ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ড ভণ্ড হংকং ও ম্যাকাও ॥ নিহত ৪, ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৪ আগস্ট ২০১৭

প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ড ভণ্ড হংকং ও ম্যাকাও ॥ নিহত ৪, ব্যাপক ক্ষতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হাতোর আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হংকং ও ম্যাকাও। বুধবার ভোরে ৬০ কিলোমিটার বেগে হংকং ও ম্যাকাওতে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এ ঘটনায় কমপক্ষে চারজন নিহত ও বহু লোক আহত হয়েছে। আরও শতাধিক লোক নিখোঁজ রয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাবেক পর্তুগিজ উপনিবেশ ম্যাকাওতে তিনজন ও সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংয়ে একজন রয়েছে। আরও বহু লোক নিহতের আশঙ্কা করেছে কর্তৃপক্ষ। খবর চ্যানেল নিউজ এশিয়া ও এএফপির। বুধবার সকালে হাতো আঘাত হানার আগেই বাণিজ্য নগরী হংকংয়ে প্রচ- ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়। বাতাসের তোড়ে অনেক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়ে ও গাছপালা উপড়ে যায়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে চার শতাধিক ফ্লাইটের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক কার্যক্রমও অচল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুত সংযোগ ও পানির লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ম্যাকাওয়ের সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় রাস্তায় চলমান অনেক গাড়ি পানির নিচে ডুবে গেছে। জুয়ার শহর হিসেবে খ্যাত এই ম্যাকাওয়ের ক্যাসিনোগুলো জেনারেটরের সাহায্যে চালু রাখা হয়েছে। হংকং নগরীর পশ্চিমের ল্যান্টাও দ্বীপের বাসিন্দা গ্যারেট কুইগলেই বলেন, আমি এমন ঝড় আগে কখনও দেখিনি। গাড়িগুলো ডুবে আছে। পানি জমে রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রচুর গাছ উপড়ে গেছে। এটা স্রেফ তাণ্ডব। টাইফুন হাতো আঘাত হানার আগে বাতাসের বেগ বাড়তে থাকার পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হলে রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে যায়। মানুষ ঘর থেকে বের না হওয়ায় হংকংয়ের প্রাণকেন্দ্রের অসংখ্য বহুতল বাণিজ্যিক ভবন জনশূন্য হয়ে পড়ে। হংকংয়ের ভিক্টোরিয়া হার্বারে প্রবল বেগে পানি আছড়ে পড়তে দেখা গেছে। ম্যাকাওপোস্ট পত্রিকার সম্পাদক হারাল্ড ব্রুনিং বলেন, শহরের অনেক লোকের সুপেয় পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, আমার মনে হয় গত ত্রিশ বছরের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ম্যাকাওয়ের জনপ্রিয় ভ্যানেটিয়ান ও পার্সিয়ান ক্যাসিনোর এক কর্মী বলেন, শহরে বিদ্যুত নেই। তবে আমরা পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে জেনারেটরের সাহায্যে এগুলো চালু রেখেছি। তবে এয়ারকন্ডিশন যন্ত্রগুলো চলছে না। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থল, নৌ ও আকাশ পথ বন্ধ থাকায় অনেক পর্যটক ম্যাকাও ছাড়তে পারছে না। ফলে ক্যাসিনোগুলো চালু রাখতে হচ্ছে। আবহাওয়াবদিরা জানিয়েছেন, গত ২০ বছরের মধ্যে এত শক্তিশারী ঘূর্ণিঝড় দেখেনি হংকংবাসী। খবরে বলা হয়েছে, হংকংয়ে বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে কয়েকদফা ঘূর্ণিঝড় হয়। তবে এত প্রলয়ঙ্কারী ও সরাসরি আঘাত হানার খবর বিরল। ১৯৬২ সালে হংকংয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ওয়ান্দা আঘাত হানে। এতে ১৩০ জন লোক প্রাণ হারায়।
×