ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নান্দাইলে টাকা দিয়েও বিদ্যুত পাচ্ছে না ৬২ পরিবার

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ৯ নভেম্বর ২০১৯

 নান্দাইলে টাকা দিয়েও  বিদ্যুত পাচ্ছে না  ৬২ পরিবার

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ, ৮ নবেম্বর ॥ উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের পূর্ব কচুরী গ্রামে টাকা দিয়েও পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিন বছর আগে ৩১শ’ টাকা দেয়ার পরও সংযোগ না পেয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা এলাকায় মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ করেছে গ্রাহকরা। জানা গেছে, পূর্ব কচুরী গ্রামে ২০১৭ সালে বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার উদ্যোগ নেয় নান্দাইল পল্লী বিদ্যুত সমিতি। তখন ওই গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক লালন বিদ্যুত দেবার কথা বলে ১১৮ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ৩ হাজার ১শ’ টাকা করে আদায় করেন। প্রায় তিন বছর কেটে যাওয়ার পর সম্প্রতি বিদ্যুতের লাইন টানানো হয়েছে। এখন চলছে সার্ভিস তার (খুঁটি থেকে মিটার পর্যন্ত তার) লাগানোর কাজ। এই অবস্থায় লালন গ্রাহকদের কাছে আরও ২ হাজার ৫শ’ টাকা করে দাবি করে। লালনের কথায় ৫৬ জন টাকা দিতে রাজি হওয়ায় তাদের ঘর পর্যন্ত সার্ভিস তার লাগানো হয়। কিন্তু বিপত্তি ঘটে ৬২ গ্রাহকের বেলায়। তারা দ্বিতীয় দফার ২৫০০ টাকা দিতে অস্বীকার করায় সরকারের বিনামূল্যে বিদ্যুত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিলে ৩১ অক্টোবর এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। পূর্ব কচুরী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, লালনসহ যারা ৩১শ’ টাকা দেয়ার পর আরও ২৫শ’ টাকা দিয়েছেন তাদের বাড়িতে সার্ভিস তার লাগানো হয়েছে। আর ৩১শ’ টাকা দেয়ার পরও বাড়িতে টাকা না দেয়ার কারণে ৬০ গ্রাহকের বাড়িতে সার্ভিস তার লাগানো হয়নি। এ সময় ফারুক ভূইয়া, মহসিন মিয়া, সাইফুল ইসলাম, নিজাম উদ্দিনসহ ২৫-৩০ জন গ্রাহক জানান, তিনবছর পূর্বে প্রতিবেশী মোজাম্মেল হক লালন বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার কথা বলে ৩ হাজার ১শ’ টাকা করে নিয়েছে। লালন এখন আবারও ২৫শ’ টাকা দাবি করছেন। নারী গ্রাহক হোসনা বেগম বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। দুইটা মিটারের জন্য ৬ হাজার ২ টাকা দিছি। অহন আবার ৫ হাজার টেহা চাইতাছে, দেই না দেইখ্যা মিটার দিত না কইতাছে’। সেখানে উপস্থিত লোকজন অভিযোগ করে বলেন, নান্দাইল পল্লী বিদ্যুতের অফিসে গেলে আমাদের পাত্তা দেয় না। এমনকি ওয়ারিং পরিদর্শনের রিপোর্টসহ গ্রাহক ফাইল পর্যন্ত জমা নিচ্ছে না। তারাও লালনের সঙ্গে মীমাংসা করে আসার কথা বলছে। এই বিষয়ে জানার জন্য লালনের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তখন লালনের বড় ভাই হারুন-অর-রশিদ বলেন, এক শালিসে খরচ বাবদ ৩ হাজার ১শ’ টাকা করে আদায় করার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নান্দাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও জানেন বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু অভিযোগকারীরা একটি টাকা না দিয়েই বিদ্যুত সংযোগ নিতে চাইছে। নান্দাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ জুয়েল বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাছাড়া বিদ্যুত পেতে কোন টাকা লাগে না। সরকারই ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিচ্ছে। একটি চক্র টাকার কথা রঠিয়ে সরকারের দুর্নাম করতে চাইছে। কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির নান্দাইল জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক উত্তম কুমার সাহা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, তবে টাকার লেনদেন যদি হয়ে থাকে সেটা তাদের বিষয়। তিনি আরও বলেন, কোন এলাকায় বিদ্যুত নিতে হলে কাউকে না কাউকে একটু বেশি দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে হয়। এ কারণে সেই ব্যক্তিটি বেশি টাকা নিলে নিতেও পারে। এটা আপনারাও বুঝেন। তবে ঠিকাদারের কাছ থেকে জেনেছি সার্ভিস তার না থাকায় অনেক সদস্য বাদ পড়েছেন। সবাইকেই বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে।
×