ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জার্ড মুলারের ৩৯ বছরের রেকর্ড ছুঁলেন মেসি, একই ক্লাবের হয়ে দুই তারকারই গোল এখন ৫২৫

মেসি-সুয়ারেজের গোলে জয়ে ফিরল বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

মেসি-সুয়ারেজের গোলে জয়ে ফিরল বার্সিলোনা

জিএম মোস্তফা ॥ টানা দুই ম্যাচ ড্রয়ের পর আবারও জয়ে ফিরেছে বার্সিলোনা। লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজের গোলে রবিবার কাতালানরা ২-০ গোলে হারিয়েছে ১০ জনের ভিয়ারিয়ালকে। এই জয়ের ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গ কাতালান জায়ান্টদের পয়েন্ট ব্যবধানটা বেড়ে আবারও দাঁড়িয়েছে পাঁচ। ম্যাচটা ছিল ভিয়ারিয়ালের মাঠে। নিজেদের সমর্থকদের সামনে বার্সিলোনার বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলে ভিয়ারিয়াল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৬০ মিনিটেই সার্জিও বুসকুয়েটসকে বাজেভাবে ট্যাকেল করার অপরাধে ভিয়ারেলের স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ড্যানিয়েল রাবাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি রিকার্ডো ডি বুরগোস। এর ফলে বাকি সময়টা একজন কম নিয়েই বার্সাকে মোকাবেলা করতে হয় স্বাগতিকদের। তবে সেই চাপ বেশিক্ষণ সামলাতে পারেনি ভিয়ারিয়াল। দারুণ একটি আক্রমণ থেকে প্রথমে সুয়ারেজ ও পরে মেসি কাতালানদের গোল উপহার দেন। আর এই দুই গোলেই ভ্যালেন্সিয়া ও সেল্টা ভিগোর সঙ্গে পরপর দুই ম্যাচে ড্রয়ের পরে জয় নিশ্চিত করে স্প্যানিশ লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা বার্সিলোনা। ভিয়ারিয়ালের সেরামিক স্টেডিয়ামে আগের দুই সফরে ড্র করেছিল বার্সিলোনা। যে কারণেই এই ম্যাচটাকে নিয়ে বাড়তি সতর্ক ছিল আর্নেস্তো ভালভার্দের শিষ্যরা। ম্যাচের শুরুতেই জেরার্ড পিকের হেড বারে না লাগলে বার্সা হয়ত তখনই এগিয়ে যেতে পারত। বিরতির আগে বল পজিশনের দিক থেকে বার্সা এগিয়ে থাকলেও কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ভিয়ারিয়াল প্রায়ই বার্সিলোনার রক্ষণভাগকে ব্যস্ত করে তুলেছিল। নিকোলা সানসোনের শক্তিশালী শট মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান বামদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক হাতে রক্ষা করেন। বিরতির পর মেসি একের পর এক বল যোগান দিলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি জর্দি আলবা। আলবার নিচু ক্রস থেকে পাকো আলকাসারের শট সার্জিও আসেনো রুখে দেন। কিন্তু রাবার লাল কার্ডে ভিয়ারেলের আর শেষ রক্ষা হয়নি। ৭২ মিনিটে পাকো আলকাসারের পাস থেকে গোল করে বার্সিলোনাকে প্রথম এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। চলতি মৌসুমে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারের এটি সপ্তম গোল। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে বুসকুয়েটসের সহায়তায় গোল ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লিওনেল মেসি। আর তাতে বার্সিলোনারও অনায়াস জয় নিশ্চিত হয়। এদিন ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গোল করে নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেন লিওনেল মেসি। জার্ড মুলারের প্রায় ৩৯ বছরের এক পুরনো রেকর্ডে ভাগ বসালেন তিনি। জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখের হয়ে ৫৭২ ম্যাচ খেলে প্রতিপক্ষের জালে ৫২৫ গোল করেছিলেন মুলার। একই ক্লাবের হয়ে যা সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। ১৯৬৫-৭৯ মৌসুমে করা এই রেকর্ডটাই এতদিন নিজের করে রেখেছিলেন মুলার। রবিবার ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গোল করায় মেসির গোলসংখ্যা দাঁড়ায় ৫২৫। তবে সেজন্য বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারকে খেলতে হয় ৬০৫ ম্যাচ। চলতি মৌসুমে লা লিগায় এটা মেসির ১৪তম গোল। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ১৮। ২০১৭ সালে বার্সিলোনার এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৪৯। যা শীর্ষ পাঁচ ইউরোপিয়ান লীগের খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলেরও রেকর্ড। এর আগের দিন শনিবার সেল্টা ভিগোকে ২-১ গোলে পরাজিত করে বার্সিলোনার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে শিরোপার দৌড়ে আরও একধাপ এগিয়ে আসে ভ্যালেন্সিয়া। তবে ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে পয়েন্ট ব্যবধানটা সেই আগের মতোই করে নিয়েছে কাতালানরা। ১৫ ম্যাচ শেষে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে বার্সা। পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে ভ্যালেন্সিয়া রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। অন্যদিকে রবিবার অপর ম্যাচে রিয়াল বেটিসকে ১-০ গোলে পরাজিত করে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও বার্সেলোনা ও ভ্যালেন্সিয়ার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। চতুর্থ স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ কাতালানদের তুলনায় আট পয়েন্ট পেছনে রয়েছে। দুই সপ্তাহ পরে মৌসুমের প্রথম এল ক্ল্যাসিকোতে রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে জিততে পারলে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে যাবে বার্সিলোনা। আগামী সপ্তাহে ন্যুক্যাম্পে দি পোর্তিভো লা করুনাকে আতিথ্য দেবে ভালভার্দের শিষ্যরা। আর ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা রবিবারই আবুধাবীর উদ্দেশে বিমান ধরেছে। এদিকে ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে দারুণ সন্তুষ্ট বার্সিলোনার কোচ। এ প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আর্নেস্তো ভালভার্দে বলেন, ‘মৌসুম শেষ হওয়ার পরেই কেবল আমি শান্ত হবো। তবে এখনও লীগের অনেক সময় বাকি, তাই এমন জয়টা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ম্যাচ শেষে সুয়ারেজ বলেন, ‘লাল কার্ডের পর দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। তারা কৌশলগতভাবে বেশ ভাল খেলেছে। কিন্তু আমরা খুব একটা মানিয়ে নিতে পারিনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে খেলতে নেমে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।’
×