ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

থাই পেয়ারা চাষে সফল শেরপুরের যুবক নাজমুল

প্রকাশিত: ০৮:৫২, ১২ অক্টোবর ২০১৯

 থাই পেয়ারা চাষে সফল শেরপুরের  যুবক নাজমুল

নাজমুল হক, প্রান্তিক ও কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চল শেরপুরে নিজের চেষ্টায় আত্মস্বাবলম্বী এক যুবক। নকলা উপজেলার কায়দা এলাকার ওই যুবক বিষমুক্ত উন্নতমানের থাই-৩ (বারি-৪) জাতের পেয়ারা চাষে পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা। তার দেখাদেখি পেয়ারা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে আরও অনেক যুবক। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন এই যুবক। তার ওই পেয়ারা বাগান দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। জেলার চাহিদা মিটিয়ে তার বাগানের বিষমুক্ত পেয়ারা যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। জানা যায়, নাজমুল হক শখের বসে ৩ বছর আগে নাটোর থেকে পেয়ারার চারা এনে ৬০ শতাংশ জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ২৪০টি চারা রোপণ করে। বছর ঘুরতেই বাগান থেকে ফলন পেতে শুরু করেন। সারা বছরই এ পেয়ারার ফলন পাওয়া যায়। এ বছর বাগানে অনেক পেয়ারা ধরেছে। বাজারে পেয়ারার দাম কম হলেও অধিক ফলনে লাভবান হওয়া যায়। খেতে খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল পেয়ারার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে বাজারে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এ পেয়ারা। তিন বছর আগে নাটোর থেকে এ জাতের পেয়ারার চারা এনে লাগিয়ে আজ সফল চাষি হিসেবে উপজেলায় বেকারদের মডেল হয়ে উঠছেন নাজমুল। সরেজমিনে গেলে কথা হয় পেয়ারাচাষী নাজমুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, মাটির উর্বরতা শক্তি ও আবহাওয়া অনুকূলের পাশাপাশি কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় থাই পেয়ারা চাষ করে আমি অনেক লাভবান। বাগানের প্রতিটি থাই পেয়ারার ওজন ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে। আর প্রতিটি গাছ থেকে কমপক্ষে ২৫ কেজি করে পেয়ারা পাওয়া যায়। নিয়মিত পরিচর্যা করে চাষ করলে প্রতিটি পেয়ারা গাছ থেকে ১ হাজার টাকার অধিক লাভবান হওয়া যায়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় ২০ হাজার পেয়ারা বাজারজাত করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করে জানান, পোকা দমনে বাগানে কোন ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করেন না। কীটনাশকের বদলে তিনি বাগানে স্বাস্থ্যসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তার বাগানের প্রতিটি গাছেই ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বিষমুক্ত থাই পেয়ারা চাষ হচ্ছে। বিষমুক্ত উপায়ে পেয়ারা চাষ পদ্ধতির বিষয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগও সহযোগিতা করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, পেয়ারার পুষ্টিমান যে কোন ফলের চেয়ে বেশি। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি লাভজনক। তাই থাই পেয়ারার চাষ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদেশ থেকে ফল আমদানির খরচ কমানো সম্ভব। সে লক্ষ্যেই কৃষি বিভাগ পেয়ারা চাষে প্রতিনিয়তই টেকনিক্যাল সহায়তা দিচ্ছে। তার মতে, নাজমুল হকের ওই থাই পেয়ারা বাগান অনেকের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠছে। -রফিকুল ইসলাম আধার, শেরপুর থেকে
×