ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

অলকনন্দা প্যাটেলের ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’ গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

অলকনন্দা প্যাটেলের ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’ গ্রন্থের প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শহর ঢাকাতেই জন্মেছিলেন ভারতের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ অলকনন্দা প্যাটেল। সেই সুবাদে বাংলাদেশেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। সেই মধুর স্মৃতি এখনও তাড়িত করে। বিশ্বময় ঘুরে বেড়ানো এ মানুষটি লিখেছেন স্মৃতিমথিত গ্রন্থ ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’। এ বইয়ে উঠে এসেছে ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে তার পারিবারিক পরিমন্ডলের ছবি ও তৎকালীন বাংলাদেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির আবহ। বেঙ্গল পাবলিকেশনস থেকে প্রকাশিত এ বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো সোমবার। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে প্রকাশনা উৎসবে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ এম সাইদুজ্জামান ও বেঙ্গল পাবলিকেশনসের নির্বাহী পরিচালক আবুল হাসনাত। অনুভূতি ব্যক্ত করেন অলকনন্দা প্যাটেল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। প্রকাশনা অনুষ্ঠান শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইফ্ফাত আরা দেওয়ান ও বুলবুল ইসলাম। অলকনন্দা প্যাটেলের ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’ বইটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল পাবলিকেশনস। বইটি তিনি উৎসর্গ করেছেন গৈলা ও গে-ারিয়ার পূর্বপুরুষদের স্মরণে। বইটির ভূমিকা লিখেছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অশোক মিত্র। পনেরোটি অধ্যায়ে বইটি বিভক্ত। সেগুলো হলোÑ যতটুকু মনে পড়ে, পুরানা পল্টন- ৫ নং বাড়ি, ঘরসংসার, ডাক্তার-বদ্যি-ওষুধ, পড়াশোনা-খেলাধুলা-ছেলেবেলার নানা প্রশ্ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সঙ্গীত-সাহিত্য-আড্ডা, পরিমলকাকা- ঢাকার পরিমল রায়, গে-ারিয়া, লক্ষ্মীবাজার-শরৎকুটির, বরিশাল, গৈলা, যুদ্ধ-অধিকরণ-ওয়ারী, ফেরা-ছেড়ে যাওয়া এবং উপসংহার। সেই সঙ্গে রয়েছে তার জীবনের বিভিন্ন সময়ের আলোকচিত্র, যার প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী রফিকুন নবী। ৪৪০ পৃষ্ঠার এ বইটির মূল্য ৬৫০ টাকা। প্রাচ্যকলা বিভাগের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী প্রাচ্য চিত্রকলা রীতিতে আঁকা হয়েছে সবগুলো চিত্রকর্ম। শিল্পীদের আপন মনোভাবনায় উজ্জ্বল প্রতিটি ক্যানভাস। চিত্রপটে ধরা দিয়েছে বিচিত্র বিষয়। ক্যানভাসে দেখা মেলে পুরুষ শাসিত সমাজে নারীর জীবনচিত্র থেকে শুরু করে ক্ষমতাকেন্দ্রিক মানুষের দ্বন্দ্ব। কোন চিত্রপটে ঝরাপাতার সৌন্দর্যের বিপরীতে বেদনার বার্তায় উদ্ভাসিত হয়েছে মৃত বৃক্ষ। এমন বহুমাত্রিক বিষয়কে উপজীব্য করে বিগত একটি বছর ধরে কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের চারুশিক্ষার্থীরা। সেসব শিল্পকর্ম নিয়ে সোমবার থেকে শুরু হলো প্রাচ্যকলা বিভাগের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। সে আয়োজনে শিল্প সৃজনে কৃতিত্বের স্বীকৃতি পেয়েছেন অনেকেই। সোমবার দুপুরে চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে এ বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর সূচনা হয়। শিল্প আয়োজনটির উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার ও শিল্প সমালোচক অধ্যাপক বুলবন ওসমান। সভাপতিত্ব করেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। এবারের আয়োজনে নানা মাধ্যমে ছয়জন চারুশিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। নিরীক্ষাধর্মী পুরস্কার পেয়েছেন এমএফএ প্রথম পর্বের সামিনা জামান, শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার পেয়েছেন বিএফএ সম্মান চতুর্থ বর্ষের ফাহমিদা হক মাহি, শিল্পী শফিকুল আমীন স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের হাসিবা ইয়াসমিন, শিল্পী আমিনুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন এমএফএ প্রথম পর্বের হরেন্দ্রনাথ রায়, শিল্পী রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন বিএফএ সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের মোঃ জাহিদুল আলম জামিল এবং শিল্পী শওকাতুজ্জামান স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন বিএফএ সম্মান প্রথম বর্ষের জয়শ্রী গোস্বামী মিতা। এ প্রদর্শনীতে ২৮ জন চারুশিক্ষার্থীর ৫১টি নির্বাচিত শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। ছয় দিনের এ প্রদর্শনী আগামী ২১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীর মাধ্যমে গ্যালারি কারিকরের যাত্রা শুরু রাজধানীতে যাত্রা শুরু করেছে নতুন আরেকটি গ্যালারি। কারিকর নামের এ প্রদর্শনালয়টি গড়ে উঠেছে গুলশান এক নম্বরের ২৭ নম্বর সড়কের ৬৯ নম্বর বাড়িতে। প্রদর্শনালয়টির উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী দম্পতি জিন্নাতুল করিম ও শিল্পী শাহানা মজুমদার, শিল্পী রেজাউল হক লিটন ও জামিল আকবর শামীম। তিন কক্ষের ছোট এ গ্যালারিতে থাকবে না কোন সাপ্তাহিক বন্ধ। সোমবার বিকেলে লিজেন্ড এ্যান্ড কনটেম্পোরারি শীর্ষক প্রদর্শনীর মাধ্যমে গ্যালাটির পথচলা শুরু হলো। প্রধান অতিথি হিসেবে গ্যালারি ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় উপস্থিত ছিলেনÑ প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, হামিদুজ্জামান খান, মনিরুল ইসলাম, আবদুল বারেক আলভী ও ফরিদা জামান। উদ্বোধনী বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, গ্যালারি হচ্ছে শিল্পী ও শিল্পানুরাগীদের মাঝে মেলবন্ধনের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র। গ্যালারির মাধ্যমেই শিল্পীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পান শিল্পরসিকরা। কোন দেশের শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের অনন্য ভূমিকা রাখে গ্যালারি। পক্ষকালব্যাপী এ প্রদর্শনীতে ১১ জন শিল্পীর ৩৫টি চিত্রকর্মের পাশাপাশি ঠাঁই পেয়েছে চারটি ভাস্কর্য। প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া শিল্পীরা হলেনÑ ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান, চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, মর্তুজা বশীর, সৈয়দ জাহাঙ্গীর, আবুল বারেক আলভী, শহীদ কবির ও ফরিদা জামান। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। ‘ফিনিক্স অব লংগদু’ সোমবার থেকে ধানম-ির দৃক গ্যালারিতে শুরু হলো ‘ফিনিক্স অব লংগদু’ শীর্ষক প্রদর্শনী। গত জুন মাসে রাঙ্গামাটির লংগদুতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী ঘটনাপরবর্তী ছবি স্থান পেয়েছে এ প্রদর্শনীতে। সেই বিভীষিকাময় ঘটনার ছাপ মানুষের মনে, ভাঙ্গা ঘরবাড়ি, মানুষের আক্রমণের চিহ্ন এসব ছবি উঠে এসেছে প্রদর্শনীতে। একই সঙ্গে দেশের স্বনামধন্য শিল্পীদের চিত্রকর্মও স্থান পেয়েছে এ প্রদর্শনীতে। আয়োজকরা জানান, প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া চিত্রকর্মগুলোর বিক্রীত অর্থ লংগদুতে সন্ত্রাসী হামলার শিকার মানুষদের পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে। প্রদর্শনীর ছবিগুলো তুলেছেন মৃত্তিকা কামাল ও চিস্তি কানুন। ট্যারাকোটা ক্রিয়েটিভ আয়োজিত সোমবার বিকেলে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। অধ্যাপক মেসবাহ কামালের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বঞ্চিতা চাকমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জান্নাত-ই-ফেরদৌস। প্রদর্শনীতে ৫০টি আলোকচিত্র ও ৭৫টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনী চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
×