ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষার্থীদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হবে ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:২১, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

  শিক্ষার্থীদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হবে  ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে দেশের ১৪ হাজার অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হবে। এসব প্রতিটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় হবে ১৬ লাখ টাকা করে। এতে এ প্রকল্পে প্রায় ২৩ শ’ কোটি টাকা ব্যায় হবে। তিনি বলেন, একমাত্র জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে বর্তমান বিশ্বে টিকে থাকতে হবে। কোন গলাবাজি করে বা পেশী শক্তি দিয়ে কেউ এ পৃথিবীতে টিকে থাকতে বা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এজন্য আজকের শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে আগামি দিনে দেশ ও মানুষের দায়িত্ব নিতে হবে আজকের সন্তানদেরই। তিনি আজ শুক্রবার গাজীপুরে জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উচ্চতর শিক্ষাবৃত্তি-২০২০ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্বেবিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন মিয়া ও সাবেক ভিসি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান আকন্দ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন প্রমূখ। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। তার সেই প্রচেষ্টার কারণে আজ ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারছে, পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারছে। বর্তমান সরকারের সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণেই আমরা আজ তা সফলভাবে অর্জন করতে পারছি। তিনি বলেন, ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্থ এ দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করে সবক’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারী করণ করেছেন। কিন্তু তাকে হত্যার পর ৪১ বছরেও দেশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেও সরকারী করণ করেনি পরবর্তী সরকার। অথচ গত প্রায় ১১ বছর আগে বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে দেশের ২৬ হাজার ১৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয় করণ করেছেন। তিনি দেশের ১হাজার ৪৫৮ টি গ্রামে নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি এসব বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৩ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকুরি জাতীয় করণ করেছেন। তিনি গত ১ জানুয়ারি প্রথম শ্রেণী হতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত দেশের প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে প্রায় ৩৫ কোটি নতুন বই বিনামূল্যে তুলে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে এ কার্যক্রম শুরু করেছেন। পৃথিবীর কোন দেশে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণের এমন নজির নাই। অথচ বাংলাদেশের তুলনায় পৃথিবীর বহু উন্নত দেশের লোক সংখ্যা অনেক কম রয়েছে। একমাত্র দেশরতœ শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে শিক্ষার ক্ষেত্রে এমন পরিবর্তন আনতে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আসান রাসেল এমপি বলেন, আমাদের সন্তানদের শুধুমাত্র ভাল ছাত্র-ছাত্রী হলেই হবে না। নিজেকে একজন আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে পারলে নিজেরা যেমনিভাবে সন্মানিত হবে, তেমনিভাবে সমাজ ও দেশ সন্মানিত হবে। এগিয়ে যাবে এ দেশ। জেগে উঠবে শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ববোধ, দেশ ও মানুষের প্রতি ভালবাসা। আমি আমাদের সন্তানদের কাছে নিজেকে আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যাশা করছি। অনুষ্ঠানে গাসিক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজীপুর মহানগরের শিক্ষার্থীদের জন্য একশ কোটি টাকার শিক্ষা বৃত্তির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের উচ্চতর শিক্ষা লাভের জন্য শিক্ষার্থীদের বিদেশে পাঠাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। মহানগরীতে শতভাগ শিক্ষার্থীদের এ বৃত্তির আওতায় অআনা হবে। শিক্ষা খাতে আমার আয়ের ৮০শতাংশ ব্যয় করা হবে। এবছর ২৬০জন শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষার জন্য চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১০টি দেশে পাঠাচ্ছি। এরপর আরো একশ জন শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানো হবে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। অনুষ্ঠানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ পড়ুয়া প্রায় ২৫হাজার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২০ হাজার হতে ১০লাখ টাকা বৃত্তি দেয়া হয়। পরে বিকেলে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
×