ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর বিমানে ত্রুটি ॥ ১০ জনের জামিন

প্রকাশিত: ০০:০০, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রধানমন্ত্রীর বিমানে ত্রুটি ॥ ১০ জনের জামিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দশ কর্মী। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- বিমানের প্রধান প্রকৌশলী (প্রডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স) এসএ সিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল) বিল্লাল হোসেন, প্রকৌশল কর্মকর্তা এসএম রোকনুজ্জামান, সামিউল হক, লুৎফর রহমান, মিলন চন্দ্র বিশ্বাস, প্রকৌশলী জাকির হোসাইন, টেকনিশিয়ান সিদ্দিকুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল ও জুনিয়ার টেকনিশিয়ান শাহ আলম। সোমবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে শুনানি নিয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম সুব্রত ঘোষ শুভ প্রধান প্রকৌশলী দেবেশসহ নয়জনের জামিন মঞ্জুর করেন। আর ঢাকা মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম প্রধান প্রকৌশলী (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল) বিল্লাল হোসেনের জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার আরেক আসামি ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল হাই কোর্ট থেকে আগেই জামিন পেয়েছেন। সোমবার মামলার প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের দিন ছিল। গত ৭ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন সন্ধ্যায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জমা দিয়েছিলেন। প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রমের অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে সবার অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছিল। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মনিরুজ্জামান মণ্ডল জানান, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও আসামি সিদ্দিকুর রহমান, নাজমুল হক ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৮৭ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই তদন্ত কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলার অনুমতি চেয়েছিলেন, যে আবেদনটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। দণ্ডবিধির ২৮৭ ধারা হচ্ছে যন্ত্রপাতি নিয়ে অবহেলামূলক আচরণ। এ অপরাধের শাস্তি ছয় মাস পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত যে কোনো পরিমাণ অর্থদ বা উভয়দণ্ড। এ অপরাধটি অআমলযোগ্য। গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাতে জরুরি অবতরণ করে। ত্রুটি মেরামত করে সেখানে চার ঘণ্টা অনির্ধারিত যাত্রাবিরতির পর ওই উড়োজাহাজেই প্রধানমন্ত্রী বুদাপেস্টে পৌঁছান। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর তাদের তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়, যাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল বলে বলা হয়। এরপর ওই বছরের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ বিমানের ছয় কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর বরখাস্ত হন বিমানের তিন প্রকৌশলীও। এরপর ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমানের প্রধান প্রকৌশলীসহ নয়জনকে আসামি করে ওই মামলা করেন বিমানের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়েল ম্যানেজমেন্ট) উইং কমান্ডার (অব.) এমএম আসাদুজ্জামান। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (গ) ধারায় করা ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, বিভাগীয় তদন্তে এই কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে “পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি নিয়া অবহেলামূলক আচরণ করতঃ অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম করার প্রমাণ পাওয়া গেছে”। পরে তদন্তে গিয়ে নাজমুল হক ও শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
×