ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত ॥ বন্যার্তদের খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীর সংকট

প্রকাশিত: ০০:০৯, ১৮ আগস্ট ২০১৭

নওগাঁয় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত ॥ বন্যার্তদের খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীর সংকট

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁ সদর উপজেলার ইকরতারা নামক স্থানে ছোট যমুনা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভাঙ্গা পানি তুলশীগঙ্গা নদীতে পড়ে মরা তুলশীগঙ্গাকে বেগবান করে তুলেছে। বন্যা কবলীত হয়ে পড়ছে নদীর দু’পাশের বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রানের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখনো শুধু বন্যা পরিদর্শন করে চলেছেন। কোন কোন স্থানে ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রান বিতরন করা হলেও তা অত্যন্ত অপ্রতুল বলে দাবী করেছেন বন্যার্তরা। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট চরমে। বন্যা নিয়ন্ত্রনকক্ষ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁয় প্রধান দু’টি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় আত্রাই নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে এখন তা বিপদসীমার ২০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছোট যমুনা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বর্তমানে ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকা আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন জেলার ৯টি উপজেলার ৬৩ ইউনিয়নের ৪শ’ ৪১টি গ্রাম বন্যা কবিলত হয়েছে। এসব গ্রামে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৮শ’ ৩০ জন মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৬১ হাজার। ৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার বানভাসি মানুষ। এ পর্যন্ত ১০৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার কারনে বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। ফসল বিনষ্ট হয়েছে ৩ হাজার ৯শ’ ৯২ হেক্টর জমির। নওগাঁ সদর, ধামইরহাট, পত্নীতলা, রাণীনগর, মান্দা ও আত্রাই উপজেলার ২০টি স্থানে আত্রাই নদী ও ছোট যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন ও বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে ওইসব অঞ্চল প্লাবিত হয়। জেলার মান্দা উপজেলার বসতবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বানভাসি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উচু স্থানে। সরকারিভাবে বানভাসি মানুষের মাঝে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়নি। খাদ্য সংকটে এসব দুর্গত মানুষের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। সেই সঙ্গে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রকট আকার ধারণ করেছে গবাদি পশুর খাদ্য সংকট। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরন করলেও তা অত্যন্ত অপ্রতুল। জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আমিনুর রহমান জানিয়েছেন, নওগাঁ জেলায় বন্যা উপদ্রুত ৯টি উপজেলায় সরকারী ত্রান হিসেবে ২৪৭ মেট্রিকটন চাল বিতরন করা হয়েছে। নগদ অর্থ বিতরন করা হয়েছে ৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। প্রশাসন তৎপর রয়েছে। বন্যা আক্রান্তদের তাৎক্ষনিক খোঁজখবর রাখছে। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রীর চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
×