ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিন দশকের মধ্যে চীনের প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন

প্রকাশিত: ০১:৩৬, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

তিন দশকের মধ্যে চীনের প্রবৃদ্ধি  সর্বনিম্ন

অনলাইন ডেস্ক ॥ চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তিন দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। ২০১৯ সালে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬.১ শতাংশ। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর (এনবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২০১৮ সালে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬.৬ শতাংশ। দেশীয় চাহিদা হ্রাস ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধিতে এমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে কিছুদিন আগেই কিছুটা আশার আলো দেখতে পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ও বেইজিং প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যদিও এই চুক্তি কতটুক ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশ্লেষকদের। তবে প্রবৃদ্ধির নিম্নহারের কারণে বেইজিং শিগগিরই কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বল মনে করা হচ্ছে। এই হার নিয়ন্ত্রণে ট্যাক্স মওকুফ, অবকাঠামোগত কার্যক্রমে অভ্যন্তরীণ সরকারকে বড় অংকে বন্ড বিক্রির অনুমতি দেয়া হতে পারে। এছাড়া, চীনের ব্যাংকগুলোকেও অধিক পরিমাণে ঋণ দিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে, বিশেষ করে ছোট খামারের জন্য। গত বছর স্থানীয় মুদ্রায় ঋণ দেওয়া হয়েছে প্রায় ২.৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশটির নতুন রেকর্ড। অর্থনীতির প্রবৃ্দ্ধি কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগেও। ইতোমধ্যে দেশটিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির হার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে। বহু বছর ধরেই চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ব্যাপক হারে। ২১ শতকের প্রথম দশকেই দেশটিতে দুই অংকের প্রবৃদ্ধি দেখেছে বিশ্ব। তবে সেটি কমে ৬.১ শতাংশ হলেও তা এখনো বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির অন্য দেশগুলোর তুলনায় যথেষ্ট বেশি। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে এবছর দেশটিতে অর্থনৈতিক প্রবৃ্দ্ধি হবে ২.২ শতাংশ মাত্র। বাণিজ্যযুদ্ধ উপকারই করেছে চীনের! অনেক দেশের জন্যই ধীরগতির প্রবৃদ্ধি আতঙ্কের কারণ হতে পারে, তবে চীনের জন্য নয়। অনেক বিশ্লেষকের মতে, দেশীয় চাহিদা কমে যাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ কার্যত উপকারই করেছে চীনের। বিবিসির বিশ্লেষক স্টিফেন ম্যাকডনেলের মতে, ২০১৯ সালে জিডিপি ৬.১ শতাংশ হওয়া চীন সরকারের লক্ষ্যমাত্রাতেই ছিল। দেশটির নীতিনির্ধারকরা বহুদিন থেকেই ধীরে ধীরে এই হার কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। গত কয়েক বছরে দেশটির অস্থিতিশীল ও অপ্রতিরোধ্য প্রবৃদ্ধির জন্য বড় ধাক্কা লেগেছে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর, অচল ঋণের ক্ষেত্রে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটেছে। একারণে, সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে যার ফলে এই পরিস্থিতি থেকে দেশটির অর্থনীতি খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসতে না পারে। সেক্ষেত্রে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াচ্ছে- তাহলে ঋণ পাবে কারা? বিভিন্ন অঞ্চলে গজিয়ে ওঠা বিলাসী প্রকল্প বাস্তবায়নকারীরা? নাকি আধুনিক চীনা উন্নয়নের ভবিষ্যৎ হিসেবে পরিচিত নতুন উদ্যোক্তারা?
×