ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাতিসংঘে ট্রাম্পের প্রথম ভাষণের কড়া সমালোচনা

প্রকাশিত: ১৮:২৮, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

জাতিসংঘে ট্রাম্পের প্রথম ভাষণের কড়া সমালোচনা

অনলাইন ডেস্ক ॥ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম ভাষণের কড়া সমালোচনা করেছে কয়েকটি সদস্য দেশ। ইরান, ভেনেজুয়েলা, সুইডেন, বলিভিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ ট্রাম্পের ভাষণের সমালোচনা করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ট্রাম্প তার ভাষণে উত্তর কোরিয়ারকে পুরোপুরি ধ্বংস করার হুমকি দিয়েছেন। ইরানকে বেশধারী গণতান্ত্রিক দেশ ও তাদের প্রধান নেতাকে সহিংসতার রপ্তানিকারক বলে অভিহিত করেছেন। ভেনেজুয়েলা সরকারকে ‘সমাজবাদী স্বৈরশাসক’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিকে সবচেয়ে বাজে চুক্তি’ বলে মন্তব্য করেছেন। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ট্রাম্পের এ ভাষণকে ‘ঘৃণামূলক ভাষণ’ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, জাতিসংঘে ট্রাম্পের এই অন্ধ ঘৃণামূলক ভাষণ মধ্যযুগীয়- ২১ শতকের নয়। এ বক্তব্যের জবাব পাওয়ার যোগ্যতা নেই। তার ভুয়া সমবেদনা কোনো ইরানিকে বোকা বানাতে পারবে না। ট্রাম্পের ভাষণকে ভুল বলে অভিহিত করেছেন সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালস্ট্রম। তিনি বলেছেন, ‘ভুল সময়ে, ভুল শ্রোতাদের উদ্দেশে এটি একটি ভুল ভাষণ।’ উত্তর কোরিয়ার হুমকিকে প্রাধান্য দিয়ে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মহান শক্তি ও ধৈর্য আছে কিন্তু তারা যদি আমাদের ও আমাদের মিত্রদের রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে, তাহলে উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করা ছাড়া আর কোনো গতি থাকবে না।’ নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম ভাষণে মঙ্গলবার এ হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এটিই ট্রাম্পের সোজাসাপটা ভাষায় প্রথম হামলার হুমকি। তবে ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি উত্তর কোরিয়া। এর আগে নিষেধাজ্ঞার জবাবে তারা বলেছিল, এর ফলে তাদের পরমাণু কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের কৌতুকি নাম ব্যবহার করে ট্রাম্প বলেন, ‘রকেট ম্যান নিজের জন্য আত্মহত্যার মিশনে আছেন।’ সম্প্রতি এক টুইটে উনকে ‘রকেট ম্যান’ হিসেবে অভিহিত করেন ট্রাম্প। উনের পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের দুই মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া চাপের মুখে রয়েছে। ট্রাম্প জাতিসংঘে তার ভাষণে উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি ইরানকেও আক্রমণ করেন।ইরানের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, জাতিসংঘের সমর্থনে তাদের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি হয়েছে, তা এখন পর্যন্ত যেকোনো সময়ের চেয়ে বাজে ও একপেশে চুক্তি। ইরানের সঙ্গে বিশ্বশক্তির পরমাণু চুক্তিকে ট্রাম্প বাজে বললেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জাতিসংঘে তার ভাষণে বলেছেন, ‘এটি বাতিল করা হবে মহা ভুল।’ ট্রাম্প বলেন, ‘যদি ভালোরা মিলে কতিপয় নষ্টের বিরুদ্ধে লড়াই না করে, তাহলে শয়তানের জয় হবে।’ ট্রাম্পের এই বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি ইরান ও ভেনেজুয়েলাসহ আরো কয়েকটি দেশের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ভেনেজুয়েলার সরকারকে হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এই সরকার দুর্নীতিবাজ সমাজবাদী স্বৈরশাসক। তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’ ট্রাম্পের এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ আরিয়াজা। তিনি বলেছেন, ‘ট্রাম্প গোটা বিশ্বের প্রেসিডেন্ট নন... তিনি নিজের সরকারই ঠিকঠাক চালাতে পারেন না।’ ভেনেজুয়েলার সমর্থনে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস বলেছেন, ট্রাম্পের মতো একজন মাল্টি-মিলিয়নার সমাজতন্ত্রকে আক্রমণ করবে, এতে আমি বিস্মিত নই। আমাদের লড়াই সব সময় আদর্শিক ও বস্তুনিষ্ঠ।’
×