ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গত তিন বছরে ঢাকা শহরে বায়ুমান বেশি খারাপ হয়েছে : সংসদে পরিবেশ মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

গত তিন বছরে ঢাকা শহরে বায়ুমান বেশি খারাপ হয়েছে   : সংসদে পরিবেশ মন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ শুষ্ক মৌসুমে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বাষুদূষণের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যায়। রাজধানী ঢাকা শহরে শুস্ক মৌসুমে শুধুমাত্র সুক্ষ্ম বস্তুক্ষণার পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার বাইরে থাকে। ২০০২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বায়ুমানের ডাটা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০১৯ এই তিন বছর বায়ুমান বেশি খারাপ হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি ঘটেছে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মনজুর হোসেনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। মন্ত্রী জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় ও শিল্পঘন শহরগুলোতে সার্বক্ষণিত বায়ুমান পরিবীক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশে বায়ুর গুণগত মান পরিমাণ করা হচ্ছে। অন্যান্য দুষক যেমন : সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন-মনোস্কাইড ইত্যাদি সারাবছর মানমাত্রার মধ্যে থাকে। বায়ু দূষণের উৎস হিসাবে ইটভাটা, যানবাহন, রাস্তা খোড়াখুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম, পৌরবর্জ্য ও বায়োমাস পোড়ানো এবং ট্রান্সবাউন্ডারী প্রভাবকে দায়ী করা হয়। মন্ত্রী জানান, আইনের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর দেশে বিদ্যমান ইটভাটাসমূহকে জ্বালানী সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উন্নত প্রযুক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। অবৈধ পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটার বিরুদ্ধে ২০১৫ সাল হতে অভিযান পরিচালনা করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সারাদেশে প্রায় ৬শ’ অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হবে। পরিবেশ মন্ত্রী জানান, মাটি ব্যবহার করে পোড়ানো ইট উৎপাদন ও ব্যবহার শূণ্য নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের মধ্যে শতভাগ ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। পরবর্তীতে সকল বেসরকারি কাজে ইটের বিকল্প ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে মাটি ব্যবহার করে পুড়ানো ইট উৎপাদনও ব্যবহার শূণ্যে নেমে আসবে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাহে আলমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জানান, পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বন্ধে সরকার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে পলিথিন জব্দ, জরিমানা ধার্য ও আদায় করা হচ্ছে। তিনি জানান, ঢাকা মহানগরের বাজার কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তারা পলিথিন ব্যবহারে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে মর্মে উল্লেখ করে পলিথিনের বিকল্প বাজারে সরবরাহের দাবী জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের বিজ্ঞানী মোবারক আহমেদ খান পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটজাত পলিথিন ’সোনালী ব্যাগ’ আবিস্কার করেছেন। প্রচলিত পলিথিনের বিকল্প হিসেবে বায়োডিগ্রেডেবল পলিথিন বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহৃত পলিথিন রিসাইক্লিং-এর মাধ্যমে পূর্ণ ব্যবহার করার উদ্যোগটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
×