ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের গল্প

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের গল্প

নিজের সাফল্যের পেছনের গল্পগুলো কী? সাফল্যের পেছনের গল্পের নাম ব্যর্থতা। ১৫ বছর চাকরি করেও যা শিখতে পারিনি সেটা শিখেছি মাত্র একবার ব্যর্থ হয়ে। ২০১৫ সালে আমি ১৫ বছরের চাকরি জীবনের ইতি ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেই। আমি চেয়েছিলাম নিজে কিছু করব এবং স্বাধীনভাবে বাঁচব। ব্যবসা বাণিজ্যের মতো স্বাধীনতা অন্তত প্রথাগত চাকরিতে নেই। উদ্যোক্তা হিসেবে প্রথমবার বাজেভাবে ব্যর্থ হই। কিন্তু এই ঘটনা আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়ে যায়। আর এই শিক্ষা কাজে লাগিয়েই দ্বিতীয়বার আমি দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াই। সেখান থেকে একটা সুপ্ত ইচ্ছা জেগে ওঠে। আমার মতো অনেকেই আছেন যারা নিজেরা কিছু করতে চান, একটা ধাক্কা দরকার শুধু। সেই তাগিদ থেকেই আসলে এৎড়ডিরঃয-এর যাত্রা। ঊহঃৎবঢ়ৎবহবঁৎংযরঢ়রং ধষষ ধনড়ঁঃ ভৎববফড়সব, ভৎববফড়সব ড়ভ ঃরসব ্ সড়হবু আমার সেই বন্ধু যাত্রা থেকে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার জন্য আমি একটি বই লিখব ভেবেছিলাম। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যারা নির্ঘুম রাত কাটান তাদের জন্য একটি কিছু দিন আগে একটি বই প্রকাশ করেছি। আমার এই উদ্যোক্তা হওয়ার পথ ছিল অনেক কঠিন। আমি পদে পদে বাধা পেয়েছি, লোকসান গুনেছি । ঋরৎব ণড়ঁৎ ইড়ংং বইটিতে জীবনের শিক্ষাগুলোর কথাই তুলে এনেছি। উদ্যোক্তা ও কর্পোরেটে দক্ষ মানুষ তৈরির জন্য উদ্যোগী হলেন কেন? দেখুন উদ্যোক্তা বলেন আর দক্ষ কর্মশক্তি বলেন, এই দুই ক্ষেত্রেই আমি মনে করি আমাদের ডিশনাল শিক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু দারুণভাবে ব্যর্থ। আপনি নিশ্চয়ই জানেন বর্তমানে বাংদেশে ৪৬% বেকারই উচ্চ শিক্ষিত। আমরা কি উচ্চ শিক্ষার নামে বেকার তৈরি করছি যারা আসলে প্রকৃতপক্ষে দক্ষ নয়? নাকি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দরকার? এই দুটোই আসলে সত্যি। কিভাবে এই ঘাটতি পূরণ করা যায় আমি অনেক ভেবেছি। উচ্চ শিক্ষা এবং দক্ষতার আসলে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হওয়া উচিত। এই কনসেপ্ট থেকেই আসলে ‘ক্যারিয়ারস হাব বাংলাদেশ’-এর যাত্রা। দেখুন, পৃথিবী প্রতি সেকেন্ডে এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি। ১০ বছর আগেও বিলবোর্ড আর কাগজে বিজ্ঞাপন ছিল মার্কেটিংয়ের অন্যতম মাধ্যম। সেই সময় কিন্তু শেষের দিকে এবং এখন পুরো মার্কেটিং সেক্টরটাই ডিজিটাল। আমরা অসলেই পিছিয়ে আছি। এগিয়ে আসার সময় কিন্তু আর বেশি নেই। ক্যারিয়ার্স হাব বাংলাদেশ কি কি বিষয় নিয়ে কাজ করছে? ক্যারিয়ার্স হাব বাংলাদেশ আসলে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির কারখানা বলা যায়। বাংলাদেশ এর ১৮ কোটির এই বিশাল জনসংখ্যার বড় অংশই কিন্তু কর্মক্ষম। আমরা আসলে একই সঙ্গে সৌভাগ্যবান এবং দুর্ভাগা। কারন এই বিশাল কর্মক্ষম জনসংখ্যাকে মানব সম্পদকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না। এই দিক দিয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। আমি সব সময় ভেবেছি কিভাবে এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে শক্তিকে রূপান্তরিত করা যায়। ক্যারিয়ারস হাব অবশ্য একদিক দিয়ে আলাদা। আমরা শুধু দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করেই থামতে চাই না, আমরা চাই এই দক্ষ মানব সম্পদ কারও অধীনে না থেকে ভবিষ্যতে নিজেই উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হোক এবং অন্যদেরও দক্ষ করে তুলুক। সেই বিশাল কর্মযজ্ঞ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। যে কাজগুলো একজন তরুণের নিজের মধ্যে রাখা উচিত? প্রথমত দক্ষতা অবশ্যই থাকতে হবে। দক্ষতা ছাড়া আসলে টিকে থাকা অসম্ভব। ইচ্ছা শক্তি এবং স্বপ্ন থাকতেই হবে। দক্ষতা কফিনবন্দী করে না রেখে তাকে কাজে লাগানোর ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে। এবং বড় হওয়ার স্বপ্ন থাকতে হবে। বিশ্বের বড় বড় লাইফ কোচ এবং বিজনেস মেন্টর এর সঙ্গে কাজ করেছি। সবার মতামত প্রায় একইÑ শেখার আসলে শেষ নেই, শেখার কোন বয়সও নেই! আপনার বাংলাদেশের তরুনদের নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা- এৎড়ডিরঃয ওই বছর এর মাধ্যমে আমি ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত ১০০০ জন সফল উদ্যোক্তা তৈরি করতে চাই যারা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে এবং হাজারো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করবে। আমরা চাই ২০২১ সাল নাগাদ সেই সংখ্যা ছয় অঙ্কে পৌঁছে যাক। এ লক্ষ্যে এৎড়ি ডরঃয ওই বছর প্রোগ্রামে এর মাধ্যমে আমি ভবিষ্যত উদ্যোগক্তাদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশে কাজ করছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক!
×