ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২৪ জানুয়ারি শুরু

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২১ জানুয়ারি ২০২০

 আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২৪ জানুয়ারি শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিশুদের ঘিরেই সাজানো পুরো আয়োজন। আবার শিশুরাই সে উৎসবের আয়োজক। তাদের মেধা-মননেরই প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে আট দিনের সে আনন্দযজ্ঞ। আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ৩৯ দেশের ১৭৯ শিশুতোষ চলচ্চিত্রে সাজানো উৎসবটি শেষ হবে ৩১ জানুয়ারি। রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে ছবিগুলো দেখার সুযোগ মিলবে। শিশু-কিশোরসহ তাদের অভিভাবকরা বিনা দর্শনীতে উপভোগ করবেন এ উৎসব। ‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামীর স্বপ্ন’ প্রতিপাদ্যে বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় ১৩তম আসরটির আয়োজক চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ। আগামী ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেলে শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে এ উৎসবের উদ্বোধন হবে। উৎসব উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট শিল্পানুরাগী এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফা মনোয়ার। সোমবার দুপুরে রাজধানীর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুনিরা মোরশেদ মুন্নী, উৎসব উপদেষ্টা মোরশেদুল ইসলাম ও ইয়াসমিন হক। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎসব পরিচালক ফারিহা যাহিন বিভা। উৎসব সম্পর্কে চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, এই উৎসবটি শিশুদের জন্য বাংলাদেশের সবেচেয়ে বড় উৎসব। শুধু তাই নয়, এটি বিশ্বেরও অন্যতম বৃহৎ শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব। এ আয়োজনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে বিচিত্র বিষয়ের চলচ্চিত্র দেখার দুর্লভ সুযোগ পাবে শিশুরা। এতে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটবে। অন্যদিকে আবার তারাই আয়োজন করছে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসব। সেই বিবেচনায় নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে এই শিশু-কিশোররা। অথচ এই বিশাল উৎসবটি আয়োজন করতে গিয়ে আমাদের অর্থকষ্টে ভুগতে হয়। সরকারী কিছু অনুদান পেলেও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যায় না। নানা কিছুতে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হলেও শিশুদের মনন বিকাশের উৎসবে আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পেতে কষ্ট হয়। উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরে জানানো হয়, ঢাকায় মূল উৎসব কেন্দ্র হবে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন। এছাড়া জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ সেন্টার ও গ্যেটে ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি কর্মশালা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সকাল ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় মোট ৪টি প্রদর্শনী হবে। একটি প্রদর্শনীতে একাধিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। ৩৯ দেশের ১৭৯ শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। অভিভাবকসহ শিশু-কিশোরদের জন্য সকল প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। উৎসবে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে তিনটি দ্বিতল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবারের উৎসবে মোট ৪টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সিনেমাটোগ্রাফির ওপর নিহাল কুরাইশি, ডিরেকশনের ওপর পিপলু আর খান, ‘সাউন্ড ইন ফিল্ম’-এর ওপর নাহিদ মাসুদ এবং ‘স্টোরি টেলিং’ বিষয়ক কর্মশালা পরিচালনা করবেন অমিতাভ রেজা। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে অন্তরঙ্গ আড্ডায় উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা ও রণাঙ্গনের আলোকচিত্রী হারুন হাবীব ও প্রথম বাংলাদেশী নারী ফিফা রেফারি জয়া চাকমা। এবারে উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশী শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে জমা পড়া ৪৮টি চলচ্চিত্রের মধ্যে নির্বাচিত ১৮টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে এবং ৫টি চলচ্চিত্র মনোনয়ন পাবে পুরস্কারের জন্য। পুরস্কার হিসেবে থাকছে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও আর্থিক প্রণোদনা। পুরস্কারের জন্য গঠিত ৫ সদস্যের জুরি বোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর। অর্থাৎ ছোটদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রগুলো বাছাই করবে ছোটরাই। ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে ‘ইয়ং বাংলাদেশী ট্যালেন্ট’ বিভাগ। এছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে রয়েছে ‘স্পেশাল ফিল্ম কম্পিটিশন’ বিভাগ, যেখানে বিষয় হলো ‘প্রজন্মের চোখে বঙ্গবন্ধু’ । একই সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে উৎসব কমিটির দ্বারা মনোনীত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের ১০৫ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
×