ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেত্রকোনায় স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা ॥ কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

নেত্রকোনায় স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা ॥ কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ জেলা শহরের সাতপাই বাবলু সরণি এলাকার নিজ বাসায় স্বামী-স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় কোনো ক্লু খুঁজে পায়নি পুলিশ। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যাসহ ডাকাতির অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন নিহত দম্পতির একমাত্র ছেলে সুমন বিশ্বাস। এদিকে শনিবার দুপুরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে নিহতদের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পরে স্থানীয় শশ্মানঘাটে তাদের অন্ত্যষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন স্বজনরা। ঠিক কি কারণে এবং কারা এই দম্পতিকে হত্যা করেছেÑ তা জানতে না পারলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ওই ঘটনার পর দুর্বৃত্তরা বাসা থেকে তাদের মুঠোফোনসহ আনুমানিক চার-পাঁচ ভরি স্বর্নালংকার ও কিছু নগদ টাকা নিয়ে গেছে। তাই ঘটনাটি স্রেফ ডাকাতির কারণে হত্যা, নাকি অন্য কোনো কারণে পরিকল্পিত হত্যাকা-Ñ তা জানতে ব্যাপক অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম জানান, ‘পুলিশের কয়েকটি টিম বিভিন্ন দিক থেকে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। আশা করা যায় খুব দ্রুত প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।’ জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে সাতপাই বাবলু সরণি এলাকার নিজ বাসা থেকে ওই দম্পতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় বাসার গেট বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। নিহতরা হলেন: মিহির কান্তি বিশ্বাস(৭০) এবং তার স্ত্রী সহিতা রানী চন্দ ওরফে তুলিকা(৫৬)। মিহির কান্তি বিশ্বাস এক সময় বিএডিসি’র কর্মচারী ছিলেন। পরবর্তীতে সদর সদর উপজেলার বাংলা কৃষ্ণগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে অবসরে যান। আর তার স্ত্রী সহিতা বিশ্বাস ওরফে তুলিকা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদের একমাত্র ছেলে সুমন বিশ্বাস ঢাকায় বায়িং হাউজে চাকরি করেন। আর একমাত্র মেয়ে সুষ্মিতা বিশ্বাস স্বামীর সঙ্গে সিলেটে থাকেন। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজন কেবল বাবলু সরণি এলাকার ওই (নিজ) বাসায় বসবাস করতেন। দু’জনই খুব নম্র-ভদ্র স্বভাবের ছিলেন। তাদের কোনো শত্রু বা প্রতিপক্ষ ছিল এমনটা জানা নেই কারও। ওই বাসার অন্য একটি ইউনিটের ভাড়াটিয়া মৎস্য বিভাগের কর্মচারী রাজীব কুমার প-িত জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে তিনি বাসাটির মালিক দম্পতির কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। হাফ বিল্ডিং বাসাটির গেটও বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। এ অবস্থায় তার সন্দেহ হলে তিনি বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে লাঠি দিয়ে বাসার ভিতরের দরজায় ধাক্কা দিলে দরজাটি খুলে যায় এবং ভিতর থেকে দুর্গন্ধ বেড়িয়ে আসতে থাকে। পরে তারা দম্পতির আত্মীয়-স্বজনদের খবর দেন। কিছুক্ষণ স্বজনরা এসে তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ড্রইং রুমের বিছানায় মিহির কান্তি বিশ্বাসের এবং রান্না ঘরের মেঝেতে সহিতা বিশ্বাস তুলিকার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় বাসার আলমারি, ওয়্যারড্রোবসহ বিভিন্ন ফার্নিচারও এলোমেলো অবস্থায় ছিল।
×