ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পর্দা নামল এবারের বর্ণাঢ্য আইসিটি এক্সপোর

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২১ অক্টোবর ২০১৭

পর্দা নামল এবারের বর্ণাঢ্য আইসিটি এক্সপোর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘মেক ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭’র পর্দা নামল শুক্রবার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যৌথ উদ্যোগে এবার অনুষ্ঠিত হলো তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবার বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী। মেলার শেষ দিন তথ্যপ্রযুক্তি ও ধারণা তথ্যপ্রযুক্তির প্রকৃতি ও ব্যবহার অবিশ্বাস্য গতিতে বদলে দিচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কতটুকু এগিয়েছে, আমাদের সক্ষমতা ও উদ্ভাবন উপস্থাপন করা হয় এবারের প্রদর্শনীতে। বিশেষ করে হার্ডওয়্যার, ম্যানুফ্যাকচারিং ও গবেষণা খাতের সম্ভাবনা, কর্মপ্রচেষ্টা ও রূপকল্প তুলে ধরা হয় এবারের মেলায়। উপস্থাপন করা হয় হাইটেক পার্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তির উৎপাদন অবকাঠামোর অগ্রগতিও। জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরি, তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরি করতে প্রদর্শনী সফল হয়েছে। গত বুধবার বেলা এগারোটায় মেলা উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ প্রমুখ। এবারের মেলায় আট দেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ী, প্রতিনিধি, স্পীকার অংশ নিয়েছিলেন। তারা বিভিন্ন দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিটুবিতে অংশ নেন। মেলায় গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ছিল সুপরিচিত প্রযুক্তি ব্র্যান্ড এইচপি, টিপিলিঙ্ক; সিলভার স্পন্সর হিসেবে অংশগ্রহণ করছে ডাহুয়া টেকনোলজি, সামিট টেকনোপলিস লিঃ এবং ওয়ালটন। প্রদর্শনীর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার ডেল, আইটি পার্টনার আমরা টেকনোলজিস লিঃ, গেমিং পার্টনার আসুস, মিডিয়া পার্টনার এটিএন বাংলা ও কালের কন্ঠ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের প্রায় ৭০ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শতাধিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। তথ্যপ্রযুক্তির নতুন সব পণ্য, সেবা, জীবনশৈলী ও ধারণা উপস্থাপন করে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ। ১৩২ প্যাভিলিয়ন ও স্টলে তা প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনীতে ছিল লোকাল ম্যানুফ্যাকচারাস ফোরাম, গেমিং, সেলফি, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মিট দ্যা লিডারস, লাইভ ইভেন্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিনামূল্যে প্রবেশ, ডিজিটাল সেবা ইত্যাদি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য প্রদর্শনী উপলক্ষে বিভিন্ন এ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা দেয়া হয়। প্রদর্শনী চলাকালে মেলা প্রাঙ্গণে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কয়েকটি সেমিনার হয়। মেলার আহ্বায়ক বিসিএসের মহাসচিব ইঞ্জি. সুব্রত সরকার বলেন, হার্ডওয়্যার খাতে বাংলাদেশের এ সকল সাফল্য ও অগ্রগতি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে এবং এ খাতে আরও এগিয়ে যেতেই আমরা ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭’ আয়োজন করছি। পুরো প্রদর্শনীকে লোকাল ম্যানুফ্যাকচারাস, আইওটি ও ক্লাউড, প্রোডাক্ট শোকেস, ইনোভেশন, মিট উইথ ইন্টারন্যাশনাল ম্যানুফ্যাকচারারস, ডিজিটাল লাইফস্টাইল, মেগা সেলস, সেমিনার, বিটুবি ম্যাচমেকিং ও হাইটেক পার্কে এ ধরনের ১০ জোনে ভাগ করা হয়। ১৩২ প্যাভিলিয়ন ও স্টলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রকল্প, কর্মসূচী এবং উদ্যোগগুলো উপস্থাপন করা হয়। মেলায় দর্শকদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এ যাবতকালের মধ্যে যত হার্ডওয়্যার মেলা হয়েছে তার মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি দর্শক এসেছেন। এবারের আইসিটি এক্সপো ২০১৭ এর লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ম্যানুফাকচারিং কোম্পানি হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি করে তোলা। বাংলাদেশে আইসিটি খাতে ইন্ডাস্ট্রি তৈরিতে আমরা মেলার মাধ্যমে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি। নতুন যারা উদ্ভাবক ও স্টার্টআপ নিয়ে কাজ করছে তারা যেন বাণিজ্যিকভাবে তাদের পণ্য বাজারজাত করতে পারে সেজন্য সহযোগিতা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রি ও তাদের মধ্যে সেতুবন্ধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যে আয়োজন করা হয়েছিল এবারের মেলা তার সবগুলো পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। মেলায় পাঁচটি উদ্ভাবনকে পুরস্কৃত করা হয়। এসব উদ্ভাবনকে বেসরকারী খাত থেকে নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শীর্ষ পাঁচটি উদ্ভাবন হচ্ছে নুসরাত জাহানের ইন্টারএ্যাকটিভ আটিফ্যাক্ট। এটি কাইনেকট ভিত্তিক সাইকোথেরাপি সিস্টেম। দ্বিতীয় হয়েছে চুয়েটভিত্তিক মনসুর ইসলামের ডেভেলপমেন্ট অব অটোমোটেড এ্যাঙ্কল ফুট অথসিস ফর ফুট ড্রপ প্যাশেনটস। তৃতীয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এআইইউবির ওয়াচ আইটি শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীদের সহকারী ডিভাইস। চুতর্থ হয়েছেন আনিসুর রহমান। তিনি ইনফোকেয়ার উদ্ভাবন করেছেন। এটি ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন পদ্ধতি। পঞ্চম হয়েছে সিমেড হেলথের ড. খন্দকার এ মামুন। তিনি সিমেড হেলথ উদ্ভাবন করছেন। নতুন এসব উদ্ভাবন সম্পর্কে মেলার আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বলেন, নতুন উদ্ভাবনগুলোকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ সহযোগিতা করা হবে। আমাদের লক্ষ্য ছিল নতুন উদ্ভাবকদের সহযোগিতা করা। তাদের উদ্ভাবনগুলো প্রদর্শনের প্ল্যাটফর্ম দেয়া। আমরা সেটি সফলভাবে করতে পেরেছি। সব মিলিয়ে আমরা অত্যন্ত সফল একটি আয়োজন সম্পন্ন করেছি। এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখব। মেক ইন বাংলাদেশ স্লোগানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭’ এর পর্দা নামল ২০ অক্টোবর শুক্রবার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) এর যৌথ উদ্যোগে এবার অনুষ্ঠিত হলো তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবার বর্ণাঢ্য এ প্রদর্শনী। যেসব অধুনা প্রযুক্তি ও ধারণা তথ্যপ্রযুক্তির প্রকৃতি ও ব্যবহার অবিশ্বাস্য গতিতে বদলে দিচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কতটুকু এগিয়েছে, আমাদের সক্ষমতা ও উদ্ভাবন উপস্থাপন করা হয় এবারের প্রদর্শনীতে। বিশেষ করে হার্ডওয়ার, ম্যানুফ্যাকচারিং ও গবেষণা খাতের সম্ভাবনা, কর্মপ্রচেষ্টা ও রূপকল্প তুলে ধরা হয় এবারের মেলায়। উপস্থাপন করা হয় হাইটেক পার্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তির উৎপাদন অবকাঠামোর অগ্রগতিও। জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরি, তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরি করতে প্রদর্শনী সফল হয়েছে।
×