ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিচার চেয়ে ওবায়দুল কাদেরের কাছে লিখিত অভিযোগ

উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির তদন্ত শুরু

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির তদন্ত শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বিদেশে অর্থ পাচার, খুন, দুর্নিতী, চাঁদাবাজি, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ ১১টি অভিযোগ এনে জেলার উজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে লিখিত অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। গত দুইদিন ধরে চলমান তদন্তের খবর গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে পরলে সোমবার সকাল থেকে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। লিখিত অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ওবায়দুল কাদেরের কাছে প্রেরিত আবেদনটি করেন চেয়ারম্যানের নিজ ইউনিয়ন ওটরা ইউনিয়নের মশাং গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মঞ্জু খান। তিনি ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল গত তিন বছর ধরে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের হাট-বাজারগুলোর ওয়ান পার্সেন্ট অর্থ উন্নয়নখাতে ব্যয় না করে এডিবি, এলজিএসপি, টিআর, কাবিখা ও ত্রানের ব্রীজ-কালভার্টের অর্থ আত্মসাত করে থাইল্যান্ডে বসবাসরত তার ভায়রা ভাইয়ের কাছে কয়েক কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন। এছাড়াও বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবালের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দুর্ব্যবহার, দলীর কার্যালয়সহ বঙ্গবন্ধু, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির ছবি ভাংচুরের অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে হাফিজুর রহমান ইকবাল বর্তমান উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টুর পক্ষে কাজ করে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন বলেও ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সাবেক এক নারী চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানী ও জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী সভাপতির নাম ভাঙ্গিয়ে ইকবালের বেপরোয়া হয়ে ওঠারও অভিযোগ করা হয়। এছাড়া একাধিক হত্যাকান্ড, গুমসহ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সাথে উপজেলা চেয়ারম্যানের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে দাবি করে ওইসব অভিযোগগুলো তদন্ত করে ইকবালের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন অভিযোগকারী মঞ্জু খান। অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নখাতের টাকা আত্মসাত ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য সোমবার অভিযোগকারী মঞ্জু খানকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ প্রদান করা হয়। ওই নোটিশে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হাজির হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তার দেয়া অভিযোগের অংশ বিশেষ সত্যতা প্রমানে সহায়তার অনুরোধ করা হয়। অভিযোগকারী মঞ্জু খান বলেন, উজিরপুর উপজেলা পরিষদ ব্যতিত অন্য যেকোনস্থানে বসে আমি স্বাক্ষ্য প্রমান উপস্থাপন করতে রাজি আছি। তিনি আরও জানান, স্বাক্ষ্য প্রমাণ না দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল ও তার ক্যাডার বাহিনী নানাভাবে তাকে হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে আমার আগে কিছুই জানা ছিলোনা। তবে তদন্ত শুরু হওয়ার পর আমি বিষয়টি শুনেছি। চেয়ারম্যান ইকবাল আরও জানান, সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারা আমাকে হয়রানীর করার জন্য মিথ্যে অপপ্রচার শুরু করেছে।
×