ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর গাড়ি বহরে হামলা

প্রকাশিত: ০২:১৬, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর গাড়ি বহরে হামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর ॥ ফরিদপুরের নগরকান্দার তালমার মোড়ে জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফরিদপুর-২(নগরকান্দা ও সালথা) আসনের সংসদ সদস্য সাজেদা চৌধুরীর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় বহরে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলাকারীদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন নগরকান্দা থানার ওসি এ এফ এম নাসিমসহ ৫জন। হামলা ঠেকাতে পুলিশ ফাকা গুলি ছোড়ে। পুলিশ গাড়িবহরে হামলাকারী ৩জনকে আটক করেছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের তালমার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী দুই দিনের সফরে শুক্রবার দুপুরে নগরকান্দা ও সালথায় আসছিলেন। এই সফরে তিনি নিজ বাড়ি সালথার রসুলপুরে অবস্থান করবেন। নগরকান্দায় সাজেদা চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব করেন তার ছেলে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়মন আকবর চৌধুরী। আয়মন আকবরের সাথে বিভিন্ন কারনে নগরকান্দা ও সালথার বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতার মতবিরোধ রয়েছে। সাজেদা চৌধুরীর আগমন উপলক্ষে ঢাকা-খুলনা মহা সড়কে নগরকান্দার তালমার মোড় এলাকায় নেত্রীকে স্বাগত জানাতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেয়। ওই সময় আয়মন আকবরের দেহরক্ষী বলে পরিচিত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর ফকিরের নেতৃত্বে একদল লোক আগামী জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নগরকান্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়ার পোস্টার ও তোরণ ভাংচুর করে। জামাল হোসেন মিয়া সাজেদা চৌধুরীর সাবেক এপিএস ছিল। পোষ্টার ও তোরন ভাঙচুরের খবর পেয়ে জামালের সমর্থকরা তালমার মোড় এলাকায় সমবেত হয়। পুলিশ সংঘর্ষ এড়াতে দুই পক্ষের মাঝামাঝি অবস্থান নেয়। জামালের সমর্থকরা তালমার মোড়ের পেট্রল পাম্প এলাকায় এবং সাজেদার সমর্ধকরা তালমার মোড় হয়ে নগরকান্দায় ঢোকার সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে সাজেদা চৌধুরীর গাড়ি বহর তালমার মোড় অতিক্রম করে। ওই সময় পেট্রল পাম্পের সামনে অবস্থানরত জামালের সর্থকরা বহরের গাড়িগুলির দিকে ইট ছুড়ে মারতে শুরু করে। ইটের আঘাতে নগরকান্দা সার্কেল এএসপি মহিউদ্দিনের মাইক্রোবাসের কাচ ভেঙ্গে যায়। এছাড়া সাজেদা চৌধুরী ও তাঁর ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরীর গাড়িতে ইট লাগলেও বড় আকারের কোন ক্ষতি হয়নি। হামলাকারীদের ইটের আঘাতে অন্য একটি গাড়িতে থাকা নগরকান্দার ওসি নাসিম আহত হয়। হামলার পর সাজেদা চৌধুরী সরাসরি গাড়িবহর নিয়ে নিজ বাড়ি রসুলপুরে চলে যান। ওসি নাসিমকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হরা হয়েছে। ওসি এ এফ এম নাসিম বলেন, ইটের আঘাতে বহরের একটি গাড়ির কাচ ভেঙ্গে গেছে এবং তিনি নিজে আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এ সময় পুলিশ কয়েকটি ফাকা গুলি ছোড়ে। ফলে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। হামলাকারী সন্দেহে সেখান থেকে ৩জনকে আটক করা হয়েছে। হামলার ব্যাপারে নগরকান্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া বলেন, আমার যে সমস্ত পোস্টার-তোরণ ভাঙচুর করা হয়েছে সেখানে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিল। এ কারণেই স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর প্রতিরোধ করতে এগিয়ে গেলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহেদুজ্জামান মিয়া বলেন, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর গাড়িবহর তালমার মোড় অতিক্রম করার সময় জামাল হোসেনের সমর্থকেরা হামলা চালায়। তবে তিনি অক্ষত আছেন। সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী বর্তমানে সালথার রসুলপুরে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া এবং ফরিদপুরের পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা। হামলার খবর পেয়ে সাজেদা সমর্থক আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা তার রসুলপুরের বাড়িতে জড়ো হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার বাড়ির সামনে এই নেতা কর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতা সাজেদা চৌধুলীর গাড়ি বহরে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিল।
×