ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তেলের দর পতনের সুফল নিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ১১ নভেম্বর ২০১৭

তেলের দর পতনের সুফল নিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার \ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দরপতন অনেকটা অব্যাহত থাকলেও, আপাতত তার সুফল নিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। সবশেষ গেলো বছর তেলের দাম কমানো হলেও, চলতি অর্থবছরে আবারো বহির্বিশ্বে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে, দাম কমানোর কোনো আভাস দিতে পারছেনা জ্বালানি বিভাগ। বিশ্লেষক ও বিশ্বব্যাংক মনে করছে- দাম কমালে যেমন উপকার পাবে জনগণ, তেমনি তেলের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিও বাজারভিত্তিক করা জরুরি। ২০১৪ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগত দরপতন ঘটতে থাকে জ্বালানি তেলের। এরপর থেকে টানা দু'বছর তেলের মূল্য প্রায় স্থিতিশীলই রয়েছে; এমনকি গতবছরের প্রথমাংশে ব্যারেল প্রতি ৪০ ডলারের নীচে নেমে আসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য। সবশেষ ২০১৪ সালে দেশের বাজারে কমানো হয় জ্বালানি তেলের দাম। যদিও, সরকারের পক্ষ থেকে দাম আরো কমানোর প্রতিশ্রুতি ছিলো। কিন্তু, বিশ্ব বাজারে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম গড়ে ৪৫ থেকে ৫৫ ডলারে সীমাবদ্ধ থাকলেও কমানো হয়নি এর মূল্য। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিপিসি বলছে, ঊর্ধ্বমূখী তেল বাজারের বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি অর্থবিভাগের কাছে তাদের দেনার হিসেবও দাম কমানোর অন্যতম অন্তরায়। বিপিসি চেয়ারম্যান আবু হেনা মো রহমাতুল মুনিম বলেন, 'এটা প্রয়োজন ছিল, এটা ভর্তুকি বা লস ছিল না।' এদিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীও বলছেন, দাম কমানোর কোনো নির্বাহী আদেশের ইঙ্গিত আপাতত না থাকলেও, বিপিসির কাছে অর্থবিভাগের পাওনা ২৭ হাজার কোটি টাকা নিয়ে মিমাংসা হওয়া প্রয়োজন।নসরুল হামিদ বলেন, 'প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা এখনো ভর্তুকি হিসাবে পাওনা রয়েছে। কিন্তু ভর্তুকি তো পাওনা হয় না।' বিশ্বব্যাংকের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতনের সুযোগে তেল ক্রয় পদ্ধতি আধুনিকায়নের সুযোগ ছিলো বাংলাদেশের। পাশাপাশি, ডিজেলের দাম কমানো হলে বিদ্যুতের দামও সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হতো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ড. জাহিদ হোসেন বলেন, 'জ্বালানী মূল্য নির্ধারণের যে আমলা তান্ত্রিক ও এডহক ভিত্তিক নীতিগুলো আছে তাকে একটি যৌক্তিক নীতিমালার আওতায় আনা হোক।' তাদের মতে, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো করে তেল আমদানির সময় আন্তর্জাতিক মূল্যের সাথে স্থানীয় বাজারে সমন্বয়ের জন্য টেকসই মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি প্রণয়ন করাও জরুরী।
×