ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কমেছে শীতের সবজির দাম, তবে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির

চালের দাম কেজিতে দুই থেকে ৫ টাকা বেড়েছে ছোলা রসুনের দাম চড়া

প্রকাশিত: ১০:০৬, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

  চালের দাম কেজিতে দুই থেকে ৫ টাকা বেড়েছে ছোলা রসুনের দাম চড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ আর স্বর্ণা ও চায়না ইরিখ্যাত মোটা চাল খুচরা বাজারে ৩০-৩৫ টাকায়। ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও বেড়েছে ছোলা ও রসুনের দাম। সরবরাহ বাড়ায় আরও কমেছে শীতের সবজির দাম। মাছ ও মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। শুক্রবার কাপ্তানবাজার, কাওরানবাজার, ফার্মগেট, মিরপুর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। চালের দাম বাড়ায় স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের উদ্বেগ বেড়েছে। কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এর পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের ন্যায্যদাম নিশ্চিত করতে সরকার নির্ধারিত দামে ধান চাল সংগ্রহ করেছে। পর্যাপ্ত ধানের মজুদ রয়েছে। এ কারণে এ মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। অথচ মিলগেটে বস্তাপ্রতি চালের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর পাইকারি বাজারগুলোয় গত সপ্তাহ থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ইতোমধ্যে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। সরু নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৫২-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানের পাইজাম ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৮ টাকায়। এ প্রসঙ্গে কাপ্তানবাজারের চাল বিক্রেতা নুরুল ইসলাম নূরু জনকণ্ঠকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরেই চাল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি মোটা চাল ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা কিছুটা বিরক্ত। অন্য পণ্যের দাম বাড়লেও কেউ চালের দাম বাড়া মানতে চায় না। মসলা জাতীয় পণ্য পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ মানভেদে ৬৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির ট্রাক থেকে ভোক্তারা ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। মূলত এই পেঁয়াজেই ভরসা পাচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা। এ কারণে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোক্তাদের টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। বাজারে নতুন ওঠা দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। তবে সেভাবে দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিক্রেতারা বলছেন, দাম কমাতে হলে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ ও উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে আরও মাসখানেক অপেক্ষা করতে হবে। ‘রাখী’ পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে এ বছর বেশি দামের আশায় সারাদেশে ব্যাপক ‘রাখী’ পেঁয়াজের আবাদ বাড়ানো হয়েছে। ওই পেঁয়াজ এখন বাজারের ভরসা। তিনি বলেন, রাখী পেঁয়াজ উঠতে আরও মাসখানেক লাগবে। এদিকে রোজার কয়েক মাস আগে বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। প্রতিকেজি ছোলায় ৫ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ১১০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে রসুন ১৩০-১৫০, দারুচিনি ৪২০-৪৫০, আদা ১১০-১৬০, সয়াবিন তেল লুজ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি চিনি ৬০-৬৫, ফার্মের ডিমের হালি ৩৩-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। বেড়েছে সব ধরনের দেশী মাছের দাম। বাজারে যদিও ইলিশের ছড়াছড়ি। এর আগের কোন শীতে এবারের মতো এত ইলিশ আর দেখা যায়নি। প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১২শ’ টাকায়। সরবরাহ বাড়লেও দেশী মাছ ভোক্তাদের বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। খুচরা বাজারে বোয়াল, আইড় সাড়ে ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। আলু, টমেটো, শালগম, মূলা, ফুলকপি, বাধাকপি, শিম ও অন্যান্য শাকসবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে।
×