ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেন্সরে যাচ্ছে ‘হরিবোল’!

প্রকাশিত: ১৩:০১, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

সেন্সরে যাচ্ছে ‘হরিবোল’!

খুব শীঘ্রই সেন্সরে যাচ্ছে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘হরিবোল’! আনিসুজ্জামান নিবেদিত ও বলেশ্বর ফিল্মস প্রযোজিত ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা রেজা ঘটক। ছবির কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছেন নির্মাতা রেজা ঘটক নিজেই। বাংলাদেশের একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের সমাজ দ্বারা নীপিড়নের গল্পে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘হরিবোল’। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নির্যাতিত এক নারীর সত্য ঘটনা অবলম্বনে একজন তরুণ নির্মাতা একটি সিনেমা নির্মাণ করতে বলেশ্বর জনপদের একটি গ্রামে যান। সেই গ্রামেই সন্ধান পান এই নিপীড়িত সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের। এক গল্পের ভেতরে অন্য এক নতুন গল্প। মুক্তিযুদ্ধ এবং সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারকে ঘিরে এ রকম এক সমান্তরাল আখ্যানকে উপজীব্য করেই নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘হরিবোল’। পাশাপাশি প্রান্তিক গ্রামের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রে নানাভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‘হরিবোল চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে নির্মাতা রেজা ঘটক বলেন, ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে প্রায় তিন বছর লাগল। ছবিতে আমি দুটি গল্পকে সমান্তরালভাবে মার্চ করিয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্পের সঙ্গে স্বাধীনতার পঁয়ত্রিশ বছর পর একটি সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের উপর নেমে আসা প্রচলিত সমাজের নিপীড়নের চিত্র এতে ধরা হয়েছে। বড় ক্যানভাসে ‘হরিবোল’ একটি জনপদকে রিপ্রেজেন্ট করে। বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের উপর ‘হরিবোল’ একটি বিশেষায়িত চলচ্চিত্র। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি যেমন একটি নদী বিষয়ক চলচ্চিত্র, তেমনি এটি একটি পরিবেশ বিষয়ক চলচ্চিত্র। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রে শেষপর্যন্ত চিরন্তন প্রেমেরই জয়গান করা হয়েছে। দুটি গল্পের একটি গল্প আমি এ্যাবস্ট্রাক্ট ফর্মে বলেছি। আর অন্য গল্পটি নন-লিনিয়ার ফর্মে বলেছি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে একই সিনেমায় এভাবে দুটি সমান্তরাল গল্প দেখানো যদিও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমি এই চ্যালেঞ্জটি ইনটেনশনালি নিতে চেয়েছি। কারণ আমার সিনেমায় গল্প বলার ঢংটি অন্যদের থেকে অবশ্যই আলাদা। একবিংশ শতকের দর্শক অবশ্যই নতুনত্বকে স্বাগত জানাবেন বলেই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’ ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রে মিউজিক কম্পোজ করেছেন অংশুমান। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনটি গান লিখেছেন ও সুর করেছেন অংশুমান। যার মধ্যে একটি গান গেয়েছেন বাউল সফি ম-ল, একটি গান গেয়েছেন অংশুমান নিজেই এবং অন্য গানটি গেয়েছেন অংশুমানের সঙ্গে একঝাঁক তরুণ শিল্পী। একটি গান লালন সাঁইজির। লালন সাঁইজির গানটি গেয়েছেন নলীনি ম-ল। আর একটি গান ভবা পাগলার। ভবা পাগলার গানটির সঙ্গীত আয়োজন করেছেন অংশুমান এবং গেয়েছেন সাত্যকি ব্যানার্জি। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রের সাউন্ড ডিজাইন করেছেন অরিজিৎ মিত্র। সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজয় দাস। সাউন্ড ইফেক্ট করেছেন সুভারুন সেনগুপ্ত ও সোহাম সান্যাল। ফলি আর্টিস্ট ছিলেন যুগল বাগ। ফলি রেকর্ডিস্ট ছিলেন সৌরভ সাহা। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রের কালার করেছেন মোহাম্মদ আমির। ডিআই টেকনিসিয়ান ছিলেন কৃষ্ণপদ সর্দার। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রের সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন মোস্তাফিজ ইসলাম, সেলিম হায়দার, জাহিদ হাসান, প্রণব দাস ও রেজা ঘটক। স্থিরচিত্র ধারণ করেছেন দেবাশিষ গুপ্ত, চিন্ময় চক্রবর্তী ও জাহিদ রবি। আর ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রটি সম্পাদনা করেছেন প্রণব দাস। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রের টাইটেল ডিজাইন করেছেন শিল্পী সব্যসাচী হাজরা। গ্রাফিক্স করেছেন স্নেহাশিস ভৌমিক। সাব্টাইটেল করেছেন সম্বৃদ্ধি পাল ও রেজা ঘটক। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধের ওপর সিনেমা বানাতে আসা তরুণ নির্মাতা এসকে চৌধুরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজী ফয়সল। সংখ্যালঘু প্রান্তিক পরিবারের কর্তা নিতাইর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইকতারুল ইসলাম। আর নিতাইর বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৃপ্তি সরেন। এছাড়া গ্রামে নিতাইর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাঙার চরিত্রে অভিনয় করেছেন এমরান হোসেন। গ্রামের হরি চেয়ারম্যানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সেলিম হায়দার। পারুর ভাই পলটুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রণব দাস। নিতাইর বন্ধু লখাইর চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিয়াকত লিকু। এসকে চৌধুরীর এসিস্ট্যান্টের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইউসুফ ববি। ঝড়ু পাগলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। পঞ্চায়েত সভার সভাপতির চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিন্ময় চক্রবর্তী। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নলিনী ম-ল, রণজিৎ ম-ল, বিধান বিশ্বাস, এমদাদুল হক হাওলাদার, মনোজ ম-ল, যতীন্দ্রনাথ নাগ, শুকুরঞ্জন মোলোঙ্গী, মুক্তি ম-ল, ইলিয়াস খান, গৌতম মিস্ত্রি, প্রেমানন্দ আকার্শন, অনাদী বালা, জাকির হোসেন হাওলাদার, স্বপন পাল, জীবন কৃষ্ণ ঘরামী, সুনীল কুমার ম-ল, আরিফুল ইসলাম শিপুল, আকাশ সিংহ, অনিক, চন্দন, উৎস, অমিত, শুভ, সৈকত, সোহাগ প্রমুখ। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রটির নির্মাণ যজ্ঞ শেষ হয়েছে। এবার সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার আনুষ্ঠানিকতা বাকি। ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে ‘বলেশ্বর ফিল্মস’ আর এটি নিবেদন করেছেন আনিসুজ্জামান। চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সঙ্গে জড়িত এক ঝাঁক চৌকশ তরুণের সমন্বয়ে গঠিত ‘টিম বলেশ্বর’-এর একটি ফিল্ম ইউনিট। নির্মাতা রেজা ঘটক আশা করছেন সেন্সরবোর্ড থেকে সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আগামী নবেম্বর/ডিসেম্বর মাসে ‘হরিবোল’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে। -আবীর দাস
×