 
তবে সাগর থেকে ফেরার পথে ঢেউয়ের কবলে পড়ে ২৪ জেলেসহ দুটি মাছ ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবরের সত্যতা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

সমুদ্রগামী মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে গত ২৩ জুলাই থেকে সাগরে ইলিশ আহরণ শুরু হয়। প্রথম দুই দিনে সাগরে তেমন ইলিশ পড়েনি। তারপর থেকে মাছ পড়তে শুরু করেছে। সব ট্রলারেই কমবেশি মাছ পাচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা জাল ফেলতে পারছে না। আবহাওয়া ভালো থাকলে গত দুই লোকসান হয়ত কাটিয়ে উঠা যেত।

ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, ইলিশ মৌসুমের শুরুতেই ৬৫ দিনের অবরোধ গেল। এরপর অক্টোবরে আসছে ২২ দিনের অবরোধ। আবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। ফলে ইলিশ মৌসুমের পাঁচ মাসের অর্ধেক সময় চলে যায় অবরোধ আর দুর্যোগে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনের নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বেড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুই-তিন দিন ধরে সাগর ফুঁসে উঠছে। এ অবস্থায় সাগর থেকে ফিরে আসা মাছ ধরার ট্রলারগুলি বনের বিভিন্ন ছোট খালে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এই জেলার ভৈরব, পানগুছি, বলেশ্বর ও পশুরসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীতে জোয়ারের পানির চাপ বেড়েছে। তবে এতে জেলার কোনো বাঁধ ঝুঁকিতে নেই।’

এমএইচ

×