ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেসিদের ছাড়াই জার্মানিকে রুখে দিল আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১১ অক্টোবর ২০১৯

মেসিদের ছাড়াই জার্মানিকে রুখে দিল আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিষেধাজ্ঞার কারণে ছিলেন না অধিনায়ক ও সেরা তারকা লিওনেল মেসি। দল থেকে বাদ পড়েছেন এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও সার্জিও এ্যাগুয়েরো। দলের সেরা তিন তারকাকে ছাড়াই ইউরোপ সফর করছে আর্জেন্টিনা। এই সফরে তরুণদের ওপরই ভরসা করছেন দলটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। সেই মিশনের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে আলবিসেলেস্তাদের। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির সঙ্গে তাদেরই মাঠে ২-২ গোলে ড্র করেছে সফরকারী আর্জেন্টিনা। বুধবার রাতে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্কে প্রথমার্ধে দুই গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা। কিন্তু বিরতির পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ ড্র করে দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। তরুণ দল নিয়ে এমন প্রত্যাবর্তনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। ম্যাচের প্রথমার্ধে সার্জি গ্যানাব্রি ও কেই হাভার্টজের গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। বিরতির পর আর্জেন্টিনার হয়ে গোল দুটি পরিশোধ করেন ফরোয়ার্ড লুকাস আলারিও ও অভিষেক হওয়া লুকাস ওকাম্পোস। গোল করে অভিষেক আলোকিত করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়াতে খেলা আর্জেন্টিনার এই তরুণ উইঙ্গার। অসুস্থতা ও ইনজুরির কারণে ১৩ জন নিয়মিত খেলোয়াড়কে বাদ দেন আর্জেন্টাইন কোচ। এদের বদলে তিনি দলভুক্ত করেন তরুণদের। আগামীর এই ফুটবলাররা কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়ে চলেছেন। মেসি নিষিদ্ধ থাকায় ফরোয়ার্ড লাইনে জুভেন্টাসের পাওলো দিবালার সঙ্গে খেলতে নামেন দারুণ ফর্মে থাকা ইন্টার মিলানের লটারো মার্টিনেজ। ম্যাচের ৬২ মিনিটে দিবালার বদলে স্কালোনি মাঠে নামান লুকাস আলারিওকে। ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড মাঠে নামার পরপরই চিত্র পাল্টে যায়। তিনি নিজে গোল করার পাশাপাশি আরেকটি গোল করান লুকাসকে দিয়ে। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জার্মানি। ওই ম্যাচের মাত্র একজন ফুটবলার এই ম্যাচে খেলেন। তিনি হলেন আর্জেন্টিনার ডিফে-ার মার্কোস রোজো। শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে ম্যাচে উপভোগ্য হয়ে ওঠে। ম্যাচের ১৫ মিনিটে গ্যানাব্রি জার্মানিকে এগিয়ে দেন। দারুণ গতিতে এ্যাঞ্জেল কোরেয়াকে কাটিয়ে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক অগাস্টিন মারচেসিনকে পরাস্ত করেন। এক সপ্তাহ আগে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে বেয়ার্ন মিউনিখের হয়ে একাই চার গোল করেছিলেন এই জার্মান মিডফিল্ডার। ক্লাবের পারফর্মেন্স জাতীয় দলেও অব্যাহত রেখেছেন আগামীর এই তারকা। প্রথম গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই ২২ মিনিটে আরেক গোল হজম করে সফরকারীরা। এবার গ্যানাব্রির সহায়তায় গোল করেন হাভার্টজ। দুই গোলে পিছিয়ে থেকে জুলিয়ান ব্রান্ডেট ও গ্যানাব্রিকে ফাউলের অপরাধে ওটামেন্ডি ও রডরিগো ডি পলের হলুদ কার্ড আর্জেন্টিনাকে আরও চাপে ফেলে। বিরতির পর কয়েকজন খেলোয়াড় বদল করে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। বিশেষ করে দিবালার স্থানে আলারিওকে নামিয়ে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি সাফল্যের দেখা পান। এই বদলের পর ৬৬ মিনিটে দর্শনীয় হেডে জার্মানি গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানকে পরাস্ত করেন আলারিও। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে আলারিও’র সহায়তায় আরেক বদলি খেলোয়াড় ওকাম্পোস আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান। ম্যাচে জার্মানির হয়ে চারজন খেলোয়াড়ের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে। ফ্রেইবার্গের দুই খেলোয়াড় ডিফেন্ডার রবিন কোহ ও স্ট্রাইকার লুকা ওয়ালশিমিডিট মূল একাদশে সুযোগ পেলেও লেভারকুসেনের ফরোয়ার্ড নাডিয়েম আমিরি ও শালকে মিডফিল্ডার সুয়াট সারডারের বদলি হিসেবে অভিষেক হয়েছে। ম্যাচ শেষে লড়াকু মনোভাবের প্রশংসা করে আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি বলেন, দলের মানসিকতায় আমি খুশি। দুই গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর আমরা হাল ছাড়িনি। তার অধীনে এটাই আর্জেন্টিনার সেরা পারফর্মেন্স কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্কালোনি বলেন, প্রতিপক্ষ বিবেচনায় এটাই সেরা পারফর্মেন্স। তবে আমাদের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ।
×