ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে যাত্রী ছাউনিতে জন্ম নেয়া শিশুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বরিশালে যাত্রী ছাউনিতে জন্ম নেয়া শিশুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকার যাত্রী ছাউনিতে জন্ম নেয়া পুত্র সন্তানটিকে তার মাসহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মেট্রোপলিটন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এসময় কোতোয়ালি মডেল থানার চৌকস ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম পিপিএম, এসআই আকলিমা বেগম উপস্থিত ছিলেন। মানসিক ভারাসাম্যহীন ওই নারী ও তার নবজাত সন্তানকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা এসআই আকলিমা বেগম জানান, মানসিক ভারাসাম্যহীন ওই নারী ও তার সন্তানের দায়িত্ব কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ নেয়ার পর থেকেই তাদের স্বজনদের সন্ধান চালানো হয়। একপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর নাম মাহফুজা আক্তার (১৯)। সে বরিশালের মুলাদী উপজেলার কাজিরচর চরডিগ্রী গ্রামের শাহজাহান মুন্সীর কন্যা। মাহফুজা দরিদ্র বাবা-মায়ের সাথেই ঢাকার মিরপুরে থাকতেন। তার বাবা সবজি বিক্রেতা। পরিবারের বরাত দিয়ে এসআই আকলিমা বেগম আরও জানান, কয়েক বছর পূর্বে মাহফুজার বিয়ে হয় ফরিদপুরের শিবচর উপজেলার মাওয়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের সাথে। বিয়ের পর স্বামীর সাথে থাকলেও তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তাকে ঘরে আটকে রাখা হতো। সবশেষ গত নয় মাস ধরে পিতার পরিবারের স্বজনরা তার কোনো সন্ধান পাচ্ছিলো না। অর্থাভাবে কোনোভাবে খোঁজাখুঁজি করে কিছুদিন পরে তারা মাহফুজার আশা ছেড়ে দেন। এদিকে দুই মাস পূর্বে আকলিমা বরিশাল নগরীতে গর্ভবতী অবস্থাতে আসেন। এরপর গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকার যাত্রী ছাউনিতে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম পিপিএম মানসিক ভারসাম্যহী ওই নারীসহ নবজাতকের খোঁজ-খবর নিতে হাসপাতালে যান। ওইসময় তিনি বাচ্চা ও মায়ের সর্বাধিক চিকিৎসা সেবা দিতে শেবাচিম কর্তৃপক্ষ ও সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। একইসাথে নবজাতকসহ তার মায়ের নিরাপত্তার স্বার্থে নারী পুলিশ নিযুক্ত করেন। চিকিৎসা শেষে তাদের কোতোয়ালি মডেল থানা সংলগ্ন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে আসার পর নবজাতক শিশুটির নাম রাখা হয় মোঃ হাসান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিভাবকদের বরিশালে আসা এবং বরিশাল থেকে ঢাকায় যাওয়ার খরচসহ শিশুটিকে তার মাসহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় মানব দরদী ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে তাদের আর্থিক সহয়তা প্রদান করেন। সার্বিক সহায়তা এবং মেয়ে ও নাতির সন্ধান পেয়ে ওসির এ মহানুভতায় ব্যাপক খুশি মাহফুজার বাবা শাহজাহান মুন্সী। তিনি জানান, এই সন্তান মাহফুজা ও তার স্বামী আনোয়ার হোসেন দম্পতিরই।
×