ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় জোয়ারের পানিতে ৪০ গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ৪ জুলাই ২০১৬

ভোলায় জোয়ারের পানিতে ৪০ গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ আমাবস্যার জোর প্রভাবে জোয়ারের পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোলার কয়েকটি উপজেলার নিন্মাঅঞ্চল ও লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ি বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় পানি প্রবেশ করে অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে অন্তত ২৫ হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ভোলা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা উপজেলা সদর থেকে সাকুচিয়া ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য নির্মিত পাকা সংযোগ সড়কটি ভেঙে গেছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যঘাত ঘটে প্রধান শহর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে ২ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। বিকল্প নির্মিত কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় হাজারো মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় সুত্র জানিয়েছে, গত ২ দিনে মেঘনার পানির চাপে ভোলা সদরের ইলিশা কালুপুর,রাজাপুর ইউনিয়নের ৫/৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। পানি বন্ধি মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।অপর দিকে স্থানীয় সংবাদ কর্মী রফিক সাদি জানান, তজুমি ভোলা তজুমদ্দিন উপজেলায় গত ৪ মাস আগে হাজি কান্দি ও চৌমোহনী এলাকায় বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সঠিক সময় তা সংস্কার না করায় জোয়ারের পানিতে তজুমদ্দিন সদও,প্রানী সম্পদ অফিস এলাকাসহ অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সকাল বিকাল ২ বেলা ৩/৪ ফুট জোয়েরর পানিতে প্রায় ২২ হাজার পরিবার পানি বন্ধি অবস্থা তাদের দিন কাটে। অপর দিকে মনুপরা উপজেরার উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য একটি সংযোগ সড়ক নির্মান করা হয়েছে। কয়েক বছর পূর্বে এই সড়কটিকে পাকা’ও করে দেওয়া হয়েছে। মেঘনার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ক্রমেই সংযোগ সড়কটির কাছাকাছি চলে আসে। কিন্তু গত কয়েকদিনের পানির চাপের কারনে মেঘনা আরও রাক্ষুসে রুপ নেয়। বর্তমানে ভাঙ্গনের তীব্রতায় পাকা সংযোগ সড়কটি সম্পূর্নরুপে ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে নতুন করে পূর্বপাশে নির্মিত কাঁচা রাস্তাটিও কয়েক দিনের মধ্যে ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে গেলে মেঘনার জোয়ারের পানি প্রবেশ করে সহজেই চর যতিন, দাসের হাট এবং চর মরিয়ম গ্রাম প্লাবিত হবে। ফলে ৩ গ্রামের ২ সহ¯্রাধিক মানুষ পানিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় উপজেলা শহর হাজীর হাট থেকে দক্ষিনে অবস্থিত ২টি ইউনিয়ন উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৩০ সহ¯্রাধিক মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে কোন কাজে ঐসব ইউনিয়নের সাধারন মানুষগুলো সহজে উপজেলা সদরে এসে গুরুত্বপূর্ন কাজ করতে পারছেনা। মানুষ কোন ভাবে এপার ওপার পাড়ি দিলেও যানবাহন আনা নেওয়ার সমস্যায় প্রতিদিন শতশত মানুষকে ভোগান্তিতে রয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বাছেত ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এলাকাবাসীকে নিয়ে বিকল্প আরেকটি পথ তৈরী করছেন। ঈদ উপলক্ষে মানুষের ভোগান্তী যাতে কিছুটা হলেও লাঘব হয় সেই চেষ্টাই করছেন তারা। এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম সাংবাদিকদের বলেন, ভেঙে যাওয়া রাস্তার পিছন দিয়ে বিকল্প আরেকটি রাস্তার কাজ চলছে। বর্ষার কারনে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে বিপদসীমার উপরে জোয়ারের পানি ঢুকে ভোলার চরফ্যাশনের উপকূলের প্রায় ২০ গ্রাম পানি বন্ধি হয়ে চরম দূর্ভোগে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করছে। এসব গ্রামের মানুষ ঈদ উৎসব হতে বঞ্চিত হওয়ার আসংখ্যা করা হচ্ছে। মূল ভূখন্ডের বিচ্ছিন্ন পর্যটন দ্বীপ কুকরী, পাতিলা, ঢালচর, চর মাদ্রাজ, চর নিউটন, মোহাম্মদ পুর, আছলামপুর, কচ্ছপিয়া, চর মানিকা, চর মনোহর চর স্টেকিন, চর লিউলিন, চর যমুনা, সিকদার চর, উত্তর চর কলমী চর হাসিনা, চর সিরাজ, মেঘভাষান সহ ২০ গ্রামে জোয়ারের পানি বিপদসীমায় প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায় , সোমবার ভোরে আকস্মিক ভাবে জোয়ারের তীব্র ঢেউ আর উত্তাল স্রোতের কারনে বেড়ীবাঁধ ছুটে দ্রুত নিন্মাঞ্চলের ২০ গ্রামের বাড়ি ঘর প্লাবিত হয়ে ৩/৪ ফুট পানিতে তালিয়ে গেছে। পানিবন্দি অবস্থায় রমজান ও ঈদ উৎসব মুহুর্তে চরম কষ্টে জীবন যাপন করছে ভূক্তভোগী মানুষ। ভূক্তভোগীরা আরো জানান জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত না করলে ঈদের আনন্দ উৎসব থেকে বঞ্চিত হবে উপকূলের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।
×