ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নান্দাইলে কমে এসেছে পলিথিনের ব্যবহার

প্রকাশিত: ০১:৪০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 নান্দাইলে কমে এসেছে পলিথিনের ব্যবহার

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ ॥ দুপুর ১টা। কামরুল ইসলামের দোকানে এক ক্রেতা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করেছেন। বিক্রেতা (কামরুল) কাগজের ঠোঙ্গায় জিনিসপত্র দেওয়াতে কিছুটা রাগান্নিত ক্রেতা। এমন সময় বিক্রেতা ক্রেতার উদ্যোশে বলেন, ‘পুরা বাজারটাই ফকফকা, পলিথিনের কোন ব্যবহার নাই’। আজ শনিবার নান্দাইল চৌরাস্তা বাজারের কামরুল স্টোরের ঘটনা এটি। শুধু কামরুলের দোকান নয়, এই চিত্র এখন উপজেলার সবত্র। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় হাট-বাজারগুলোতে কমে গেছে পলিথিন দিয়ে পণ্য বিক্রি। মাস খানেক আগেও উপজেলার সর্বত্র বিক্রি ও ব্যবহার হতো নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন। কিন্তু এখন এর ব্যবহার ৮০ শতাংশ কমে এসেছে। হঠাৎ বাজারে পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা অস্বস্তি দেখা দিলেও পরিবেশ দূষণ ও জলাবন্ধতা সৃষ্টি সহ নানা সমস্যার কথা ভেবে সচেতন নাগরিকরা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদই জানিয়েছেন। জানা গেছে, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এই বিভাগে যোগদানের পরপরই পলিথিন মুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে নান্দাইলে নিসিদ্ধ পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধের জন্য বিভিন্ন হাট-বাজারে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এরপর থেকেই পলিথিন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। এজন্য ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। করা হয় মামলা সহ আর্থিক জরিমানা। এসব কারণে কমতে শুরু করে পলিথিনের বিক্রয় ও ব্যবহার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সামগ্রী বিক্রির সময় এখন পলিথিনের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে কাগজের ঠোঙ্গা, টিস্যু বেগ ও জালের বেগ। ঠোঙ্গা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, গত এক সপ্তাহে তিনি খুচরা বিক্রেতাদের নিকট ১৫ হাজার টাকার ঠোঙ্গা বিক্রি করেছেন। আগে তেমন একটা বিক্রি না হলেও এখন বিক্রি বেশ বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের নিষেদাজ্ঞা মেনে পলিথিন বিক্রি বা ব্যবহার করছেননা। তবে পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও বাজারে তার বিকল্প ব্যাগের সরবরাহ কম থাকায় পণ্য বিক্রিতে কষ্ট করতে হচ্ছে। আগের দিন (শুক্রবার) তারেরঘাট বাজারে দিয়ে দেখা গেছে, বাজার করতে আসা লোকজন এখন বাড়ি থেকে কাপড়ের বা চটের বেগ নিয়ে আসছেন। অন্যতায় পণ্য ক্রয় করে বিপত্তিতে পরতে হয়। নান্দাইল নতুন বাজারের ব্যবসায়ী খাদেমুল হক বলেন, এখন তিনি পলিথিনের পরিবর্তে টিস্যু বেগ ব্যবহার করছেন। পলিথিনের ব্যবহার কমে যাওয়ায় বাজারের পরিবেশটাই পরিচ্ছন্ন লাগছে। এই বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহিম সুজন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে পলিথিন ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে ৮০ ভাগ পলিথিন ব্যবহার কমে এসেছে।
×