ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সকলকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। তিনি বলেন, দেশে জটিল অসংক্রামক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একটা সময় দেশের অধিকাংশ মানুষ মারা যেত সংক্রামক রোগে। কিন্তু এখন সেটি নেই। তবে এখন দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগে। আর এই ৬৫ শতাংশের মধ্যে ৩০ ভাগ মানুষের মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। এখন এটি প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে সঙ্গে যুবক ও কিশোরদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। রবিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তন ‘ট্রান্স ফ্যাট নির্মূল করি, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাই' শীর্ষক আলোচনা ও এ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, এমপি, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসাইন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারোয়া জাহান, ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান প্রমুখ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অসংক্রামক রোগের মধ্যে হার্টের জটিলতা বাড়ার অন্যতম কারণ হলো খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট থাকা। এর বাইরে ধূমপান, খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, ব্লাড প্রেসার , কায়িক পরিশ্রম করা, পরিবেশ দূষণও অন্যতম কারণ। এখন আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে কোন কোন খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট থাকে। সেসব খাবার পরিহার করতে হবে এবং ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত খাবারগুলো গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয় উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এই কাজে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য, কৃষি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় জড়িত। তাই সবার সমন্বয়ে এটি মোকাবিলা করতে হবে। বর্তমানে স্বাস্থ্যখাতে চরম উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কিছুদিন আগেই ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আটটি বিভাগে কিডনি হাসপাতাল করা হবে। প্রতিটি বিভাগে ক্যানসার হাসপাতালের অনুমতিও পাস হয়ে গেছে। অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, হার্টের জন্য ট্রান্স ফ্যাট অনেকাংশেই ঝুঁকি বাড়ায়। এ বিষয় নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি ২০২৩ সালের মধ্যেই ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ ২ শতাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। আর খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে দেশের ৫০ শতাংশ অসুখ কমে আসবে। তাই এ বিষয়ে আলাদা আইন করার প্রয়োজন আছে বলেও আমি মনে করি। অন্য বক্তারা বলেন, বিএসটিআই খাবারের মান নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রেখেছে। প্রয়োজনে আরও কিছু নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে বনস্পতি ঘি, ডাল্ডা, ভাজা তেল বা একই তেলে বারবার যেসব খাবারগুলো তৈরি করা হয়, সেগুলো আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। হৃদরোগ একটি জটিল ব্যাধি। সব বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। তাই আক্রান্ত হওয়ার আগেই এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হয়। হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই। পাশপাশি থাকতে হবে শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাত্রা।
×