ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিভিল এভিয়েশনে গতি আনতে পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

 সিভিল এভিয়েশনে গতি আনতে পদক্ষেপ

আজাদ সুলায়মান ॥ সিভিল এভিয়েশনের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও বিভিন্ন প্রকল্পে গতিশীলতা আনতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে টানা ছয় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সিভিল এভিয়েশনের নেয়া বিভিন্ন প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। এ সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ইস্যু নিয়ে আলোচনার পর দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি ও সচিব মহিবুল হকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করা হয় বিভিন্ন ইস্যু। সিলেট থেকে সরাসরি বিমানের লন্ডন ফ্লাইট চালু, লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক ও টরেন্টোতে কানেক্টিং ফ্লাইট চালু, শাহজালাল এয়ারপোর্টের এপ্রোন নির্মাণ, হ্যাঙ্গার রিলোকেশন, চট্টগ্রামের রানওয়ে নির্মাণ প্রকল্প, কক্সবাজার টার্মিনাল ভবনের ধীরগতি, নির্মাণাধীন সদর দফতর দ্রুত উদ্বোধনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করা হয়। এ সময় সচিব মহিবুল হক জানতে চান কত দ্রুত সিলেট থেকে সরাসরি বিমানের লন্ডন ফ্লাইট চালু করা সম্ভব। বৈঠকে উপস্থিত বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাবিব্বর হোসেন তখন জানান, সিলেট থেকে সরাসরি লন্ডন ফ্লাইট চালু করার জন্য ইতোমধ্যে সেখানে বিএফসিসির একটা শাখা চালু, কার্গো সুবিধা বাড়ানো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার মতো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে এগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলেই সিলেট থেকে লন্ডন ফ্লাইট চালু করার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। বৈঠকে উপস্থিত সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান ও মেম্বার (অপস) এয়ার কমোডর খালিদ হোসেন ও প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এপ্রোন নির্মাণসহ অন্য প্রকল্পগুলো সম্পর্কে ব্রিফ দেন। এ সময় কিছু কাজের ধীরগতির কারণ জানতে চাওয়া হয়। বিশেষ করে কক্সবাজার টার্মিনাল ভবন আরও গতিশীল করার তাগিদ দেয়া হয়। একই সঙ্গে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংস্কার ও আধুনিকায়নের একটি প্রকল্প খুব শীঘ্রই মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান মহিবুল হক। সিভিল এভিয়েশনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ বৈঠকে সবার প্রতি বেশ কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী ও সচিব। তারা পরোক্ষভাবে কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার বিষয়েও সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেন এবং ভবিষ্যতে একই ভুলত্রুটির পুনরাবৃত্তি ঘটলে ব্যবস্থা গ্রহণের মতো সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেন। বিকেল চারটা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দীর্ঘ এ ম্যারাথন বৈঠকে সিভিল এভিয়েশনের সার্বিক কার্যক্রমের কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স নিয়েও আলোচনা করা হয়। বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে অন্য কর্মকর্তারা উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা সিভিল এভিয়েশন সদর দফতর ভবন পরিদর্শনে যান। এ সময় তারা ঘুরে ঘুরে প্রত্যক্ষ করেন। এবং দ্রুত ভবনটি উদ্বোধনযোগ্য করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এ সময় সিভিল এভিয়েশনের নেয়া সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের রানওয়ে নির্মাণ ও কক্সবাজার বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবন কত দ্রুত সময়ে সমাপ্ত করা যাবে সেটা জানতে চাওয়া হয়। সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয় দরপত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্প শেষ করার জন্য সবাইকে কঠোর নজরদারি ও জবাবদিহির আওতায় রাখা হবে। এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের একজন পরিচালক জানান, অতীতের মতো আর গড্ডালিকা প্রবাহে গা হেলিয়ে দায়িত্ব এড়ানো যাওয়ার দিন শেষ। যেভাবে মন্ত্রণালয়ের নজরদারিতে বিমানকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে একইভাবে সিভিল এভিয়েশনেও আনা হবে ব্যাপক পরিবর্তন ও সংস্কার। সিলেট থেকে লন্ডন হয়ে নিউইয়র্ক ও টরন্টো ফ্লাইট চালুর সম্ভাবনা ও অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান গত রাতে দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক কানাডা সফরের সময় লন্ডন থেকে বিমানের টরন্টো ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে কানাডার পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস মিলেছে। নিউইয়র্ক ফ্লাইট নিয়েও কাজ চলছে। এজন্য সামনে একটা অডিট হবে। সেটার ফলাফল ইতিবাচক ও সন্তোষজনক হলে নিউইয়র্ক ফ্লাইটের জটিলতা কেটে যাবে। মোট কথা এ দুটো বিষয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সবাইকে কাজ করতে হচ্ছে। অতীতে কি হয়েছে সেটার দিকে না তাকিয়ে এখন দেশের স্বার্থে আমাদের সবাইকে এক হয়ে এ সব প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে হবে।
×