ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দরিদ্র্যরা ৭ মাস পাবে ১০ টাকা কেজির চাল

প্রকাশিত: ০৫:১২, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

দরিদ্র্যরা ৭ মাস পাবে ১০ টাকা কেজির চাল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দরিদ্র্যদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখন থেকে ১০ টাকা মূল্যের চাল পাঁচ মাসের পরিবর্তে সাত মাস দেওয়া হবে। একই সঙ্গে দেশের গ্রাম্য পুলিশকেও সারা বছর ১০ টাকায় চাল খাওয়ানো হবে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ডা. আবদুর রাজ্জাক। সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রম সম্পর্কে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আসলে ধানের দাম নিয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। ধানের দাম কত হবে, কীভাবে কৃষকদের আরও প্রণোদনা দিতে পারি এ বিষয়ে একটি সভা হবে আগামীকাল (৩১ অক্টোবর)। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন কীভাবে চাষিদের প্রণোদনা দেওয়া যায়। আমরা চাল কিনলাম বেশি করে কিন্তু সেটাকে রিলিজও করতে হবে। কারণ চালতো গুদামে বেশি দিন রাখা যাবে না। গুদামতো খালি করতে হবে। এজন্য আমরা মোটামুটি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাল সভায় এটা চূড়ান্ত হবে। ১০ টাকা কেজিতে আমরা যে চাল দেই সেটার পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে। যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে দেওয়া যায়। এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই ১০ টাকা কেজির চাল দু’মাস বেশি দেওয়া হবে। এখন পাঁচ মাস দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে গ্রামের যে চৌকিদার বা গ্রাম্য পুলিশ আছে তাদের প্রতি মাসেই ১০ টাকা কেজি চাল সহযোগিতা দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে বেশিরভাগ চাল কেনা হতো। এখন সেটা না কিনে আমরা যদি ১২ লাখ টন চাল কিনি, তাহলে বেশিরভাগ ধান কিনতে পারি। সেটা চূড়ান্ত হবে কাল। আমরা চালের পাশাপাশি ৬/৭ লাখ টন ধান কিনবো। একই সঙ্গে আরও বেশি ধান যাতে চাষিদের কাছ থেকে কিনতে পারি, সেজন্য মিলারদের সম্পৃক্ত করে মিলারদের গুদামেই আমরা ধান রাখবো। এক্ষেত্রে ধান ভাঙানো ও রাখা বাবদ একটা খরচ দিয়ে দেবো। কারণ আমাদের গুদামের স্বল্পতা রয়েছে। ফলে, ইচ্ছা করলেও আমরা কিনতে পারি না। কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার জন্য আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে। পাশাপাশি ডিএপি সারের দাম কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে। এগুলো সব প্রক্রিয়াধীন। আমরা কাজ করছি আপনারা আশা করি শিগগিরই এর সুফল পাবেন। কৃষকদের চালের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার জন্য স্থায়ী কোনো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে চিন্তা করছি। যেমন পেঁয়াজ যখন ওঠানোর সময় হয় তখন খুব কম দাম থাকে। ফলে চাষিরা বিপাকে পড়ে তারা লাভবান হয় না। চাষিদের লাভবান করার জন্য আমরা পেঁয়াজ ওঠানোর সময় চার মাস আমদানি বন্ধের একটা উদ্যোগ ইতোমধ্যে নিয়েছি। চাল রপ্তানির কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় চাল রপ্তানি করতে পারছি না। আমরা ফিলিপাইনের সঙ্গে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করেছিলাম। সে অনুযায়ী তারা আমাদের কাছ থেকে একলাখ টন চাল নেওয়ার কথা থাকলেও তাদের দেশে উৎপাদন বেশি হয়েছে। ফলে সেদেশের কৃষকরা চাল আমদানিতে বন্ধের দাবি করায় তারা চাল কম নিয়েছে, এখন প্রায় বন্ধ। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে চাল উৎপাদন বেশি হয়েছে। গমসহ খাদ্য শস্যের দাম খুবই কম। এই বাজারে প্রতিযোগিতায় যাওয়া খুব কঠিন। যেমন, পশ্চিমা বিশ্বে চাল খায় কিন্তু সেটা বাসমতি। সে চালই বেশি রপ্তানি হয়। আমরা নতুন। আমরা চেষ্টা করছি এই বাজারে প্রবেশ করার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আজারবাইজান গিয়েছিলেন সেখানে সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে৷ তারা বাংলাদেশ থেকে চাল নেবে। এছাড়া আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে কথা হচ্ছে। ভুটান কিছু ধান নেবে বলে জানিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, যেখানে যেখানে করার দরকার। সারা পৃথিবীতেই এই মুহূর্তে খাদ্যশস্য সারপ্লাস রয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে সব ফসলের দাম কমে গেছে। বর্তমানে চাল আমদানি বন্ধই। যে ট্যাক্স আছে তা দিয়ে চাল আমদানি করে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে না বলে জানান তিনি।
×