ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার উদ্যোগ কূটনীতিকদের

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার উদ্যোগ কূটনীতিকদের

অনলাইন রিপোর্টার ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নিজ নিজ দেশের সঙ্গে আলাপ করবেন বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। বুধবার বেলা ১২টায় কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন শেষে তারা এ কথা কথা জানান। এ সময় কূটনীতিকরা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসা করেন। এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, কূটনীতিকরা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। এতে মিয়ানমারের ওপর চাপ আরো জোরদার হবে। বুধবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কূটনীতিকরা কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হন। কক্সবাজারে পৌঁছার পর বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরে একটি বিশেষ বাসে কূটনীতিকরা কুতুপালংয়ের উদ্দেশে রওনা হন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক কূটনীতিকদের সাথে রয়েছেন। কূটনীতিকরা সারাদিন আশ্রয়শিবির পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় তাদের ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জাতিগত নিধনযজ্ঞের বিষয়টি আড়াল করে ভুল তথ্য দিয়ে রাখাইনে নিজেদের সেনা অভিযানের পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করছে। ইয়াংগুনে সম্প্রতি তিন দফা কূটনৈতিক ব্রিফিং হয়েছে। বিদেশি সাংবাদিকদের কড়া নজরদারির মধ্যে রাখাইন ঘুরিয়ে আনা হয়েছে। বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নীতি উদার করেও অর্থনৈতিক কূটনীতির মাধ্যমে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে মিয়ানমার। গণহত্যার মুখে সহায় সম্বলহীনভাবে ৩ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার বিষয়টি থেকে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি এভাবেই ফিরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। কী অবস্থায় রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের প্রকৃত অবস্থা বিশ্ব সম্প্রদায়কে সরাসরি জানার সুযোগ দিতেই কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয় কূটনীতিকদের। সূত্র জানায়, এর আগে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বিদেশি সাংবাদিকসহ বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশের ব্যাপারে কিছু অলিখিত বিধি-নিষেধ আরোপ রাখা হয়েছিল মিয়ানমারের অনুরোধেই। মিয়ানমার কথা দিয়েছিল তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু মিয়ানমার কথা রাখেনি। ২৫ আগস্টের পর নতুন করে শরণার্থীর ঢল নেমেছে বাংলাদেশে। তাই এখন আন্তর্জাতিকসহ সব গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে মুক্তভাবে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শনে আসছে বলেও জানিয়েছে ওই সূত্র।
×