ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বে করোনা ভাইরাসের বিস্তার অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসমুক্ত হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও ঝুঁকিতে রয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে তিন ধরনের পরিকল্পনা হাতে নিয়ে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে সরকার। এটি এখনও চূড়ান্ত আকারে প্রকাশ হয়নি। সতর্কতাবস্থা জোরালো রাখার পাশাপাশি দেশে করোনা রোগী পাওয়া গেলে এবং ব্যাপক মাত্রার বিস্তাররোধে করণীয় বিষয়সমূহ নীতিমালায় থাকছে। আজ বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগী নিয়ন্ত্রণ ও গবেষনা প্রতিষ্ঠানের(আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এ সময় আইইডিসিআর’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, প্রথম দিকে আমরা শুধু চীনকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের সব সতর্কতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। বর্তমানে প্রায় বিশ্বের সব দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের বাইরে থেকে আসা সব নাগরিককে স্থল, জল ও বিমানবন্দরে স্ক্যানিং করা হচ্ছে। আমাদের সন্দেহ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সবকর্মী একই নির্দেশে কাজ করছে। সরকারের তিন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, প্রথমত আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী নেই। সেটাকে এ্যালার্ট লেভেল বলছি। আমরা বর্তমানে যেসব কর্মসূচি পালন করছি, তা এ্যালার্ট লেভেলের অংশ।দ্বিতীয়ত, যদি করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়, তখন আমাদের কি করতে হবে। কোন পরিকল্পনায় এগুতে হবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা নেযা আছে। তৃতীয়ত, যদি এ রোগটি ব্যাপক আকারে বাংলাদেশের ছড়িয়ে পড়ে,তাহলে আমাদের কী করণীয় তাও আমরা পরিকল্পনা করে রেখেছি। অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আমরা আশা করি না এ রোগটি দেশে ছড়িয়ে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর জনস্বার্থে যেসব সচেতনতামূলক প্রস্তুতি নিয়েছে তাতে আমরা মনে করি না এ রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। এ পরিকল্পনাগুলো পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিত্র তুলে ধরে পরিচালক অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আফগানিস্তান, বাহরাইন, ইরাক ও ওমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত এ চারটি দেশসহ বিশ্বের সর্বমোট ৩৪টি দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। সর্বমোট আক্রান্তে সংখ্যা ৭৭ হাজার ৭৮০ জন নিশ্চিত করেছে চীন। ২ হাজার ৬৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫১৮ জন আক্রান্ত্রের মধ্যে ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চীনের বাইরে ২ আজার ৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অধ্যাপক ডা. ফ্লোরা আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, চীন সহ বিশ্বের ৩৪টি দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এসব দেশগুলোর অধিকাংশতেই বাংলাদেশের মানুষ বসবাস করছেন। এ যাবত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী শুধুমাত্র সিঙ্গাপুর ও আরব আমিরাতে বাংলাদেশের কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সব দেশে সবাই ঝুঁকিতে আছেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের করোনা পরিস্থিতি অবহিত হতে আমরা নিয়মিত এদেশে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট বিদেশী দূতাবাস ও প্রবাসে বাংলাদেশের দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ রাখছি। ক্ষেত্র বিশেষে আমরা সংশ্লিষ্ট দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথেও যোগাযোগ করছি। প্রবাসে বাংলাদেশীদেরকে আমরা অনুরোধ করছি, যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করবেন।
×