ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত দুই জেএমবি ক্যাডার গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ২১ জানুয়ারি ২০২০

  পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত দুই জেএমবি ক্যাডার  গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত বছর ঢাকার পাঁচ স্থানে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন নব্য জেএমবির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। গ্রেফতারকৃত দুই জনের মধ্যে জামাল উদ্দিন রফিকের নেতৃত্বে বোমা হামলাগুলো হয়েছিল। হামলায় ব্যবহৃত বোমাগুলো তৈরি করা হয়েছিল রফিকের বাড়িতেই। গত ১৯ জানুয়ারি রবিবার দিবা রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মোঃ জামাল উদ্দিন রফিক ও মোঃ আনোয়ার হোসেন। তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে। জব্দ ল্যাপটপে বোমা হামলা সংক্রান্ত তথ্য আছে। যেটি মামলার আলামত হিসেবে ধরা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিআইজি মোঃ মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত বছরের ২৯ এপ্রিল গুলিস্তানে পুলিশের ওপর প্রথম বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে এক পুলিশ সদস্য মারাত্মক আহত হন। প্রায় এক মাস পরই গত বছরের ২৬ মে মালিবাগে পুলিশের ওপর বোমা হামলা হয়। হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুজন মারাত্মক আহত হন। এর প্রায় দুই মাস পর গত বছরের ২৩ জুলাই পল্টন মোড় ও খামারবাড়িতে একযোগে পুলিশের ওপর বোমা হামলা হয়। আর সর্বশেষ প্রায় এক মাস পর গত বছরের ৩১ আগস্ট সায়েন্সল্যাব মোড়ে পুলিশের ওপর মারাত্মক ধরনের বোমা হামলা হয়। পুলিশের ওপর বোমা হামলার নেতৃত্বে ছিল গ্রেফতারকৃত রফিক। যেসব বোমা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছিল সেসব বোমা তৈরিও করা হয়েছিল রফিকের বাড়িতেই। মোঃ জামাল উদ্দিন রফিক পুলিশের ওপর বোমা হামলা দলের প্রধান। তিনিই দলনেতা হিসেবে পুলিশের ওপর চালানো পাঁচটি বোমা হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা নব্য জেএমবির সদস্য। জামাল উদ্দিন রফিক খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছে। অপরজন আনোয়ার। পেশায় ড্রাইভার। আনোয়ার পোড়া মবিলের ব্যবসা করত। রফিকের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর পাঁচটি বোমা হামলার ঘটনাই ঘটে। যার মধ্যে চারটি হামলায় রফিক সরাসরি উপস্থিত ছিল। ডিআইজি মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা কালো পোশাক পরিধান করে খেলনা অস্ত্র, বোমাসহ সুইসাইডাল ভেস্ট পরিধান করে বিভিন্ন উগ্রবাদী কথাবার্তা সংবলিত একটি ভিডিও ক্লিপ অনলাইনে প্রচার করেছিল। ভিডিওতে জামাল উদ্দিন রফিক, ফরিদ উদ্দিন রুমি, আব্দুল্লাহ আজমীর ও গ্রেফতারকৃত আনোয়ার অংশ নিয়েছিল। এর আগে পুলিশের ওপর বোমা হামলায় জড়িত ফরিদ উদ্দিন রুমি, আব্দুল্লাহ আজমীর, মেহেদী হাসান তামিম, মিশুক খানকে গ্রেফতার করা হয়। মনিরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্যই তারা হামলাগুলো করেছিল। এছাড়া তাদের উগ্রবাদী সংগঠনের সক্ষমতা ও রিক্রুটমেন্ট ত্বরান্বিত করার জন্যই তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এছাড়া পুলিশের ওপর বোমা হামলা করে দেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তারা অনলাইনে ভিডিও ক্লিপটি প্রচার করেছিল। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার তক্কার মোড়ে রফিকের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছিল কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। অভিযানে তাজা বোমাসহ বিপুল বিস্ফোরকদ্রব্য ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার হয়।
×