ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুমন্ত গুপ্ত

নাসার ইনভেন্টর অব দ্য ইয়ার মাহমুদা সুলতানা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৭ নভেম্বর ২০১৭

নাসার ইনভেন্টর অব দ্য ইয়ার মাহমুদা সুলতানা

উন্নত জীবন ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্নে বিভোর থাকে তারুণ্য। উদীয়মান তরুণ প্রজন্ম এখন দেশের বিরাট এক জনগোষ্ঠী। বর্তমান তরুণদের স্বপ্নে, চিন্তা-চেতনায়, ভাবনায়-কল্পনায় এবং কাজকর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে দেশ ও আপামর জনগণের শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ। তরুণরাই জাতির মেরুদন্ড। সঠিক পরিচর্যা পেলে একদিন তরুণরাই তাদের মহৎ স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে। তেমনি এক স্বপ্নবাজ তরুণী আমাদের মাহমুদা সুলতানা। সব বাধা পেরিয়ে, সব সীমা ছাড়িয়ে এবার বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করে দিল বাংলাদেশী সুলতানা। পৃথিবীর অন্যান্য মেধাবীদের টেক্কা দিয়ে এবার নাসার ইনভেন্টর অব দ্য ইয়ার হিসেবে মনোনীত হয়েছে নাসার কনিষ্ঠ নারী কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানা। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে অবস্থিত নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ইন্টারনাল রিসার্চ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবনের জন্য প্রতি বছর এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। নাসার ‘এড়ফফধৎফ’ং ঋণ১৭ ওজঅউ ওহহড়াধঃড়ৎ ড়ভ ঃযব ণবধৎ’ হিসেবে মনোনীত হওয়া ছাড়াও, নাসায় যোগদান করার খুব অল্প সময়ের মধ্যে সুলতানা পর পর ১০টি নাসার অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। বাংলাদেশী তরুণী মাহমুদা সুলতানা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সাউথার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর ২০১০ সালে তিনি ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং উপর পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করে, তারপর একই সালে (২০১০ সাল) নাসার গডার্ড এ গ্রাফিন (এক ধরনের পারমাণবিক স্কেল) নিয়ে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। গ্রাফিন নিয়ে সুলতানার বেশ সৃজনশীলতার পারদর্শিতা দেখে ২০১৭ সালে নাসা কর্তৃপক্ষ তাঁকে Goddard’s FY17 IRAD Innovator of the Year’ হিসেবে মনোনীত করে। নাসায় সুলতানার সৃজনশীলতার অবদান রয়েছে বলেও জানায় নাসা কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সালে MIT থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি নেবার আগেই এক জব ফেয়ারে তিনি নাসার গডার্ড ডিটেক্টর সিস্টেম ব্রাঞ্চে জবের অফার পান। এর আগেই তিনি ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট করেছিলেন, ততদিনে কাজ শুরু করেছিলেন বিখ্যাত বেল ল্যাবরটরিতে রিসার্চ এ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে। মাহমুদা সুলতানা কিশোর বয়সে পরিবারের সঙ্গে আমেরিকা যান। তার বড় চাচাও নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারে ফিজিসিস্ট হিসেবে কাজ করেন। তাই ছোট বেলা থেকেই নাসার বিভিন্ন গবেষণা, অর্জন নিয়ে তার পড়াশোনা সমবয়সী যে কারও থেকে অনেক বেশি ছিল, নাসাতে কাজ করার যে স্বপ্ন তিনি দেশে বসে দেখতে শুরু করেছিলেন, ২০১০ সালে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। মূলত ন্যানো টেকনোলজি, ৩উ প্রিন্টিং, ডিটেক্টর ডেভেলপমেন্ট এসব নিয়েই মাহমুদার গবেষণা। MIT-এর সঙ্গে মিলে কোয়ান্টাম ডট প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন আলো তরঙ্গ ডিটেক্টর নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। থ্রিডি প্রিন্টার আরও সহজ করার জন্যও তার আবিষ্কার ‘গ্রাউন্ড ব্রেকিং’ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
×