ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব পথ মিলেছে স্টেশন ও টার্মিনালগুলোতে

প্রকাশিত: ০১:৫৫, ৪ জুলাই ২০১৬

সব পথ মিলেছে স্টেশন ও টার্মিনালগুলোতে

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সরকারের নির্বাহী আদেশে টানা ৯ দিনের ঈদের ছুটি গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। এই দীর্ঘ ছুটিতে ইতোমধ্যে ফাঁকা হতে শুরু করেছে ঢাকা। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীদের শেষ কর্মদিবস ছিল বৃহস্পতিবার। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শেষ কর্মদিবস ছিল আজ সোমবার। এখন সব পথই যেন মিলেছে বিভিন্ন টার্মিনাল ও স্টেশনগুলোতে। কেউ বাস টার্মিনালে, কেউ কমলাপুর স্টেশনে কেউবা ছুটছেন লঞ্চ ধরবেন বলে। সবার গন্তব্য নাড়ির টানে বাড়ির পথে। কারো সময় বিলম্ব করার মতো একটু সময়ও নেই। এছাড়াও বৈরি আবহাওয়ার কারণে সেই ছুটে চলা বেড়ে গেছে আরো কয়েক গুণ বেশি। কখন বৃষ্টি নামে আর কখন বৃষ্টি থামে তা বুঝা মুশকিল। তাই সবাই শুধু ছুটছেন। পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতেই এই ছু্টে চলা। ঈদের আগে এবার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ক্রমান্বয় ছুটি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা গ্রামে ঈদ উদযাপনের জন্য ঢাকা ছেড়েছেন। আর আজ যেসব বেসরকারি কর্মকর্তা অফিসের প্রয়োজনে ঢাকা ছিলেন, তাদের অধিকাংশই আজ ঢাকা ছাড়ছেন। ফলে সোমবার দুপুর থেকেই বাস, ট্রেন, লঞ্চে এই ঈদযাত্রা অব্যাহত ছিল। গত কয়েক দিন ধরে বিশেষ করে বৃহস্পতিবার বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছাড়ার কারণে রাজধানীতে মানুষ কমে গেছে। তবে সোমবার সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট লঞ্চঘাট ও কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। অবশ্য ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য মহাখালী ও গুলিস্তানে ভিড় বেশি দেখা গেছে। সোমবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন ও বাস টার্মিনালগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে আগের দিনের চেয়ে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। বাসের টিকেট পাওয়া গেলেও দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীদের কেউ কেউ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পরিবহন মালিকরা বলেছেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নিচ্ছেন তারা। সকাল ৯টায় রংপুরের পথে ছেড়ে যাওয়া রংপুর এক্সপ্রেসের ভেতরে দাঁড়ানোর কোনো জায়গা না থাকায় যাত্রীদের ছাদে উঠতে দেখা যায়। নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের নামিয়ে দিলেও ঠিকই ট্রেন ছাড়ার সময় আবার উঠেন তারা। কমলাপুর স্টেশনে নিরাপত্তার বেশ কড়াকড়ি দেখা যায়। রেলওয়ের নিয়মিত নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও আর্মড পুলিশরাও দায়িত্ব পালন করছেন। টিকেট ছাড়া প্লাটফর্মে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, যাত্রীদের দেহ তল্লাশিও করা হচ্ছে। রাজধানীর সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে থেকে কোনো পরিবহনেরই অগ্রিম টিকেট না দেওয়ায় বাস ধরতে আসা যাত্রীদের টিকেটের জন্য কাউন্টারগুলোতে ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। এখান থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ এবং দক্ষিণাঞ্চলের কিছু গন্তব্যের বাস ছাড়ে। টিকেটের দাম দাম বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। একাধিক যাত্রী জানান, নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে কখনো। কল্যাণপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, রাস্তায় যানজট নেই। ফলে গাড়িগুলো সময়মতো আসছে। যাত্রীদের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এদিকে কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, মহাখালীসহ রাজধানীর অন্যান্য অঞ্চল ঘুরে রাস্তায় গাড়ি আগের তুলনায় অনেক কম দেখা গেছে। এদিন অধিকাংশ সময় এসব এলাকা ফাঁকাই ছিল। পরিবহন মালিকরা বলছেন, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার ঈদের ছুটিতে ঘরেফেরা মানুষের ঢল তুলনামূলক অনেক কম। এর কারণ হিসেবে তারা লম্বা ছুটির কথা বলছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে মানুষের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো। তবে এবার ঈদযাত্রায় এখন পর্যন্ত ঘরফেরা মানুষকে সে ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।
×