ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দু’বছর পর অপহৃত পাক সাংবাদিক পাক-আফগান সীমান্তে উদ্ধার

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২১ অক্টোবর ২০১৭

দু’বছর পর অপহৃত পাক সাংবাদিক পাক-আফগান সীমান্তে উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রায় দু’বছর পর উদ্ধার হলেন অপহৃত পাক সাংবাদিক জিনাত শাহজাদি। পাকিস্তানের কমিশন অব ইনকোয়্যারি অন এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (সিআইইডি)-এর প্রধান জাভেদ ইকবাল জিনাতের উদ্ধার হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে জানান। জাভেদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে জিনাতকে পাক-আফগান সীমান্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহৃত হওয়ার আগে পর্যন্ত পাক জেলে বন্দি ভারতীয় নাগরিক হামিদ আনসারির মুক্তির বিষয়ে সরব ছিলেন তিনি। বছর ছাব্বিশের জিনাত পাকিস্তানের ডেলি নয়ি খবর অ্যান্ড মেট্রো নিউজ টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক। পেশোয়ারের জেলে বন্দি হামিদ আনসারি নামে এক ভারতীয় নাগরিককে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন তিনি। হামিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে চরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছিল। আদতে মুম্বইয়ের বাসিন্দা হামিদ এক ইন্টারনেট বন্ধুর হাত ধরে পাকিস্তানে পৌঁছন। কিছু দিনের মধ্যেই চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। ২০১২ সালে থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজই পাওয়া যাচ্ছিল না। এই জিনাতই হামিদের খোঁজখবর নিয়ে আসল সত্যটা বের করে আনার চেষ্টা শুরু করেন। ২০১৫-য় হামিদের মা ফৌজি আনসারির হয়ে সুপ্রিম কোর্টের হিউম্যান রাইট সেলে আবেদন করেন জিনাত। তাঁর তত্পরতায় আনসারির খোঁজ মেলে। পাকিস্তান পুলিশ স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে আনসারি তাদের হেফাজতেই আছে। অবশেষে পেশোয়ারের জেলে খোঁজ মেলে হামিদের। তাঁকে বাঁচানোর জন্য দিন-রাত চেষ্টা চালাচ্ছিলেন জিনাত। এর জন্য জিনাতের কাছে মাঝেমধ্যেই হুমকি ফোন আসত বলে জানান তাঁর ভাই সলমন লতিফ। কিন্তু তাতে দমে যাননি জিনাত। হুমকিকে উপেক্ষা করেই হামিদকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। ২০১৫-র ১৯ অগস্ট অফিসে যাওয়ার পথে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জন জিনাতকে অপহরণ করে। তার পর দু’বছর কেটে গিয়েছে, কোনও খোঁজই ছিল জিনাতের। পরিবার থেকে সহকর্মীরা সকলেই ধরে নিয়েছিলেন জিনাত হয়তো আর বেঁচে নেই। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর উদ্ধারের খবর পেয়ে খুশিতে মেতে ওঠে পরিবার। লাহৌরে শনিবার পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন হয় জিনাতের। জিনাতকে সশরীরে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর সহকর্মী থেকে আত্মীয়রা। জিনাতের ভাই সলমন লতিফ বলেন, “এক জন ভারতীয় বন্দিকে বাঁচাতে গিয়ে অনেক মূল্য চোকাতে হয়েছে আমাদের। জিনাত অপহৃত হয়। সেই দুঃখে ছোট ভাই সাদ্দাম আত্মহত্যা করে।” এ তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক জন ভারতীয়কে সাহায্য করা কি কোনও অপরাধ? তবে জিনাত মুক্তি পেলেও এখনও পাক জেলেই বন্দি রয়েছেন হামিদ। ফের জিনাত তাঁর হয়ে সরব হবেন কি না তা অবশ্য জানা যায়নি। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×