ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সহিংসতা ও উগ্রবাদ একত্রে মোকাবেলা করতে হবে

প্রকাশিত: ১১:১৯, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

সহিংসতা ও উগ্রবাদ একত্রে মোকাবেলা করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উগ্রবাদ দমনে সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে। কারণ, সারাবিশ্বের সব সফলতার জন্য উগ্রবাদ হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাই উগ্রবাদ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। তবে উগ্রবাদী হয়ে কেউ জন্ম নেয় না। নানা অনিষ্পত্তিমূলক বিরোধ পরিস্থিতি কাউকে কাউকে বিপথগামী করে। বিপথগামীদের অনেকেই উগ্রবাদে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে। সোমবার ঢাকার কুড়িলে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে দুই দিনব্যাপী ‘উগ্রবাদবিরোধী জাতীয় সম্মেলন-২০১৯’ এর উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি), ইউএস-এইড, ইউএন। সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সবার আগে সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধের ওপর গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় সম্মেলনের প্রধান অতিথি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, উগ্রবাদবিরোধী কার্যক্রমকে জোরদার করতে হবে। যাতে ওই সব কার্যক্রম সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে। সন্ত্রাসীবাদবিরোধী জাতীয় সম্মেলনসহ অন্যান্য কার্যক্রমও জোরদার করতে হবে। স্পীকার বলেন, সহিংসতা ও উগ্রবাদ বৈশ্বিক সমস্যা। কোন দেশ এককভাবে জঙ্গীবাদ মোকাবেলা করতে পারবে না। বর্তমান বাস্তবতায় সারাবিশ্ব জঙ্গীবাদ-উগ্রবাদ, সহিংসতার সম্মুখীন। উগ্রবাদ-সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পেতে নিজের দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্য দেশে অর্থাৎ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ফোরামগুলোতে একত্রে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে পুরো বিশ্ব ঐক্যমত। জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদে জড়িতরা দেশের শত্রু, সভ্যতার শত্র, মানবতার শত্রু। বিশ্বে জঙ্গীবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ কোনভাবেই বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সেটি স্পষ্ট। এজন্য ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন ধারণা মোতাবেক কার্যক্রম চালাতে হবে। ২০০৬ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক একটি গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করা হয়। সারাবিশ্বের নেতারা গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিতে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ। কীভাবে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটছে তা আগে চিহ্নিত করার কথা উল্লেখ করে স্পীকার বলেন, সন্ত্রাসীরা কীভাবে, কী কারণে সন্ত্রাসী হয়ে উঠছে তা জানতে হবে। কারণ, কোন মানুষ সন্ত্রাসী বা জঙ্গী বা উগ্রবাদী হয়ে জন্ম নেয় না। কি কারণে তারা এই পথ বেছে নেয়, তা জানতে হবে। সেটি চিহ্নিত করতে হবে। এটি খুবই জরুরী। সেদিকটি লক্ষ্য রেখেই গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘসূত্রতার সঙ্গে যদি কোন বিরোধ চলমান থাকে, তাহলে এ ধরনের উগ্রবাদের জন্ম হতে পারে। যেহেতু মানুষ উগ্রবাদী, জঙ্গী হয়ে জন্মায় না, সেজন্য জঙ্গীকে কোন ধর্মের বা কোন গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। কারণ সন্ত্রাসী, জঙ্গীর কোন দেশ নেই, কোন ধর্ম নেই। স্পীকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতাকে মোকাবেলা করতে হলে দারিদ্র্যতাকে দূর করতে হবে। সেই সঙ্গে দূর করতে হবে সামাজিক বৈষম্য। তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতার ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। তাদের মধ্যে এমন একটি ধারণা তৈরি করতে হবে, যাতে করে তাদের মধ্যে কোন ধরনের হতাশা ও নৈতিকতার অবক্ষয় না ঘটে। আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সে ধরনের কার্যক্রমই নিয়েছেন।
×