ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় কোন রোহিঙ্গা মারা যায়নি: ত্রান মন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১১ নভেম্বর ২০১৭

না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় কোন রোহিঙ্গা মারা যায়নি: ত্রান মন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপদুর ॥ দূর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রান মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আসার জন্য দরজা খুলে দিয়েছেন। বাংলাদেশে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ গত আড়াই মাসে না খেয়ে থাকেন নাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ বলতে পারবে না যে, না খেয়ে কিংবা বিনা চিকিৎসায় কোন রোহিঙ্গা মারা গেছেন। এ কৃতৃত্ব প্রধানমন্ত্রীর। কারন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের বক্তব্যে বলেছেন, আমি যদি খেয়ে থাকি, তাহলে আমার দেশে আসা রোহিঙ্গারাও খেয়ে থাকবেন। একজন রোহিঙ্গাও অভুক্ত থাকবে না। শনিবার দুপুরে শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চাঁদপুর জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, আরেকজন আগুন সন্ত্রাসী। তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেলেন, সেখানে কি ষড়যন্ত্র করেছেন, তিনিই জানেন। তিনি এসে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াবেন এতে কারো কোন আপত্তি নাই। কিন্তু তিনি ৪০ মিনিটের রাস্তা ১ সপ্তাহ সময় নিয়ে রোহিঙ্গাদের কাছে গেলেন। পথে পথে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করলেন, নিজের গাড়ী নিজেই ভাঙ্গলেন, সাংবাদিকদের গাড়ী ভাঙ্গলেন, মারধর করলেন। কিন্তু উল্টো বলছেন শেখ হাসিনার কর্মীরা নাকি এগুলো করছেন। মায়া চৌধুরী বলেন, আমরা নৌকার পাগল যেখানে যাব নৌকার কথা বলবো। কারণ দেশের মানুষের একমাত্র আসা ভরসাস্থল হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় রাখলে সকলেই নিরাপদ থাকবে। কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, চাঁদপুর থেকেই কমিউনিটি পুলিশিং এর যাত্রা। প্রাথমিক ভাবে চাঁদপুরে কমিউনিটি পুলিশিং এর ২শ’ সদস্য থাকলেও এখন ২২ হাজার সদস্য। আপনারা কাজ করলে এখন মানুষ ঘরের দরজা খুলে রাতে ঘুমাতে পারবে। আপনারা জানেন কারা মাদকের সাথে জড়িত, কার মেয়েকে বাল্য বিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং কোন ছেলে স্কুলে না গিয়ে রাস্তায় মেয়েদেরকে বিরক্ত করছে। তাদেরকে আপনারা দেশের নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে পুলিশ সহজেই অপরাধ দমন করতে পারবে। আর যদি আপনারা এসব জেনেও কাজ না করেন তাহলে কমিউনিটি পুলিশিং এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে না। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বক্তব্যে বলেন, কমিউনিটি পুলিশি হচ্ছে সমাজের যত কমিউনিটি আছে তাদের সাথে বসে কথা বলে তাদের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করা। আর এ জন্য আমরা চিন্তা করেছি জনগণের সাথে সাধারণ মানুষের দূরত্ব কমিয়ে আনার এটি একটি মাধ্যম। আমরা কমিউনিটি পুলিশিংকে বলে দিয়েছি, আপনারা থানার ওসিসহ সকল কর্মকর্তাদের বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকলে ওপেন হাউজ ডে সরাসরি অভিযোগ করবেন। সমাজের সকল কমিউনিটির মধ্যে সু-সম্পর্ক থাকলে কোন অপরাধী অপরাধ করার সাহস পায় না। পুলিশ প্রধান আরো বলেন, গুলশানের ঘটনার পর বাংলাদেশের পুলিশের চৌকস কর্মকর্তারা জঙ্গীদের আস্তানা খুজে বের করতে সক্ষম হয়েছে। অনেকগুলো অভিযানের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ পর্যন্ত অনেক জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। আমরা তাদেরকে জীবিত উদ্ধার করার চেস্টা করি। কিন্তু তারা আমাদের উপর আক্রমন করলে বাধ্য হয়ে অভিযান করতে হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে জঙ্গিদের সরাসরি মারা হয়। কিন্তু আমাদের সফল অভিযানকে সারা বিশ্ব স্বাগত জানিয়েছে এবং প্রশংসা করেছে। কিন্তু একটি মহল সব সময় আমাদের এ জঙ্গিবাদী অভিযানকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বলছে, আমরা জঙ্গিদেরকে মেরে ফেলছি। তাদের তথ্য দিচ্ছিনা। এভাবে তারা পুলিশের কাজকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ওই মহল সব সময় পুলিশের মনবল দূর্বল করার জন্য এবং সরকারকে পতনের জন্য এ ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু তারা কখনোই সফল হবেন না। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস.এম. মনির উজ-জামান, পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর ত্রান ও সমাজ কল্যাণ বিয়ষক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ ওসমান গণি পাটওয়ারী, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মাসুদ হোসেন প্রমূখ। সমাবেশে পূর্বে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী শহর প্রদক্ষিণ করে সমাবেশ স্থলে এসে শেষ হয়।
×