ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু বিপিএল

প্রকাশিত: ০৮:২৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

বঙ্গবন্ধু বিপিএল

বর্ণচ্ছটায় উজ্জ্বল বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন রবিবারে ঘটলেও মাঠের খেলা মাঠে গড়াচ্ছে আজ থেকে। এবার অংশ নিচ্ছে সাতটি দল। যথারীতি এবারও বিপিএল-এ স্থানীয়দের দাপট থাকবে। জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলো ছড়াবেন নবীনরা, এমনটাই প্রত্যাশা। অনেক ‘অচেনা’ খেলোয়াড় চলে আসবেন পাদপ্রদীপের আলোয়। এবার বিপিএলের আয়োজন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে। উদ্বোধনীতে তাই স্বনামখ্যাত সোনু নিগম গাইলেন সেই বিখ্যাত গানটি- ‘শোনো একটি মুজিবুরের থেকে লক্ষ মুজিবুরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি।’ ধন ধান্য পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরাÑ গানটির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। স্টেডিয়ামের পুরো গ্যালারি থেকে একই সুর। উপস্থিত দর্শকদের অধিকাংশের কণ্ঠস্বর মিলে গানটি হয়ে উঠল সমবেত সঙ্গীত। দুটো বাংলা গান শেষ করে সোনু দর্শকদের জানালেন, ‘এ গান আপনাদের জন্য আমার ভালবাসার প্রকাশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য শ্রদ্ধা।’ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে অংশ নিচ্ছে মোট সাতটি দল। দলগুলো যথাক্রমে যমুনা ব্যাংক ঢাকা প্লাটুন, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, রাজশাহী রয়্যালস, সিলেট থান্ডার, প্রিমিয়ার ব্যাংক খুলনা টাইগার্স, রংপুর রেঞ্জার্স ও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। ১৭ জানুয়ারি ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হবে টি-টোয়েন্টির উৎসব। দেশের সাতটি জেলার নামের সঙ্গে কৌতূহলোদ্দীপক অভিধা বা বিশেষণ এবং অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নাম জুড়ে দিয়ে তৈরি এ নামগুলোই জানিয়ে দিচ্ছে এ প্রতিযোগিতার স্বাতন্ত্র্য। এটি বিপিএলের অষ্টম আসর। সাতটি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক দলের সমন্বয়ে ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো বিপিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। পরের আসরেও শিরোপা ঘরে তোলে তারা। বর্তমান বিশ্বের ক্রিকেট পরাশক্তি ভারতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে আইপিএল বা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। গোটা বিশ্বের শক্তিমান দেশগুলোর ক্রিকেট তারকাদের অংশগ্রহণে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জমজমাট ক্রিকেট আসর আইপিএলের সাফল্য বিপুল। ওই আসরে বাংলাদেশের একাধিক ক্রিকেটার অংশ নিয়ে দেশের গৌরব বাড়িয়েছেন। সাকিব ও মুস্তাফিজ খেলেছেন বিশ্বের বাঘা বাঘা সব খেলোয়াড়ের সঙ্গে। এর ফলে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে মূল্যবান সংগ্রহের সমান্তরালে আত্মবিশ্বাস ও উদ্যম বেড়েছে বহুলাংশে। এটি খেলোয়াড়ি সত্তার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। বিপিএল চালু হওয়ায় বিদেশী খেলোয়াড়দের সঙ্গে একই টিমে খেলার সুযোগ আরও বেড়েছে। ফলে সার্বিকভাবে আমাদের ক্রিকেটারদের উন্নতি ও দেশের ক্রিকেটের মানের উৎকর্ষ ঘটেছে। এভাবে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যত বেশি আন্তর্জাতিক স্বাদ ও রঙের সংযুক্তি ঘটবে, ততই এগিয়ে যাবে খেলাধুলা। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ক্রিকেটারদের স্বল্প সময় ও সুযোগ কাজে লাগিয়ে বড় কিছু করার এক দারুণ লড়াই। এতে দায়িত্বশীলতা, পেশাদারিত্ব এবং টিমওয়ার্কের চূড়ান্ত রূপ প্রত্যক্ষ করা যায়। আর সে কারণেই আইপিএল এবং বিপিএল ক্রিকেট দর্শকদের কাছে এত বেশি আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয়। বিদেশী খেলোয়াড়দের সহযোগী (টিমমেট) এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে যত বেশি টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া যাবে ততই দেশীয় ক্রীড়ার উৎকর্ষ ঘটবে। বিশেষ করে দেশের মাটিতে এ ধরনের আয়োজনে খেলোয়াড়রা আরও বেশি উদ্বুদ্ধ ও সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ পান। জুয়াড়িদের চোখ থাকে ক্রিকেটের যে কোন বড় আসরে। তাই সচেতন থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। বঙ্গবন্ধু বিপিএল দেশের ক্রিকেট অগ্রযাত্রায় মাইলফলক হোক- এটিই প্রত্যাশা।
×