ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গান কবিতা কথনে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

গান কবিতা কথনে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বীর বাঙালীর অসীম বীরত্বে তখন প্রায় নিশ্চিত পাকিস্তানের পরাজয়। পরাভবের সেই অন্তিম মুহূর্তে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলো পাকবাহিনী। এদেশীয় দালাল ও দোসরদের সহায়তায় জাতিকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা নেয়া হলো। বিজয় দিবসের ঠিক দুইদিন আগে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ছিল সেই বিভীষিকাময় দিন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দিনটিতে নানা আয়োজনে স্মরণ করা হলো সেসব মেধাবী মানুষদের। রাজধানীজুড়ে নানা আনুষ্ঠানিকতায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি নিবেদন করা হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি। বিশিষ্টজনদের আলোচনায়, সেলুলয়েডের পর্দায়, কবিতার ছন্দে, গানের সুরে কিংবা নৃত্যশিল্পীর নাচের মুদ্রায় সূর্য সন্তানদের জানানো হয় হৃদয়ের ভালবাসা। সেসব আয়োজনের কথা তুলে ধরা হলো এ প্রতিবেদনে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শিল্পকলার আয়োজন ॥ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা এবং গান ও কবিতায় সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে স্মরণ করা হয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে আলোচনা করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শহীদ জায়া ও শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, শহীদ মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর এবং শহীদ সিরাজউদ্দীন হোসেনের ছেলে শাহীন রেজা নূর। আলোচনা শেষে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শহীদ ডাঃ আলীম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী বলেন, আমাদের দুঃখ হলো, আমরা যে দেশটা চেয়েছিলাম একাত্তরে, সে দেশটা আমরা পাইনি। এ দেশের জন্য যারা আত্মত্যাগ করল, সেই শহীদদের আদর্শের কথা আজ কেউ জানে না। এটা তো জাতিরই ক্ষতি হলো। পঁচাত্তরে জাতির জনকের হত্যাকা-ের পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে তোষণ করে ক্ষমতাসীনরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে দিয়ে দেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। হতাশা ব্যক্ত করে শাহীন রেজা নূর বলেন, জনগণের কথা ভেবে তারা সেদিন যে আত্মদান করেছিলেন, তাদের তো ফিলোসফি ছিল। আজকের দিনে সে ব্যাটনটা যারা প্রজন্মান্তরে বয়ে নিয়ে যাবে, তাদের জন্য কি পরিবেশ নির্মাণ করতে পেরেছে আজকের বাংলাদেশ? আসিফ মুনীর বলেন, একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কাজ, জীবন সম্পর্কে জানেন, এমন অনেক চাক্ষুস সাক্ষী রয়েছেন। তাদের নিয়ে কিন্তু আমরা বড় পরিসরে আয়োজন করতে পারি, যেন তরুণরা সেই ইতিহাস জানতে পারে। সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের শিল্পীদের সম্মেলক গানের সুরে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। গান শেষে কবিতাপাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণের পর গান নিয়ে মঞ্চে আসেন সিরাজুল সালেকিন। গেয়ে শোনান ‘নয়ন ছেড়ে গেলে চলে’, ‘লাখো লাখো শহীদেরর রক্ত মাখা’ ও ‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা’ শিরোনামের তিনটি। এছাড়াও একক কণ্ঠ গান শোনান সোমা রানী রায়, তপন মাহমুদ ও প্রিয়াঙ্কা গো। তাদের পরিবেশিত গানগুলোর শিরোনাম ছিল ‘ও আমার দেশেরমাটি’, ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক’, ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’, ‘মনে পড়ে আজ’, ‘সে চলে গেছে বলে’, ‘আজো বোলে কোয়েলিয়া’, ‘ভেবো না গো মা তোমার ছেলেরা;। একক কণ্ঠে আবৃত্তি পরিবেশন করেন ডালিয়া আহমেদ। সম্মিলত সাংস্কৃতিক জোটের স্মরণানুষ্ঠান ॥ স্মৃতিচারণ, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। বিজয় দিবস উপলক্ষে জোটের সপ্তাহব্যাপী বিজয় উৎসবের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসোধসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছিল আয়োজন। রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ মঞ্চে স্মৃতিচারণ ও আলোচনাসভায় অংশ নেন শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের পুত্র শাহিন রেজা নূর ও প্রাবন্ধিক সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। আলোচনা ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ছায়ানট ও মরমী লোকগীতি শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিমির নন্দী, কমলিকা চক্রবর্তী, আরিফুর রহমান তিমুল, নাহিয়ান দূরদানা সূচী। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে, চারুকণ্ঠ ও কণ্ঠস্বর। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন আনোয়ার পারভেজ, মাহমুদুল হাকিম ও অনিকেত রাজেশ। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন। পথনাটক পরিবেশন করে গতি থিয়েটার ও নাগরিক নাট্যাঙ্গন বাংলাদেশ। এদিন বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা ও ভিন্নধারার শিল্পীরা। একক কণ্ঠে গান শোনান ফরিদা পারভীন, আকরামুল ইসলাম, আবদুল ওয়াদুদ, আবিদা রহমান সেতু, হাবিবুল আলম ও আসিফ ইকবাল সৌরভ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, স্বরব্যঞ্জন, ত্রিলোক বাচিক পাঠশালা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সৈয়দ শহিদুল ইসলাম নাজু, মাসুম আজিজুল বাশার ও সুযধপ্রভা সেবতী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে শিশু সংগঠন মৈত্রী চিলড্রেন থিয়েটার ট্রুপস, সাধনা, নটরাজ, বহ্নিশিখা। পথনাটক পরিবেশন করে নাট্যযোদ্ধা ও খেয়ালি। রবীন্দ্র সরোবরে ‘বিজয় উৎসব’ এ দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে নন্দন, গণছায়া। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, সরদার রহমত উল্লাহ, নার্গিস চৌধুরী, মাহজাবিন রহমান শাওলী, সুচিত্রা ও মিতা। পথনাটক পরিবেশন করে থিয়েটার আর্ট ইউনিট। এছাড়াও শনিরআখড়ার, দনিয়া ও মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী মঞ্চেও ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মিরপুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শিত হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। মুনতাসীর মামুনের একক বক্তৃতা ॥ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও একক বক্তৃতার মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছে বাংলা একাডেমি। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী সমাধিসৌধ, মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হয় কার্যক্রম। বিকেলে একাডেমির নজরুল মঞ্চে ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মরণে একক বক্তৃতানুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে একক বক্তৃতা করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। কবি আসাদ মান্নানের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, চিত্রশিল্পী সৈয়দ ইকবাল, ড. ফিরোজ মাহমুদ, প্রকাশক আহমেদ মাহফুজুল হক প্রমুখ। একক বক্তৃতায় অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, পৃথিবীর আর কোন দেশে বোধ হয় বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বাংলাদেশের মতো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করতে হয় না। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যত রাষ্ট্রকে মেধাহীন করার ঘৃণ্য চক্রান্ত পাকহানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরেরা বাস্তবায়ন করেছিল। তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকেই ধারাবাহিকভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবীরা প্রগতির পক্ষে এবং বাঙালীর জাতীয়তাবাদের বিকাশে কাজ করে গেছেন। এজন্যই পাকিস্তানী বাহিনী বাঙালী বুদ্ধিজীবীদের শত্রুজ্ঞান করেছে এবং হত্যা করেছে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশেও আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং অবরুদ্ধ দেশের লড়াকু মানুষদের প্রাপ্য স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ইতিহাস পাঠের পরিসর সীমাবদ্ধ, সারাদেশে একাত্তরের গণহত্যা ও নির্যাতনের স্মারকচিহ্ন সংরক্ষণের ব্যবস্থাও যথেষ্ট নয়, ফলে এদেশের কয়েকটি প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসহীনতায়। মুনতাসীর মামুন বলেন, সম্প্রতি ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে; একইসঙ্গে একাত্তরের গণহত্যা, গণনির্যাতন ও গণধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের যথার্থ ইতিহাস উত্তরপ্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের তীব্রতা ও বহুমাত্রিকতাকে স্বীকার করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বুদ্ধিজীবী হিসেবেও স্বীকৃতি দিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে আসাদ মান্নান বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে যেমন শোক আমাদের ঘিরে থাকে তেমনি বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংকল্পও আমাদের মাঝে ফিরে ফিরে ধ্বনিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বিজয় উৎসব ॥ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় উৎসবের আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ‘মানবাধিকার দিবস থেকে বিজয় দিবস’ শীর্ষক এ উসবের পঞ্চম দিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন বিকেলে আগারগাঁওয়ের জাদুঘর আঙিনার মুক্ত মঞ্চে পথনাটক ‘যদি কিছু মনে না করেন’ পরিবেশন করে চন্দ্রকলা থিয়েটার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে নারায়ণগঞ্জ হাওয়াইয়ান গিটার পরিষদ ও মুক্তবিহঙ্গ একাডেমি। এর বাইরে প্রধান লিনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়। সে অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করেন শহীদ মধু দের পৌত্রী বর্ণিল ও শহীদ এনায়েত হোসাইনের পৌত্রী মিত্রিতা। সঙ্গীত পরিবেশন করে লাইসা আহমেদ লিসা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে ¯্রােত আবৃত্তি সংসদ। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ছায়ানট। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে গণভবন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। সন্ধ্যায় ভাস্কর্য অঙ্গনে গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা শীর্ষক যাত্রাপালা পরিবেশন করে মানিকগঞ্জের চারণিক অপেরা। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে বিকেলে মিরপুরে জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ প্রাঙ্গণে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি কবি স্থপতি রবিউল হুসাইন। স্মৃতিচারণ করেন জল্লাদখানায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে বনফুল সঙ্গীত একাডেমি, মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট, কল্পরেখা, শহীদ আবু তালেব উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাসফুল শিশু-কিশোর সংগঠন, সপ্তসুর সঙ্গীত একাডেমি, বধ্যভূমির সন্তানদল, কণ্ঠশীলন ও সাত্ত্বিক নাট্যসম্প্রদায়। দেশবন্ধু গ্রুপ-চ্যানেল আই বিজয়মেলা ॥ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই ভবনের চেতনা চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে দেশবন্ধু গ্রুপ-চ্যানেল আই বিজয় মেলা। এবারও মেলা মঞ্চ থেকে পরিবেশিত হবে একাত্তরের প্রেরণাদায়ী গণসঙ্গীত, দেশাত্মকবোধক নৃত্য ও আবৃত্তি। থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ। মেলায় দেখানো হবে ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের নতুন সংস্করণ। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় মেলা উদ্বোধন করবেন যুদ্ধাহত ও খেতাবধারী বীরউত্তম, বীর প্রতীক ও বীরবিক্রম, চ্যানেল আইয়ের পরিচালনা পর্যদের সদস্য, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, গণমাধ্যম সম্পাদকসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বিজয়মেলার টাইটেল স্পন্সর দেশবন্ধু গ্রুপ। ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার চ্যানেল আই ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান, চ্যানেল আইয়ের পরিচালনা পর্যদের পরিচালক মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ। মেলা প্রাঙ্গণ লাল থাকবে সবুজে বর্ণিল মঞ্চ, তোরণ ও ফেস্টুনে সুসজ্জিত। থাকবে ৭ বীরশ্রেষ্ঠ- এর নামে ৭টি স্মারক স্তম্ভ এবং ১১ সেক্টরের স্মরণে ১১টি নির্দিষ্ট স্থান। মেলার স্টলে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ, মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থ, আলোকচিত্র, চলচ্চিত্র, ডায়েরি প্রদর্শনী ছাড়াও থাকবে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যেবাহী ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের সামগ্রীতে সজ্জিত বেশ কিছু স্টল। থাকবে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের একটি স্টল। দেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পীদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি ছবি আঁকবে ছোট্ট সোনামণিরা। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতিচারণ ছাড়াও মেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধারা, খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী, চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ, ক্ষুদে গানরাজ ও বাংলার গানের শিল্পীরা। আবৃত্তিসহ উন্মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হবে চ্যানেল আই সেরা নাচিয়েদের দেশাত্মবোধক নাচ। মেলা পরিচালনা করবেন আমীরুল ইসলাম ও শহিদুল আলম সাচ্চু। মেলা সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল আই। নারায়ণগঞ্জে উদীচীর মোমশিখা প্রজ্বালন ॥ স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা মোমশিখা প্রজ্বালন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উদীচীর আয়োজনে মোমশিখা প্রজ্বালন, নাচ, গান, আবৃত্তি, উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংসদ সঙ্গীত পরিবেশন ও শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি মূকাভিনয় পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি জাহিদুল হক দীপু সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন স্বাধীন বাংলার বেতার শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুশ্রী দাস গুপ্তা, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি।
×