ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ যাত্রায় সতর্কতা অকার্যকর

বৃষ্টিতে ট্রেনের ছাদে ঝুঁকিতে যাত্রীরা

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩ জুলাই ২০১৬

বৃষ্টিতে ট্রেনের ছাদে ঝুঁকিতে যাত্রীরা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঈদ যাত্রায় ট্রেন যাত্রীরা মানছে না কোন যাত্রী পরিবহন আইন। বৃষ্টিতে ভিজে ট্রেনের ছাদে চেপে বসে পরিবহন আইন লঙ্ঘন করলেও থামাতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সতর্ক বার্তাও সাঁটানো হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের সতর্ক বার্তা কী বোঝাতে চায়, তা জানে না যাত্রীরা। তবে কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সতর্ক বার্তা স্পীকারের মাধ্যমে জানান দিলে সবচেয়ে ভাল ছিল বলে মন্তব্য করছেন সচেতন যাত্রীদের একটি শ্রেণী। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই মূলত ট্রেনে বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে যাত্রীদের। কিন্তু ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রির নিয়ম অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল থেকে। ১০টি আন্তঃনগর ট্রেনসহ মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা গন্তব্যের উদ্দেশে ছুটে চলেছে। এক্ষেত্রে ট্রেনের ভেতরে জায়গা না হলে সিঁড়িতে বসে যেমন যাচ্ছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে অর্থাৎ দুটি ট্রেনের সংযোগস্থল ও ছাদে চড়ে নারী-পুরুষ যাত্রী গন্তব্যের উদ্দেশে ছুটে যাওয়ার ঝুঁকি নিতেও দ্বিধাবোধ করছে না। ৫ দিনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির যাত্রী শেষ হলে ফাঁকা হয়ে যাবে ট্রেনগুলো। শনিবার সকালে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, যাত্রীদের সতর্কতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পক্ষ থেকে সাঁটানো রয়েছে সতর্ক বার্তা। এ বার্তায় যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে শতভাগ। কিন্তু যাত্রীরা মানছে না শতকরা ৫ ভাগও। নির্দিষ্ট আসন সংখ্যার বাইরে টিকেট বিক্রির প্রবণতা রয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু ব্যবসায়িক এ প্রবণতা খাটাতে গিয়ে মুনাফা অর্জন করছে সরকার, তবে ঝুঁকিতে রয়ে যাচ্ছে যাত্রীরা। শুক্রবারের যাত্রার চেয়ে শনিবারের যাত্রায় যাত্রীর সংখ্যা আরও বেড়েছে প্রত্যেকটি ট্রেনে। তবে আজ রবিবার থেকে দুটি ঈদ স্পেশাল চালু হওয়ার কারণে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণী-পেশার ট্রেন যাত্রীরা যে করেই হোক গন্তব্যে পৌঁছার টার্গেট নিয়েছে নানা ঝুঁকি নিয়ে। যাত্রীদের উদ্দেশে রেলের চট্টগ্রাম বিভাগ জানান দিয়েছে, কাউন্টার ছাড়া কারও কাছ থেকে টিকেট ক্রয় না করার। সর্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে স্টেশনে প্রবেশ ও বাহির সবকিছুই রেকর্ড করা হচ্ছে। অপরিচিত কোন ব্যক্তি থেকে স্টেশনে কিংবা ট্রেনের ভেতরে কোন খাবার, পানীয় এমনকি কোন সুবিধা না নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিন ও ছাদে ঝুঁকি নিয়ে না উঠার জন্য যাত্রীদের প্রতি একান্ত অনুরোধ করা হয়েছে। অকারণে ট্রেনের চেইনপুলিং ও হোসপাইপ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা এড়াতেও সচেতন করা হয়েছে। কোন ধরনের সমস্যা পরিলক্ষিত হলে তা জানানোর জন্য ট্রেন পরিচালক বা গার্ড, স্টুয়ার্ড অথবা এটেনডেন্ট এমনকি ট্রেনে থাকা জিআরপি সদস্যদের অবহিত করতে বলা হয়েছে। টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এমনকি এ ধরনের কালোবাজারিদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে সচেতনতা প্রকাশের জন্য বলা হয়েছে যাত্রীদের। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই যাত্রীদের প্রতিনিধিদের প্ল্যাটফর্ম টিকেট সংগ্রহ করাসহ বিনা টিকেটে ট্রেন ভ্রমণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন যাত্রী যদি বিনা টিকেটে ট্রেন ভ্রমণের চেষ্টা করে তাহলে তার দ্বিগুণ জরিমানা আদায় অথবা আইনের কাছে সোপর্দ করার নির্দেশনা রয়েছে।
×