নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ দেশে জঙ্গি তৎপরতা সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভা শেষে বেলা ৩ টায় সাংসাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষ অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়। যেভাবে জঙ্গি-সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এটা আমাদের বড় প্রাপ্তি। এজন্য আমরা মনে করি জঙ্গি-সন্ত্রাস আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সাংসদ লিটন হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, অতীতে যে সকল হত্যাকান্ড হয়েছে তা সঠিকভাবে উদঘাটন করে প্রকৃত ক্রিমিনালদের আইনের আওতায় এনেছি। এক্ষেত্রেও আমাদের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। আমরা মনে করি কারা, কেন সাংসদ লিটন হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তার সবকিছু উদঘাটন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবো।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক শক্তিশালী দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও বাদ যাচ্ছে না। তবে জঙ্গি তৎপরতা পুরোপুরি নির্মূল না হলেও তা নিয়ন্ত্রণে আছে। পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্শী এমপির সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্যবৃন্দ ছাড়াও র্যা বের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, বিজিবির মহাপচিালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেনসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।
সভায় রংপুর মহিলা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার পরিদর্শন এবং বিভিন্ন সমস্যা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মুলে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া অনুন্নত অনগ্রসর এলাকার জনগণের মধ্য থেকে পুলিশ বাহিনীর সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষিত কোটা যথাযথভাবে পালনের সুপারিশ করা হয়। কমিটি মাদক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে সচেতনতা সৃষ্টিসহ উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও জুম্মার আগে ইমামগণের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ বিরোধী বক্তব্য প্রদানের জন্য কমিটি সুপারিশ করে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ বিরোধী ডকুমেন্টরী, শর্ট ফিল্ম বিজ্ঞাপন চিত্র ভিডিও ক্লিপ তৈরী করে ইলেক্টনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারসহ সন্ত্রাসবাদ বিরোধি আলোচনা ও সচেতনতা তৈরীর লক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ, মসজিদের ইমাম ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ যাতে উঙ্গিবাদকে উসকে দেয়ার মতো বক্তব্য দিতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করে। দেশের উঠতি প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। সরকারী হাসপাতালগুলোতে মাদকাসক্তদের নিরাময়ের জন্য পৃথক ওয়ার্ড খোলাসহ সীমান্তবর্তী নদীপথে চলাচলকারী বাংলাদেশের নৌকাগুলোকে বিশেষ রংয়ে রাঙ্গানোর সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, পুলিশের আইজিপিসহ মন্ত্রণালয়ের ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিতদ ছিলেন। প্রসঙ্গত ঃ দশম জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৫তম সভা এই প্রথম ঢাকার বাইরে রংপুরে অনুষ্ঠিত হলো।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: